কাজী শাহ্ আলম
লালমনিরহাট প্রতিনিধি: দেড় মাস বয়সী ছোট্ট বাছুরটি বেঁচে থাকার জন্য মা গাভীর দুধ-ই ভরসা কিন্তু লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার তিনবিঘা করিডোর গেট দিয়ে গাভীটিকে যেতে দিয়ে বাছুরকে আটক করার অভিযোগ উঠেছে বিজিবি’র বর্ডার সিকিউরিটি ব্যুরো (বিএসবি) এক সদস্যের বিরুদ্ধে। দহগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন প্রধান বলেন, গাভী বৈধ আর গাভীর বাছুরটি অবৈধ এটা কিভাবে সম্ভব ?
জানাগেছে,পাটগ্রামের দহগ্রাম ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের কৃষক আব্দুল জব্বার পাটগ্রাম পৌরসভার সিরাজ মিয়ার নিকট একটি গাভী বাছুরসহ বিক্রি করেন। গত বুধবার ভারতীয় সড়ক ব্যবহার করে দহগ্রামের তিনবিঘা করিডোর গেট দিয়ে গাভীটি যেতে দিলেও দেড়মাস বয়সী বাছুরটি অবৈধ বলে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায় বিজিবি’র বর্ডার সিকিউরিটি ব্যুরো (বিএসবি) সদস্য ইব্রাহিম। এ সময় মা গাভীটির সাথে দেড় মাস বয়সী বাছুরটিকে যেতে না দেয়ায় করুণ শব্দ করে আপ্রাণ ছুটাছুটি করতে থাকে বাছুরটি। বিক্রেতা ও ক্রেতা অনুরোধ করে গৃহপালিত গাভীর বাছুরটি ফেরত চায় কিন্তু গোয়েন্দা সদস্য ইব্রাহিম মামলার হুমকি দিয়ে এঁড়ে বাছুরটি বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে যান, এবং বৃহস্পতিবার ১৫ হাজার টাকায় নিলাম বিক্রি দেয়। মুহূর্তেই উপস্থিত লোকজন ক্ষোভে ফেটে পড়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, স্বনামধন্য বর্ডারগার্ড (বিজিবি) বাহিনীর সুনাম ক্ষুন্ন করতে নানা ধরণের সমালোচনার সৃষ্টি করছে বিজিবির গোয়েন্দা সদস্য ইব্রাহিম।
বাছুরটির ক্রেতা সিরাজ মিয়া বলেন, নিলামে অংশ নিয়ে ১৫ হাজার টাকায় কিনেছি। বর্তমানে দুধ কিনে ফিডার দিয়ে বাছুরটিকে খাওয়াতে হচ্ছে। বাছুরটি মানুষের মুখের দিকে চেয়ে হাম্বা হাম্বা শব্দে চোখের পানি ছেড়ে কাঁদছে। অপরদিকে বাছুরটিকে দুধ খেতে না দিতে পারায় গাভীটির স্তন ফুলে গেছে। ব্যাথায় ছটফট করছে। দুধ দোহন করতে দিচ্ছেনা বলে জানা গেছে।
দহগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন প্রধান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গাভী বৈধ আর গাভীর বাছুরটি অবৈধ এটা কিভাবে সম্ভব ?
এ বিষয়ে বিজিবি’র বর্ডার সিকিউরিটি ব্যুরো (বিএসবি) সদস্য ইব্রাহিম বলেন, যার কাছে বাছুরটি পেয়েছি তার নিকট বৈধ কাগজ না থাকায় আটক করি।
রংপুর ৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ ইসহাক বলেন, বাছুরটিকে তো এ রকম করার কথা নয়। শুনেছি বাছুরটির দাবিদার ছিলনা। নিলামের দিনে এ বিষয়ে আপত্তি তোলা হয়। বিএসবি সদস্য ইব্রাহিম বাছুরটিকে একক ভাবে ধরেছে।
উল্ল্যেখ্য: দহগ্রাম ইউনিয়ন থেকে ইউপি চেয়ারম্যানের পশু বিক্রয়ের সনদ দেওয়ার পর সেই গরুগুলো বিজিবি যাচাই করার মাধ্যমে সপÍাহে শনিবার ও বুধবার ৩০ টি করে মোট ৬০ টি গরু তিনবিঘা করিডোর গেট দিয়ে বাংলাদেশের মূল – ভূখন্ড পাটগ্রামে নিতে পারেন দহগ্রামের বাসিন্দরা।