নাভারন হাইওয়ে পুলিশের মাসিক ঘুষ প্রথা লঙ্ঘিত হওয়ায় ক্ষেপেছেন ইজিবাইক চালকরা

0
154

শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল : নাভারন হাইওয়ে পুলিশের মাসিক ঘুষ প্রথা লঙ্ঘিত হওয়ায় ক্ষেপেগেলেন নসিমন করিমন ইজিবাইক ও ট্রাক্টর চালকরা। মাসিক চুক্তিতে ইজিবাইক প্রতি ৯০০ টাকা, জেএসএ ১০০০ টাকা, নসিমন করিমন প্রতি ৭০০ টাকা, মাটি বহনের ট্রাক ও ট্রাক্টর প্রতি ১০০০ টাকা করে হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মামুনের ঘুষ চুক্তির সিলিপ থাকলেও মঙ্গলবার দুপরে ১০টি ইজিবাইক আটক করায় ফুঁসে উঠেছেন ইজিবাইক চালকরা। বলেছেন, হাইওয়ে পুলিশের সাথে চুক্তিভিত্তিক মাসিক ৯০০ টাকার সিলিপ পরিশোধ থাকার পরের কলাগাছি এলাকা থেকে তাদের ইজিবাইকগুলো আটক করা হয়েছে। যা পুলিশের ঘুষ চুক্তিমালা লঙ্ঘিত হয়েছে। পুলিশ মাসিক চুক্তিতে ঘুষ খাওয়ার পরেও যদি চোখ পাল্টি দিয়ে তাদের ইজিবাইকের উপর ৫০০০ থেকে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত মামলা দেয় তাহলে তাদের উপায় কি হবে।
কথা হয় বেনাপোলের ইজিবাইক চালক আতাউর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, প্রতিমাস শেষ হওয়ার পূর্বেই তিনি এশিয়ান হাইওয়ের মহাসড়কে তার ইজিবাইক চলাচলের জন্য নাভারন হাইওয়ে পুলিশের কাছ থেকে ৯০০ টাকার সিলিপ ক্রয় করে থাকেন। প্রতিদিনের মতো এদিনও মহাসড়কে বুকফুলিয়ে চলাচলের সময় তার ইজিবাইকটি আটক করেন নাভারন হাইওয়ে পুলিশ। এসময় তিনি পরিশোধ সিলিপ দেখালেও তার বাইকটিতে ৫০০০ টাকার মামলা দেয়া হয়। যা তার মতো গরীব মানুষের পক্ষে অমানবিক নির্যাতনের সামিল বলে তিনি মন্তব্য করেন। বলেন, আমাদের অনেকে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ইজিবাইক ক্রয় করে ভাড়া খেটে সংসার পরিজনের খাদ্যর চাহিদা, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ জোগান, চিকিৎসা ও ঔষধ ক্রয়ের মধ্যদিয়ে পুলিশের সাথে চুক্তিমাফিক তাদের চাহিদামত ৯০০ টাকার সিলিপ ক্রয় করি। এরপরেও আমাদের বাইকগুলি আটকিয়ে মামলা দেওয়ায় মরার উপর খাড়ার ঘার সামিল।

কথা হয় নাভারন হাইওয়ে পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুনের সাথে। তিনি বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশ থাকায় সামনে যতগুলি ইজিবাইক পাওয়াগেছে তাদের সবাইকে মামলা দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, বেনাপোলের ৩০০ ইজিবাইক, শার্শার ১৫০, নাভারনের ২০০ ও বাগআঁচড়ার ২০০ ইজিবাইকের প্রত্যেকে নাভারন হাইওয়ে ফাঁড়ি পুলিশের ৯০০ টাকার সিলিপ ক্রয় করে মহাসড়কে চলাচল করে। এছাড়া নাভারনের সাতক্ষীরা মোড় থেকে ১৫০ ও নাভারন কলেজের সামনে থেকে বেনাপোল ইউনিয়ন পরিষদের সামনে পর্যন্ত ১৫০টি জেএসএ চলাচল করে। তাছাড়া শার্শা উপজেলার বেনাপোলসহ বিভিন্ন প্রান্তের সহ¯্রাধীক মাটি-বালির ট্রাক ও ট্রাক্টর হাইওয়েতে চলাচল করে। সেসাথে নসিমন করিমন চলাচল করে অহরহ। এসকল খাত থেকে নাভারন হাইওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ মামুন মোটা টাকার বাণিজ্য করেন বলে এলাকায় ব্যাপকভাবে সমালোচিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে জাতীয় মহাসড়কে থ্রি-হুইলার অটোরিক্সা ও অটোটেম্পো এবং সব শ্রেণীর অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল করতে নষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও বিশেষ ক্ষমতার জোরে সরকারের আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে এ পুলিশ কর্মকর্তা শার্শা উপজেলাসহ পাশর্^বতী কয়েকটি উপজেলার নিষিদ্ধ যানবাহনকে মহা সড়কে চলার অনুমতি সিলিপ দিয়ে রমরমা বাণিজ্য করে চলেছেন। এমনটি মন্তব্য করে দূরপাল্লার অধিকাংশ পরিবহন চালকরা বলেন, হাইওয়ের প্রত্যেক সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে থ্রি-হুইলার, অটোরিক্সা, অটোটেম্পো, ভাটার মাটির ট্রাক, ট্রাক্টর, নসিমন, করিমনসহ বিভিন্ন শ্রেণীর সরকার নিষিদ্ধ যানবাহন। তারা অবৈধভাবে হাইওয়ে পুলিশকে ম্যানেজ করে এ সব গাড়ি চালাচ্ছেন। যেকারণে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনার মুখে পড়তে হয় বড় বড় পরিবহনের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here