খবর ৭১ঃ দেশের দ্বিতীয় সংসদ নামে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে সোমবার সকাল ৮টা থেকে। একটানা ভোট চলবে দুপুর ২টা পর্যন্ত। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশকারী সকলেরই ভোট গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ডাকসু ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, নির্বাচনের মোট ভোটার ৪৩ হাজার ২৫৬ জন। এর প্রায় অর্ধেকই অনাবাসিক। অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা তাদের সুষ্ঠু ভোট প্রদানের সুযোগ করে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে একজন ভোটারকে কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৩৮টি ভোট দিতে হবে। প্রার্থীদের নাম মনে রাখাও বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে ভোটারদের কাছে।
ডাকসুর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত চূড়ান্ত তালিকায় দেখা যায়, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন ১৩ টি প্যানেলের ৭৩৮ জন প্রার্থী। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২২৯ জন প্রার্থী। বাকি ৫০৯ জন প্রার্থী হল সংসদ নির্বাচনের বিভিন্ন পদে লড়ছেন। একেকটি হলে ১৩টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্যানেলগুলো হলো- বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাম সংগঠনগুলোর জোট, কোটা আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদ, স্বতন্ত্র জোট, জাসদ ছাত্রলীগ, ছাত্রলীগ-বিসিএল, ছাত্র মৈত্রী, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র মুক্তিজোট, জাতীয় ছাত্রসমাজ ও বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছেন।
তালিকা অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সংসদে ভিপি পদে ২১ জন এবং জিএস পদে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
এছাড়া এজিএস পদে ১৩ জন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে ৯ জন, কমনরুম-ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ৯ জন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন, সাহিত্য সম্পাদক পদে ৮ জন, সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ১২ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১১ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১০ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৪ জন এবং ১৩টি সদস্য পদের বিপরীতে ৮৬ জন নির্বাচন করছেন।
নিয়মানুসারে শিক্ষার্থীরা নিজস্ব আইডি কার্ড দেখিয়ে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টার মধ্যে যে কোনো সময়ে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
ভোট শুরু আগেই নির্বাচন উপলক্ষে প্রশাসন তাদের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রাতের মধ্যেই ব্যালট বক্সসহ নির্বাচনী সরঞ্জামাদী পৌঁছে দেয়া হয়েছে ভোট কেন্দ্রে। এর আগে হল গুলোতে বসানো হয়েছিল অতিরিক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা। প্রার্থীরা লিফলেট বিতরণ ও শোভাযাত্রা শনিবার মধ্য রাত থেকে বন্ধ রাখলেও মোবাইল ফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো অব্যাহত ছিল।
১৮ হলে প্রস্তুত করা হয়েছে ৫০৮টি বুথ। হল প্রাধ্যক্ষ ও রিটার্নিং কর্মকর্তারা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তথ্য অনুযায়ী, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে বুথ ৩৫টি, শহীদুল্লাহ হলে ২০টি, ফজলুল হক মুসলিম হলে ৩৫টি, অমর একুশে হলে ২০টি, জগন্নাথ হলে ২৫টি, কবি জসীম উদ্দীন হলে ২০টি, মাস্টারদা সূর্যসেন হলে ৩২টি, হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে ৩০টি, রোকেয়া হলে ৫০টি, কবি সুফিয়া কামাল হলে ৪৫টি, শামসুন্নাহার হলে ৩৫টি, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে ২০টি, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে ১৯টি, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ২১টি, স্যার এ এফ রহমান হলে ১৬টি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ২৪টি, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ২০টি এবং বিজয় একাত্তর হলে ৪০টি বুথ থাকবে।
অন্যদিকে হল সংসদে ১৮টি হলে ১৩টি করে পদের বিপরীতে প্রার্থী রয়েছেন মোট ৫০৯ জন। এর মধ্যে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ২৭ জন, জগন্নাথ হলে ২৮ জন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব বলে ১৭ জন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ২৬ জন, অমর একুশে হলে ২৯ জন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ২৭ জন, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলে ৩৪ জন, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে ৩৩ জন, রোকেয়া হরে ৩০ জন, কবি সুফিয়া কামাল হলে ৩০ জন, শামসুন্নাহার হলে ২৫ জন, কবি জসীম উদ্দীন হলে ২৫ জন, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হলে ২২ জন, ফজলুল হক মুসলিম হলে ৩৬ জন, বিজয় একাত্তর হলে ৩০ জন, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ২৭ জন, স্যার এ এফ রহমান হলে ৩৭ জন এবং সূর্যসেন হলে ২৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।