করোনাকালেও দেশের প্রবৃদ্ধি এশিয়ার প্রায় সবদেশের ওপরে: তথ্যমন্ত্রী

0
379
তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী-ফাইল ফটো

খবর৭১ঃ তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণেই করোনা মহামারির মধ্যেও দেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকায় আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এশিয়ার প্রায় সব দেশের ওপরে।

বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী করোনাকালে সাংবাদিকদের সাহসী ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং এসময় মৃত্যুবরণকারী সাংবাদিকদের আত্মার শান্তি ও আক্রান্তদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

তথ্যমন্ত্রী এসময় সম্প্রতি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি প্রকাশিত ২০২০ সালে এশিয়ার দেশগুলোর জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, এডিবি’র প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ২০২০ সালে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫.২ শতাংশ, যেখানে ভারতের প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ০.৯, পাকিস্তানের ঋণাত্মক ০.৪, শ্রীলঙ্কার ঋণাত্মক ৫.৫, চীনের ১.৮, থাইল্যান্ডের ঋণাত্মক ৮, ফিলিপাইনের ঋণাত্মক ৭.৩, সিঙ্গাপুরের ঋণাত্মক ৬.২।

ড. হাছান বলেন, করোনায় যখন পৃথিবী স্তব্ধ হয়ে গেল, বাংলাদেশেও সবকিছু ছুটি ঘোষণা করা হলো, তখন অনেকেই দেশ নিয়ে নানা আশঙ্কা-শঙ্কা করেছিলেন। কারণ বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের উন্নয়নশীল খেটে খাওয়া মানুষের দেশ, যে দেশে কোটি কোটি মানুষ প্রাত্যহিক উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল। এখানে ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারে। কিন্তু দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সকল শঙ্কা-আশঙ্কা মিথ্যে প্রমাণ হলো। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্ব, সময়োচিত পদক্ষেপ, মানুষের জন্য আর্থিক সহায়তা, খাদ্য সহায়তা, অর্থনীতিকে বাঁচানোর জন্য অর্থনৈতিক প্রণোদনা ঘোষণা এবং বাস্তবায়নের কারণে দেশে সাড়ে ৬ মাসে অনাহারে একজন মানুষেরও মৃত্যু হয়নি, খাদ্যের জন্য কখনো কোথাও হাহাকার হয়নি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণেই এটি সম্ভবপর হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা মানুষকে এই দুর্যোগ মোকাবিলার ক্ষেত্রে সম্পৃক্ত করেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সমস্ত নেতাকর্মীকে সম্পৃক্ত করেছেন। তার আহ্বানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এই দুর্যোগ মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন, গত সাড়ে ৬ মাস বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা একদিনের জন্যও বসে থাকেননি, প্রতিদিন কাজ করছেন। শুধু মন্ত্রীসভার বৈঠক বা একনেক সভা করছেন তা নয়, তিনি বিভিন্ন জেলা ও বিভাগের সাথে অনলাইনে বৈঠক করছেন, অন্যান্য কাজগুলোও করছেন। এই সময় অনেক দেশে এই সমস্ত কাজকর্ম বন্ধ ছিল। আমাদের দেশে সেটি বন্ধ হয়নি। সেই কারণে আজকে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল থেকেছে, এশিয়ার প্রায় সমস্ত দেশকে পেছনে ফেলেছে, এই করোনাকালেও এডিবির প্রাক্কলন অনুযায়ী আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫.২ শতাংশ। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে ৮ শতাংশ, করোনা না থাকলে সেটি করা সম্ভবপর হতো।’

করোনা পরিস্থিতি নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে অনেক আলোচনা-সমালোচনা আছে। কিন্তু এরপরও যদি পরিসংখ্যানের দিকে তাকাই, তাহলে আমরা দেখতে পাই, করোনা মোকাবিলাতেও বাংলাদেশ অনেক দেশের তুলনায় ভালো অবস্থানে। বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার ১.৪, ভারতে ১.৬, পাকিস্তানে ২.০৯, যুক্তরাজ্যে ১০.৩৬, বেলজিয়ামে ৯.৪৬, ফ্রান্সে ৬.৭১, জার্মানিতে ৩.৪২ ও যুক্তরাষ্ট্রে ৩ শতাংশের মতো। বাংলাদেশে আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার আরো কম হতো যদি আরো ব্যাপকভাবে মানুষ পরীক্ষা করতো। পরীক্ষার হার নিয়েও যে বক্তব্য আছে, সেটি নিয়েও আমি বলতে চাই বাংলাদেশে যে পরিমাণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে সেটি প্রায় জাপানের কাছাকাছি। অর্থাৎ করোনা মোকাবিলা করার ক্ষেত্রেও আমরা অনেক দেশের তুলনায় ভালো অবস্থানে আছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here