পাঁচ নির্দেশনা আইজিপির

0
886
পাঁচ নির্দেশনা আইজিপির

খবর৭১ঃ
বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে চান বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। এ জন্য ঢাকার মতো সারা দেশে বিট পুলিশিং চালু করতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি।

তিনি বলেন, রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়ে নিরলস কাজ করছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উন্নয়নের এ অভিযাত্রায় শামিল হয়ে বাংলাদেশ পুলিশকেও উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ হতে হবে। ক‌রোনাকা‌লে এই অ‌ভিযাত্রায় বাংলা‌দেশ পু‌লিশ অ‌নেক দূর এ‌গি‌য়ে‌ছে ব‌লে উ‌ল্লেখ ক‌রেন তি‌নি।

আইজিপি মঙ্গলবার বিকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকা ও ময়মনসিংহ রেঞ্জ এবং গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি এবং পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন। এ সময় ৫টি নির্দেশনা দেন আইজিপি।

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে আইজিপি বলেন, গণমানুষের দোরগোড়ায় পুলিশিংকে পৌঁছে দিতে হবে। বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে প্রান্ত থেকে কেন্দ্র সর্বত্র হাতে নিতে হবে উন্নয়নমুখী উদ্ভাবনী পুলশিং কার্যক্রম। ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কেন্দ্রিক বিট পুলিশিং কার্যক্রম পরিচালিত হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্যক্তিগতভাবে তার দায়িত্বাধীন এলাকার প্রত্যেক নাগরিকের সুখ-দুঃখের খোঁজ নেবেন। বিপদে ও প্রয়োজনে মানুষের পাশে দাঁড়াবেন। এ বিষয়ে একটি এসওপি প্রণয়ণের কাজ চলমান রয়েছে। শীঘ্রই সুনির্দিষ্ট দিক‌নি‌র্দেশনাসহ একটি এসওপি সব ইউনি‌টে পৌঁছে দেয়া হবে।

তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যরা কোনোভাবেই কোনো ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না। পুলিশকে দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে।

আইজিপি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যারা অবৈধ অর্থ উপার্জন করে বড়লোক হতে চান, বাংলাদেশ পুলিশে তাদের স্থান নয়। তারা পুলিশের চাকরি ছেড়ে বাড়ি গিয়ে ব্যবসা করে বড়লোক হওয়ার চেষ্টা করতে পারেন।

আইজিপি বলেন, দেশের মানুষকে নির্মোহভাবে ভালোবাসতে হবে, মানুষকে কোনো প্রকার নির্যাতন ও নিপীড়ন করা যাবে না। সব উপায়ে সর্বোতোভাবে মানুষের পাশে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। তি‌নি ব‌লেন, দায়িত্বপালনকা‌লে শা‌রীরিক শ‌ক্তি নয়, আইনি সক্ষমতা‌কে কা‌জে লাগা‌তে হ‌বে।

মাদকের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’। কোনো পুলিশ সদস্য মাদকের সঙ্গে অথবা মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, আসুন, আমরা মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে দেশকে এমন একটি অবস্থানে নিয়ে যাই; যাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে একটি মাদকমুক্ত দেশ হিসেবে ঘোষণা দিতে পারেন।

পুলিশ সদস্যদের কল্যাণ প্রসঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে আইজিপি বলেন, পুলিশ সদস্যদের সর্বোচ্চ কল্যাণ নিশ্চিত করতে হবে। তি‌নি ব‌লেন, দা‌য়িত্বরত অবস্থায় আহত, গুরুতর আহত ও নিহ‌তের ক্ষে‌ত্রে কল্যাণ সংক্রান্ত সু‌বিধা‌দি র‌য়ে‌ছে। এর পাশাপা‌শি
চাকরিরত অবস্থায়ই সদস্যদের সর্বোচ্চ কল্যাণ নিশ্চিত করতে হবে।

বেনজীর আহমেদ বলেন, শাসন ও সোহাগের সমন্বয় করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ভালো কাজ করলে স্বীকৃতি ও উৎসাহের পাশাপাশি মন্দ কাজ করলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে কার্পণ্য করা হবে না। পুলিশ সদস্যদের শৃঙ্খলা ভঙ্গের ব্যাপারে কোনো ধরনের শৈথিল্য দেখানো হবে না বলেও হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। বলেন, কোনো পুলিশ সদস্যের ব্যক্তিগত অপরাধের দায়ভার তাকেই বহন করতে হবে।

আইজিপি তার বক্তব্যের শুরুতে করোনা সংক্রমণ রোধে দায়িত্ব পালনকালে জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। যারা অসুস্থ আছেন তিনি তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here