সৈয়দপুরে পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়কে নিয়ে অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

0
793
সৈয়দপুরে পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়কে নিয়ে অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর থেকে :

সৈয়দপুরে পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সভাপতি ও অধ্যক্ষসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়ে মিথ্যা বিভ্রান্তিকর সংবাদ ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি ও সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কলেজ চত্বরে ওই
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সৈয়দপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি ও সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সৈয়দপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজটি ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ প্রায় ৭২ বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি এলাকার নারী শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।

অথচ শহরের স্বাধীনতা বিরোধী ও বিতর্কিত ব্যক্তি ইজহার আহমেদ তাঁর একচ্ছত্র প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে দীর্ঘ প্রায় ৬৪ বছর প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। গত ২০১২ সালে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে শহরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি দখলমুক্ত হলে যথাক্রমে সৈয়দপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. আখতার হোসেন বাদল, সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ মো.শওকত চৌধুরী ও সৈয়দপুর মহিলা ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. আইয়ুব আলী সরকার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে ছিলেন সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন। তিনি দায়িত্ব পালনকালে গত বছর (২০১৯ -সাল) কলেজটি এমপিওভূক্ত হয়। আর তিনি সভাপতি হিসেবে গত দুই বছর থাকা অবস্থায় কলেজটির সার্বিক উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়ন হয়েছে । এ সবের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটক, সীমানা প্রাচীর, নৈশ প্রহরী কক্ষ, সাইকেল গ্যারেজ, কলেজ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের শৌচাগার নির্মাণ, মাঠের মাটি ভরাট ও সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন। এছাড়াও বর্তমানে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে প্রতিষ্ঠানে পাঁচ কক্ষ বিশিষ্ট একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় আগামীতে প্রতিষ্ঠানটিতে একটি শহীদ মিনার, ডিজিটাল হাজিরা সিস্টেম ও একটি অত্যাধুনিক মিলনায়তন নির্মাণে পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে। উল্লিখিত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড বাস্তবায়িত হওয়ার পরও প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে বর্তমানে প্রায় ২০ লাখ টাকা গচ্ছিত রয়েছে বলে জানান উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন।

তিনি লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক পরিবেশ উন্নয়ন এবং খেলার মাঠ সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ম্যানেজিং কমিটির সভায় একটি সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। আর সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ও যথাযথ নিময়নীতি মেনেই কলেজ চত্বরে মধ্যবর্তী স্থানে থাকা একটি পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ পুরাতন অফিস ভবনটি ভেঙ্গে ফেলা হয়। আর এ পুরাতন ভবনের ইট ও অন্যান্য মালামাল বিক্রির কিছু অর্থে প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ উন্নয়ন করে অবশিষ্ট অর্থ কলেজ ফান্ডে জমা রাখা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে কলেজের ওই ভবনটি বাংলাদেশ রেলওয়ের দাবি করে সৈয়দপুর রেলওয়ের এসএসএই তহিদুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও অধ্যক্ষের নামে স্থানীয় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ গত বছরের ২৬ জুলাই শেষ হওয়ার আগে যথাযথ নিয়ম ও নীতিমালা মোতাবেক গভর্নিং বডির নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের মৌখিক আশ্বাসের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি পদে মোখছেদুল মোমিনের নাম পুনরায় প্রস্তাব করে প্রস্তাবিত কমিটি তালিকা দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে দাখিল করা হয়। এ অবস্থায় গত ১৫ ডিসেম্বর স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি জন্য অন্য একজনকে ডিও লেটার দেন। এ ঘটনার পর প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির নবনির্বাচিত সদস্যরা সকলেই একযোগে পদত্যাগ করেন। আর এ নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য কলেজ অধ্যক্ষ তাদের পদত্যাগ পত্র দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে পাঠানো হয়। আর এরপর থেকেই কলেজের পুরাতন জরাজীর্ণ ভবন অপসারণকে কেন্দ্র করে ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন, অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মো. রাজিব উদ্দিনকে জড়িতে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। লিখিত বক্তব্যে উপজেলা চেয়ারম্যান অভিযোগ করে বলেন, প্রতিষ্ঠানের উল্লিখিত বিষয় সম্পর্কে ভালভাবে খোঁজ খবর না নিয়ে ও না জেনে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কোন রকম কথাবার্তা না বলে বানোয়াট, মনগড়া, কাল্পনিক, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশন করেছেন। মূলতঃ প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি, অধ্যক্ষসহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সমাজে মানসম্মান ক্ষুন্ন ও তাদের হেয় প্রতিপন্ন করতে এ ধরনের সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। তিনি প্রকাশিত এসব বানোয়াট সংবাদের তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেন। সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আলহাজ্ব মো. রাজিব উদ্দিন বাবু,রানু বেগম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে অভিভাবক সদস্য খোরশেদ আলম, মো. জামিল উদ্দিন, মো. রবিউল ইসলাম, দুলালী বেগম, আশা মনি, শিক্ষক প্রতিনিধি মো. মকবুল হোসেন, মাজেদুল হক সরকার, আয়শা সিদ্দিকা, রোকেয়া বেগমসহ শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here