গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে ২৮ শতাংশ জমির লোভে ২২ মামলা

0
311

নিজস্ব প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে ২৮ শতাংশ জমির লোভে একের পর এক ২২টি মামলা দিয়ে হয়রানী করার অভিযোগ উঠেছে একটি ভুমি দস্যু চক্রের বিরুদ্ধে। হয়রানী মূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে কয়েকটি পরিবারকে আর্থিক ভাবে সর্বশান্ত করছে ওই চক্রটি। মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচতে বর্তমানে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ভূক্তভোরীরা। মুকসুদপুর উপজেলার বাটিকামারী ইউনিয়নের চাওচা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার চাওচা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মিয়া ১৯৭০ সালে একই গ্রামের সন্তোষ কুমার চক্রবর্তীর কাছ থেকে দলিল মুলে ২৮ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে আব্দুর রাজ্জাক মিয়া তার আপন বোন হোসনেয়ারা বেগমের কাছে দান দলিল মূলে ওই জমি হস্তান্তর করে দেন। পূনরায় হোসনেয়ারা বেগম তার ভাইয়ের কাছে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ওই জমি বিক্রি করে দখল বুঝিয়ে দেন। কিন্তু ওই জমির ওপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে একই গ্রামের ভূমিদস্যু শাহ আলম শেখের। তিনি ভূয়া দাতা সাজিয়ে জাল দলিল সৃষ্টি করে মুকসুদপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের মাধ্যমে ওই জমির নাম পত্তন করেন। এক পর্যায় শাহ আলম ওই জমির মালিকানা দাবি করে দখলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় জমির মালিক আব্দুর রাজ্জাক মিয়া ফরিদপুর সদর রেজিষ্ট্রার অফিসে গিয়ে কাগজপত্র তল্লাশী করে শাহ আলমের কাগজপত্র ভূয়া এবং ওই অফিসের ভলিয়মে কোন তথ্য নেই বলে জানতে পারেন। পরে তিনি শাহ আলম শেখের করা জাল দলিলের কাগজপত্র ও প্রমাণাদি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর দাখিল করলে সহকারি কমিশনার (ভুমি) শাহ আলমের জাল দলিলের মিউটেশন বাতিল করেন দেন। শাহ আলম গোপালগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বরাবর পুনরায় মিউটেশনের জন্য আবেদন করেন। তিনিও শাহ আলম শেখের বিপক্ষে রায় দেন।
এ ব্যাপারে আব্দুর রাজ্জাক মিয়া’র মেয়ে মনিকা খানম বাদী হয়ে জাল দলিলের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। এরপর থেকে আব্দুর রাজ্জাক মিয়া ও তার আত্মীয়-স্বজনের বিরুদ্ধে একের পর এক হয়রানীমূলক মামলা দিয়ে হয়রানী করে আসছে শাহ আলম শেখ।
শাহ আলম শেখ তার আপন পাঁচ ভাইকে আয়ুব আলী শেখ, শওকত শেখ, হাবিল শেখ, শহিদ শেখ, হাবিবুর রহমান ও ভাইয়ের স্ত্রী বিলকিস বেগম এবং মামাতো বোন মনোয়ারা বেগমকে বাদী করে বিভিন্ন ধারায় এ পর্যন্ত ২২টি মামলা করেছেন। যার একটি মামলার রায় আসামী পক্ষে দিয়েছে আদালত এবং বাকী মামলা গুলো এখনও আদালতে চলমান রয়েছে। এভাবে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরীহ লোকজনকে হয়রানী করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার মেয়ে মনিকা খানম (২৫) অভিযোগ করে বলেন, ভূমিদস্যু শাহ আলম শেখ আমাদের বৈধ সম্পত্তি জাল দলিল সৃষ্টি করে জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিষয়টি প্রকাশ হয়ে যাওয়ায় এবং তিনি ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার আশংকায় তিনি একের পর এক ২২টি মিথ্যা মামলা দিয়ে আমার পরিবার এবং আত্মীয়-স্বজনদেরকে হয়রানী করছে শাহ আলম শেখ। আমি মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলার হাত থেকে বাঁচতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ ব্যাপারে শাহ আলম শেখের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি। এছাড়াও শাহ আলমের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা ও বিভিন্ন ধরণের অপকর্ম করার অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এ ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরীহ লোকজনকে আর্থিক ও সামাজিক ভাবে হয়রানী করছে ওই শাহ আলম ও সহযোগিরা। মামলার সুষ্ঠ তদন্ত ও মিথ্যা মামলার হাত থেকে বাঁচার জন্য ভূক্তভোগীরা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছেন।
খবর ৭১/ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here