খবর৭১ঃ সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিম হত্যা মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে। মামলায় আদাবরের মাইন্ডএইড নিরাময় কেন্দ্রের মালিক-কর্মচারীসহ ১৫ জনকে আসামি করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনেও মারধরে মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। এ মামলায় খুব শিগগিরই চার্জশিট দাখিল করা হতে পারে বলে তদন্ত সূত্রে জানা গেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার পরিদর্শক অপারেশন ফারুক হোসেন মোল্লা শনিবার যুগান্তরকে বলেন, আনিসুল হত্যা মামলার তদন্ত কার্যক্রম প্রায় চূড়ান্ত। তবে কয়েকজনের সাক্ষ্য নেওয়া বাকি আছে। তারা ঢাকার বাইরে থাকায় দেরি হচ্ছে। সাক্ষ্যগ্রহণের পর আদালতে চার্জশিট দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে আরও দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। তিনি জানান, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ডিসেম্বরের শেষের দিকে হাতে পেয়েছি। এ প্রতিবেদনেও মারধরে মৃত্যুর তথ্য উঠে এসেছে।
মানসিক সমস্যার চিকিৎসায় আনিসুল করিমকে ৯ নভেম্বর আদাবরের মাইন্ডএইড নিরাময় কেন্দ্রে নেওয়া হয়। সেখানে ভর্তির কিছুক্ষণের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীদের মারধরের শিকার হন তিনি। হাসপাতালের সিসি ক্যামেরা ফুটেজে তাকে মারধরের ঘটনা ধরা পড়ে। ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে তাকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পায় পুলিশ। এ ঘটনায় ১০ নভেম্বর মাইন্ডএইডের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ১৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়। ১২ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, নিরাময় কেন্দ্রটি এক দিকে অবৈধ এবং অন্য দিকে নিয়মকানুন মানা হতো না। অদক্ষ ওয়ার্ড বয়, বাবুর্চি, রিসিপশনিস্ট ও দারোয়ান দিয়ে রোগ নিয়ন্ত্রণ করা হতো। চিকিৎসা দেওয়ার নামে রোগীদের শারীরিক নির্যাতন করা হতো। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, আনিসুলকে বাথরুমে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। অ্যাগ্রেসিভ ম্যানেজমেন্ট রুমে জোর করে নিয়ে তাকে উপুড় করে শুইয়ে দুই হাত পিঠ মোড়া করে বাঁধা হয়। এ সময় ঘাড়, মাথা, পিঠ ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় উপর্যুপরি আঘাত করা হয়। তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
তদন্ত সূত্র জানায়, আনিসুল হত্যা মামলার চার্জশিটে মাইন্ডএইডের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, কো-অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কিচেন শেফ মাসুদ, ফার্মাসিস্ট তানভীর হাসান, ওয়ার্ডবয় জোবায়ের, তানিফ মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম পাল, লিটন আহাম্মদ, সাইফুল ইসলাম পলাশ, মুহাম্মদ নিয়াজ মোর্শেদ, আবদুল্লাহ আল মামুন, সাখাওয়াত হোসেন, সাজ্জাদ আমিন ও ফাতেমা খাতুন ময়না এবং জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের রেজিস্ট্রার ডা. আবদুল্লাহ আল মামুনকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল মামুন, সাজ্জাদ আমিন ও সাখাওয়াত পলাতক। ডা. নিয়াজ মুর্শেদ পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন। অন্যরা কারাগারে।