চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধিঃ যশোরের চৌগাছায় আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন থেকে ছিটকে পড়লো বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম হাবিবুর রহমান। মনোনয়ন বাছাই কমিটি তাকে বাদ দিয়ে এবার নতুন মুখ উপহার দিয়েছে চৌগাছা আওয়ামীলীগের জন্য। তিনি হলেন সাবেক এমপি মনির গ্রুপের একজন সক্রিয় নেতা মৃধাপাড়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ড.এম মোস্তানিছুর রহমান। তার মনোনায়ন খবর ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামীলীগের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে এসএম হাবিব গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দেয় চরম হতাশা। এ সময় অনেকে বলেন দলের সাংগঠনিক নেতাদের বাইরে কলেজ অধ্যক্ষকে দলীয় মনোনয়ন দেয়ায় আমরা হতাশ। পক্ষান্তরে সাবেক এমপি গ্রুপের নেতাকর্মীরা এই খবরে মিষ্টিমুখ করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
দলীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আগামী উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনায়নের জন্য ৫ জন প্রার্থী ব্যাপক দৌড়ঝাপ শুরু করেন। এসকল নেতারা প্রায় মাস ব্যাপী ঢাকায় পড়ে ছিলেন। তারা হলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম হাবিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী মাসুদ চৌধুরী, যুগ্ন সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান তবিবর রহমান খান, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান দেবাশীষ মিশ্র জয় ও মৃধাপাড়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ড. এম মোস্তানিছুর রহমান। সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের প্রার্থী বাছাই কমিটি কলেজ অধ্যক্ষ ড. এম মোস্তানিছুর রহমানকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। ড. এম মোস্তাানিছুর রহমান সাবেক এমপি মনির গ্রুপের একজন সক্রিয় নেতা। তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন এই খবরে সাবেক এমপি গ্রুপের নেতাকর্মীদের মাঝে বয়ে যাচ্ছে আনন্দের বন্যা। ওই গ্রুপের নেতাকর্মীরা একে অপরের মধ্যে মিষ্টি মুখ করানোরও খবর পাওয়া গেছে। পক্ষান্তরে তাঁর মনোনয়নের খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অপর গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। চলে মনোনয়ন নিয়ে নানা সমালোচনা। তাদের অনেকেই কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মুখেমুখে কিছুটা মেনে নিলেও ভেতরে ভেতরে চলছে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া। বলা চলে তুষের আগুনের মত জ্বলছে। এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এস.এম হাবিবুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে কিভাবে কলেজ অধ্যক্ষকে মনোনায়ন দিয়েছেন এটা আমার কিছুতেই বোধগম্য নয়। বর্তমানে দেশের এই বৃহৎ দলের আমি উপজেলা কমিটির সভাপতি এবং বারবার নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে গত ২৮ জানুয়ারি প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য তৃর্ণমূলের নেতাদের নিয়ে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তৃর্ণমূল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের মতামতের ভিত্তিতে এককভাবে চেয়ারম্যান পদে আমার নাম ঘোষণা করা হয়। বাছাইকৃত প্রার্থী তালিকা কেন্দ্রীয় মনোনয়ন কমিটির নিকট পাঠানো হয়। কিন্তু মনোনায়ন কমিটি কিভাবে সেটি বাদ দিলো তা আমি জানি না। দল যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সেটা নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না।
নৌকার টিকিট পাওয়া নতুন মুখ ড.এম মোস্তানিছুর রহমান বলেন, আমি ছাত্র জীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার সময় আমি সেখানে ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল পদে ছিলাম। কর্মজীবনে এসেও আমি দলের একজন সক্রিয় কর্মী হিসাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। যারা আমর মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে বিরোধীতা করছে তারা শুধু বিরোধিতার খাতিরে বিরোধীতা করছেন। তবে কারোর প্রতি আমার ক্ষোভ নেই। দল আমাকে নৌকার টিকিট দিয়েছেন। আমি সকলকে সঙ্গে নিয়ে চৌগাছা উপজেলাকে নেত্রীর উপহার দিতে যাাই।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী মাসুদ চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ড. এম মোস্তানিছুর রহমান একজন ক্লিন ইমেজের লোক। তার প্রতিটি মানুষের কাছে রয়েছে ব্যাপক গ্রহন যোগ্যতা। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার সুযোগ কারো নেই। দল যাকে মনোনয়ন দিয়েছেন তাঁর সাথেই থাকতে হবে। আমরা কোন ব্যক্তিকে না দলীয় প্রতীক নৌকাকে বিজয়ী করে নিয়ে আসবো, এই হলো আমাদের প্রতিজ্ঞা। উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান দেবাশীষ মিশ্র জয় বলেন, দল যাকে মনোনয়ন দিয়েছেন সেটা সকলকে মেনে নিতে হবে।
খবর৭১/ইঃ