এলএসডি আসে ইউরোপ থেকে, বিকিকিনি অনলাইনে

0
308

খবর৭১ঃ দেশে এলএসডি (লাইসার্জিক অ্যাসিড ডায়েথিলামাইড) মাদকের চালান আসে ইউরোপ থেকে। অনলাইনে কুরিয়ার ও লাগেজসহ বিভিন্ন মাধ্যমে দেশে এলএসডি আসে। আর বিকিকিনিও হয় অনলাইনে। দেশে অন্তত ১৫টি গ্রুপ ভয়ংকর এ মাদক বিক্রিতে সক্রিয় রয়েছে।

রোববার রাতে পল্টন থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন (ডিএমপি) পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. আ. আহাদ।

রাজধানীর শাহজাহানপুর, রামপুরা, বাড্ডা ও ভাটারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি গ্রুপের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতাররা সবাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের কাছ থেকে ভয়ংকর মাদক ২ হাজার মাইক্রোগ্রাম এলসডি, আইস ও গাঁজা জব্দ করা হয়েছে।

তারা হলেন, সাইফুল ইসলাম সাইফ (২০), এসএম মনওয়ার আকিব (২০), নাজমুস সাকিব (২০), নাজমুল ইসলাম (২৪) ও বিএম সিরাজুস সালেকীন (২৪)।

ডিসি আহাদ বলেন, গ্রেফতাররা জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে, তারা সবাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদ। গত এক বছর ধরে এলএসডি সেবন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত তারা। অনলাইনে ব্যবসার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনলাইন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তারা আসক্ত হয়ে এলএসডি সেবন শুরু করে। মূলত বিদেশ থেকে এলএসডি মাদক সংগ্রহ করে তারা। রাজধানীতে ১৫টি গ্রুপ রয়েছে যারা এলএসডি বিক্রি করে আসছে। গ্রুপগুলো গত এক বছর ধরেই এই এলএসডি বিক্রি ও সেবনের সঙ্গে জড়িত।

১৫টি গ্রুপকে শনাক্ত করা গেছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, তারা সরাসরি ব্যবসা ও সেবনের সঙ্গে জড়িত। অনলাইনের মাধ্যমে এলএসডি মাদক নিয়ে আসতো। তবে তাদের শনাক্তকরণ ও গ্রেফতারে কাজ চলছে।

তারা কোন দেশ থেকে এলএসডি নিয়ে আসতো—এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, মূলত ইউরোপ থেকে এলএসডি নিয়ে আসতো। ১৯৩৮ সালে সুইজারল্যান্ডের একজন বিজ্ঞানী ওষুধ হিসেবে এলএসডি আবিষ্কার করে। পরে এটি অপব্যবহার হয়ে মাদক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

দেশে এলএসডি কীভাবে আসে—জানতে চাইলে তিনি বলেন, কুরিয়ার ও লাগেজসহ বিভিন্ন মাধ্যমে দেশে এলএসডি আসে। গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, ১৪ থেকে ১৫টি গ্রুপ দেশে এলএসডি আনার সঙ্গে জিড়িত।

এর আগে রাজধানী থেকে এলএসডি নামক মাদক উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

তিন শিক্ষার্থী হলেন সাদমান সাকিব ওরফে রুপল (২৫), অসহাব ওয়াদুদ ওরফে তূর্য (২২) ও আদিব আশরাফ (২৩)। তারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় প্রশাসনে (বিবিএ) পড়েন।

এলএসডি বেচাকেনায় জড়িত অভিযোগে গত বুধবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি ও লালমাটিয়া থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। তাদের হেফাজত থেকে ২০০ ব্লট এলএসডি উদ্ধার করা হয়।

প্রসঙ্গত, ১৫ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হাফিজুরকে কার্জন হল এলাকায় তার তিন বন্ধু এলএসডি সেবন করান। এর প্রতিক্রিয়া শুরু হলে তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে যান। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে এক ডাব বিক্রেতার ভ্যানে রাখা দা নিয়ে তিনি নিজের গলায় আঘাত করেন। তিনি পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর আট দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে তার লাশ অজ্ঞাতনামা হিসেবে পড়ে ছিল। পরে তার ভাই লাশ শনাক্ত করেন। এরপর থেকেই এলএসডির বিষয়টি আলোচনায় আসে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here