উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: শিশু নাঈমের বয়স মাত্র ১৪ মাস। নাঈমের ঘাড়ে তিন কেজি ওজনের টিউমার নিয়ে দিনযাপন করছে। যতো সময় পার করছে ততোই বড় হচ্ছে এই টিউমারটি। মাথা সোজা করে রাখা তার জন্য খুব কষ্টকর। বিস্তারিত আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের রিপোর্টে, শিশুটিকে দেখলে মনে হয় তার মাথার পেছনে আরেকটি মাথা। কোমলমতী শিশুটি সারাক্ষণ টিউমারের ওজন সহ্য করতে না পেরে ছটফট করছে। নিয়তির ঘোরে হতদরিদ্র পিতার অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। খোঁজ খবর নিয়ে জানাগেছে, সে নড়াইল সদর উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়নের রামেশ্বর গ্রামের কেটে খাওয়া দিনমজুর পরিবারে জন্ম এই নাঈমের। ঘাড়ে ছোট টিউমারটি নিয়েই তার পৃথিবীতে আগমন। বয়স বাড়ার সাথে সাথে টিউমারটি বড় হতে থাকে। অনেক ডাক্তার-কবিরাজ দেখিয়ে কোনো ফল হয়নি। ধীরে ধীরে বড় হয়ে গেছে টিউমারটি। বর্তমানে শিশুটির ঘাড়ের টিউমারের ওজন প্রায় ৩ কেজি হয়েছে। বর্তমান কোমলমতি এই শিশুর পক্ষে এত বড় টিউমার বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। দিনমজুর বাবা-মায়ের ইচ্ছা থাকলেও টাকার অভাবে শিশুটির অপারেশন করাতে পারছেন না। কারণ অপারেশনের জন্য অনেক টাকা দরকার। এতো টাকা যোগাড় করা তাদের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব। শিশুটির বাবা দিনমজুর কামাল, নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, পরের ক্ষেতে কাজ করে পাঁচ সদস্যের সংসার চালান তিনি। যেদিন কাজ করতে পারেন না সেদিন তার ঘরের চুলাও জ্বলে না। বিভিন্ন জায়গা থেকে ধার-কর্জ করে ১৪ মাস ধরে চিকিৎসা করিয়েছেন সন্তানের। কিন্তু এখন আর পারছেন না। তিনি জানান, কিছুদিন আগে নাঈমকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলেন, সেখানকার চিকিৎসক ওকে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে দেখাতে বলেছেন। তখন ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন এই টিউমার অপারেশন করতে লাখ টাকার বেশি খরচ হবে। বর্তমানে এতো টাকা যোগাড় করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই তিনি সন্তানের চিকিৎসার জন্য বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন। নাঈমের মা, নড়াইল জেলা অনলাইন মিডিয়া ক্লাবের সভাপতি উজ্জ্বল রায়কে জানান, তার বড় ছেলে জিহাদ (৭) স্কুলে যায়। আর ছোট ছেলে নাঈম টিউমার নিয়েই জন্ম হয় তার। জন্মের পর থেকে সাধ্যমত চিকিৎসা করিয়েছেন, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। এখন আর ডাক্তার দেখানোর মতো টাকাও নেই তাদের। চলতি সপ্তাহে তারা নাঈমকে নিয়ে ঢাকায় যেতে চান। কিন্তু টাকার অভাবে তাও হয়ে উঠচ্ছে না। এ অবস্থায় হৃদয়বানদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। তিনি আরও জানান, এতো ছোট শিশুর পক্ষে এত বড় টিউমারের ভার সহ্য করা খুব কঠিন। চোখের সামনে যখন তাকে কষ্টে ছটফট করে দেখেন তখন তিনিও চিৎকার করে আল্লহকে ডাকতে থাকেন।
খবর৭১/ইঃ