চৌগাছার বেড়গোবিন্দপুর বাওড় পাড়ের সড়কটির বেহালদশা: জনদূর্ভোগ চরমে

0
545

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি:যশোরের চৌগাছার বেড়গোবিন্দপুর বাওড়ের পূর্ব পাশের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কের চরম বেহালদশা। প্রায় দেড়যুগ ধরে সড়কটি ভেঙ্গে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়লেও একবারের জন্য হলেও তা মেরামত করা হয়নি। সড়কের বেহাশদশার চিত্র তুলে ধরে এর আগেও বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে কিন্তু সংশ্লিষ্টদের নজরে আসেনি। তাই এলাকাবসি আক্ষেপ করে বলেন সড়কটি আর কি পরিমান ভাঙলে তারপর মেরামত করা হবে? স্থানীয়রা জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি মেরামত না, দ্রুত সময়ের মধ্যে পুনঃনির্মানের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সূত্র জানায়, উপজেলা সদরের দক্ষিনে ঐতিহ্যবাহী চৌগাছা বেড়গোবিন্দপুর বাওড়ের অবস্থান। বাওড়টির পূর্ব প্রান্ত দিয়ে চলে গেছে একটি সড়ক। যাকে স্থানীয়রা মুলিখালী-ফতেপুর সড়ক বলে চেনে। চৌগাছা উপজেলা ছাড়াও এই সড়কটি দিয়ে পাশ্ববর্তী যশোরের শার্শা ও ঝিকরগাছা উপজেলার শতশত মানুষ যাতায়াত করেন। বেড়গোবিন্দপুর বাওড় পাড়ের মুলিখালী বটতলা থেকে ধুলিয়ানী ইউনিয়নের ধুলিয়ানী বাজার পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়ক চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বছরের পর বছর সড়কটির উপর থেকে ইট, খোয়া, পিচ উঠে বড়বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে সড়কের বাওড় পাড়ের অংশটির অবস্থা অত্যান্ত নাজুক। বর্তমানে ওই সড়কে গেলে কারও বোঝার উপায় নেই এই সড়কটি কোন এক সময় ইট পাথর পিচ দিয়ে পাকাকরণ করা হয়েছিল। সূত্র জানায়, উপজেলার উত্তরে ধুলিয়ানী ইউনিয়ন। ১১ টি গ্রামের সমন্বয়ে এই ইউনিয়ন গঠিত। এই ইউনিয়নবাসির উপজেলা সদর তথা যশোর জেলা সদরে পৌছানোর একমাত্র সড়ক হচ্ছে মুলিখালী ফতেপুর সড়ক। দেশ বিভাগের পর সড়কটি ছিল সম্পূর্ণ ভাবে কাঁচা । ফলে বর্ষায় সীমাহীন কাদা আর গ্রীস্ম মৌসুমে ধুলা বালিতে ভরা থাকলেও এই সড়কই এলাকাবাসির যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল। অবহেলিত ইউনিয়নবাসির যাতায়াতের সুবিধার জন্য ১৯৯৭ সালের দিকে বাওড় পাড়ের এই সড়কটি নির্মান করার উদ্দ্যোগ নেয়া হয়। সে অনুযায়ী ওই বছরেই সড়কটি পাকাকরণ করা হয়। এলাকার কৃষক শ্রমিক দিনমজুর এক কথায় সকল শ্রেনীর পেশার মানুষের মুখে হাসি ফোটে । কিন্তু অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই সড়কটির মাঝে মাঝে আকস্মিক ভাবে পিচ উঠতে শুরু করে। তারপর দেখতে দেখতে প্রায় দেড় যুগ পার হয়েছে। এই দীর্ঘ সময়ে পুরো রাস্তাটি এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
ধুলিয়ানী ইউনিয়ন একটি কৃষি নির্ভর এলাকা হিসাবে ব্যাপক পরিচিত। বিশেষ করে ধান ও পানের জন্য এই এলাকা বিখ্যাত। গতকাল সরেজমিন এলাকায় গেলে মাঠের পর মাঠ বিভিন্ন ধরনের সবজি, পাট আর চোখ ধাধানো পানের বরজ দেখা যায়। ইউনিয়নের ফতেপুর, রামভাদ্রপুর, আজমতপুর, ধুলিয়ানী গ্রামের বিস্তৃর্ণ মাঠে বিঘার পর বিঘা পানের বরজ। এ ছাড়া সবুজ পাট ক্ষেত যেন এলাকার সৌন্দর্যকে আরও কয়েকগুন বৃদ্ধি করে দিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১৮/২০ বছর ধরে আমাদের এক মাত্র গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির বেহালদশা কিন্তু দেখার যেন কেউ নেই। এরপূর্বে অনেক মাপযোগও করা হয়েছে কিন্তু কাজের নামে কিছুই হয়নি। নির্বাচন এলেই নেতারা আসেন আর আশ্বাস দেন ভোট দেন এবার রাস্তা হবেই হবে। কিন্তু কাজের কজা কিছুই হয়নি। ধুলিয়ানী গ্রামের ভ্যানচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ভ্যান চালিয়ে সংসার চালায়, আমরা জানি কষ্ট কি? বছরের পর বছর এই সড়কটি ভেঙ্গে পড়ে আছে, এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা কত কষ্ট আমরা বুঝি কিন্তু দেখার কেউ নেই। ফতেপুর গ্রামের ভ্যান চালক শওকত আলী বলেন, কত মানুষ আশ্বাস দিয়েছে সড়কটি মেরামত করা হবে কিন্তু বাস্তবে কিছই তো দেখিনা। আজমতপুর গ্রামের গহর আলী বলেন, সড়কটি যে অবস্থা তাতে খালি পায়ে হেটে চলাও দুরুহ ব্যাপার। তারপরও আমরা জীবনকে ঝুকিতে রেখে মালামাল নিয়ে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করছি। স্কুল ছাত্র সাগর হোসেন বলেন, আমরা এই সড়ক দিয়ে স্কুলে যেতে পারিনা। ভ্যানে কিংবা ইজিবাইকে উঠলে মনে হয় এই যেন উল্টে গেল। সড়কটি নতুন করে তৈরী করার অনুরোধ করেন ওই ছাত্র। সূত্র জানায়, ধুলিয়ানী, রামভাদ্রপুর, বেলেদাড়ি, ধুলিয়ানী, কাবিলপুরসহ পাশ্ববর্তী ঝিকরগাছা ও শার্শার মানুষ নিয়মিত সড়কটি ব্যবহার করেন। কিন্তু ভাঙ্গা চোরার কারনে এই সড়কটি তাদের কাছে এখন অভিশাপে পরিনত হয়েছে। বিশেষ করে কৃষক ও দিনমজুরদের কষ্টের কোন শেষ নেই। কৃষকের উৎপাদিত পন্য বাজারযাত করনে এই সড়কটি অনন্য ভুমিকা পালন করে। তাই কৃষকের দিক বিবেচনা করে সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি করেছেন এলাকাবাসি। সংশ্লিষ্ঠ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সড়কটি নির্মানের জন্য আমি এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান এমনকি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দারস্থ্য হয়েছি। সকলেই আশ্বাস দিয়েছে, এখন দেখা যাক কবে নাগাত সড়কটি মেরামত করা হয়।

