রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়ায় চীনের উদ্বেগ

0
339
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংঘর্ষে নিহত ৪

খবর৭১ঃ গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চীন।

রবিবার ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে চীনের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি চীনা রাষ্ট্রদূতকে জানান, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হলে তারা এ এলাকার নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠবে।

কিছু রোহিঙ্গা মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ‘সম্প্রতি দু’দল রোহিঙ্গার সংঘর্ষে আটজন মারা গেছে। তাছাড়া কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় এ সমস্ত ঘটনা উত্তরোত্তর বাড়ছে।’

প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় দিনে দিনে রোহিঙ্গা এবং বিদেশি সাহায্যকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর স্থানীয় জনগণের অসন্তুষ্টি ঘনীভূত হচ্ছে বলেও চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিংকে জানান মোমেন।

এছাড়া মিয়ানমার বাংলাদেশ সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ ঘটানোর ফলে বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয়টি পররাষ্ট্রমন্ত্রী তুলে ধরেন। মোমেন উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সাহায্য প্রদান এবং জীবন মানের উন্নয়ন এ সমস্যা সমাধানের জন্য যথেষ্ট নয়। বরং তাদের প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে এসমস্যার স্থায়ী সমাধান দরকার।

চীনের রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন।

পিরোজপুরে চীনা নাগরিক হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘চীনা নাগরিক হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের অওতায় আনা হবে এবং সরকার এবিষয়ে অত্যন্ত তৎপর। এ ঘটনার প্রধান আসামিসহ দুজনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে করোনা মহামারির কারণে আটকে পড়া চীনে অধ্যয়নরত বাংলাদেশের ছাত্র-ছাত্রীদের ভিসা নবায়নের বিষয়ে অনুরোধ জানান। এ বিষয়ে চীন সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে বলে চীনের রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন। লি জিমিং বলেন, ‘ইতিমধ্যে ব্যবসায়ী ও পারিবারিক পুনর্মিলনের ক্ষেত্রে ভিসা দেয়া শুরু হয়েছে।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত ‘আমার দেখা নয়া চীন’ বইটি চীনা ভাষায় অনুবাদ করা হচ্ছে এবং তা খুব শিগগির প্রকাশিত হবে বলেও জানান চীনা রাষ্ট্রদূত।

চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত।

এছাড়া রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র একটি চিঠি হস্তান্তর করেন। চিঠিতে হংকং চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করায় মোমেনকে ধন্যবাদ জানান ওয়াং ই। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক চীন নীতির প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here