চৌগাছার হাকিমপুর ইউনিয়নে প্রায়
দেড় কোটি টাকার বাজেট ঘোষনা

চৌগাছা (যশোর) সংবাদদাতা ॥ যশোরের চৌগাছার হাকিমপুর ইউনিয়নে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের উন্মুক্ত বাজেট ঘোষনা করা হয়েছে। প্রায় দেড় কোটি টাকার বাজেট ঘোষনা করেন সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল হাসান। বুধবার দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ চত্ত্বরে এই বাজেট ঘোষনা করা হয়। বাজেট ঘোষনা পূর্ব এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল হাসনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন ইউপি সচিব রুবেল হোসেন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পারভীনা খাতুন, ইউপি সদস্য আক্তারুজ্জামান মিলন, দেলোয়ার হোসেন, রবিউল ইসলাম প্রমুখ। এ সময় ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম, সোহরাব হোসেনসহ সংশ্লিষ্ঠ ইউনিয়নের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা শেষে চেয়ারম্যান মাসুদুল হাসান আগামী অর্থ বছরের জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন। বাজেটে সার্বিক আয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৫৫ লাখ ৫৪ হাজার ৭শ ৪২ টাকা। আর উন্নয়ন ব্যায় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার ২শ টাকা। উর্দ্বৃত্ত আছে ১৪ হাজার ৫শ ৪২ টাকা। এ সময় তিনি বাজেট বাস্তবায়নের ইউনিয়নবাসির সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু
০১৭২৮-৪০১১১০

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here