ইভিএম নিয়ে অন্ধকারে ইসি, টাকার জন্য যাচ্ছে শেষ চিঠি

0
110

খবর৭১ঃ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার নিয়ে অন্ধকারে রয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কেননা হাতে থাকা মেশিনগুলো ব্যবহারযোগ্য করতে প্রয়োজন এক হাজার ২৬০ কোটি টাকা।

এ টাকা ছাড়ের জন্য মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে শেষ চিঠি দেবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। সোমবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে কী হবে না হবে জানি না। উই আর ইন ডার্ক (আমরা অন্ধকারে)। গত ১৫ মার্চের কমিশন বৈঠকে আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটা চিঠি দেওয়ার জন্য বলেছি। এক লাখ ১০ হাজার ইভিএম মেরামতের জন্য এক হজার ২৬০ কোটি টাকার মতো লাগবে। সেটা পাওয়া যাবে কি-না, নিশ্চিত করার জন্য আমরা একটা চিঠি দিতে বলেছি। সেটা রেডি হয়েছে। আগামীকাল (মঙ্গলবার) যেতে পারে।

কেন এই চিঠি দিচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকার নিশ্চয়তা আমরা এখনো পাইনি। আমরা অর্থবছর ভিত্তিক- এই অর্থবছরে অর্ধেক, পরবর্তী অর্থবছরে বাকি অর্ধেক দেওয়ার জন্য একটা প্রস্তাব পাঠাচ্ছি। যদি অর্থ বিভাগ টাকা সংস্থান করে তাহলে আমরা ইভিএমের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে উপনীত হব।

অন্যথায় যদি টাকা না পাওয়া যায় তাতেও আমাদের সিদ্ধান্তে আসতে হবে কী করব। ব্যালটে কতটা করব বা ইভিএমে আদৌ করবো কিনা- সবটাই নির্ভর করবে অর্থ প্রাপ্তির ওপর।

কবে নাগাদ এ সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন জানতে চাইলে এই কমিশনার বলেন, আমরা তো আর একেবারে অনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বসে থাকতে পারব না।

যদি টাকা হাতে পাই, তাতে ইভিএম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বিএমটিএফ বলেছে, মেরামতের জন্য তাদের ছয় মাস সময় দিতে হবে। কাজেই আমরা তো মনে করি এখনই হাইটাইম।

তিনি আরও বলেন, টাকা পাওয়া, না পাওয়াটা (চিঠির জবাব) যদি আমরা আগামী কিছুদিনের মধ্যেই পেয়ে যাই; আগামী সপ্তাহে বা তার পরের সপ্তাহে বা তার পরের সপ্তাহে যদি পেয়ে যাই। তাহলে কিন্তু হাতে ছয় মাস সময় পাব। অন্যথায় কিন্তু সময় পাবো না। ছয় মাস সময়ের পরে টাকা দিলে তো আমাদের লাভ হবে না। কারণ এক লাখ ১০ হাজার মেশিন যদি আমরা ব্যবহারযোগ্য করতে পারি তাহলে ৭০, ৮০ যে সংখ্যাটা (আসন) হয়, আমরা যেতে পারব। না হলে তো পারবো না বা করবো কিনা তা পরে সিদ্ধান্ত নেব। আশা করছি, হয়তো টাকার ব্যবস্থা করবে সরকার।

এখনো সরকার তো পুরোপুরি না করেনি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এটুকু ইঙ্গিত পেয়েছিলাম যে, টাকার একটা ব্যবস্থা হবে। আর যদি না দেয়, সেজন্যই সর্বশেষ একটা চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সরকার কোনো বরাদ্দ না দিলে কী করবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কমিশন তখন যে সিদ্ধান্ত নেবে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে। সেটা এখন বলার সুযোগ নাই।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের হাতে থাকা এক লাখ ১০ হাজার মেরামত যোগ্য, আরও ৪০ হাজার মেরামত করলেও ব্যবহারযোগ্য হবে না। কাজেই আমরা এক লাখ ১০ হাজারকেই মেরামত করবো। আর যদি আংশিক পাওয়া যায় বা কী হবে সেটার ওপর নির্ভর করবে তখন।

আরপিওর সর্বশেষ অগ্রগতি
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের বিষয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, একটু আগে আইন মন্ত্রণালয় থেকে সর্বশেষ অবস্থান জানতে পারলাম। এটা এখন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে গেছে। মাননীয় আইনমন্ত্রী দেশের বাইরে আছেন তিনি সম্ভবত ২৮ তারিখে ফিরবেন। এরপর হয়তো মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে উঠবে।

আমি তো মনে করি- পরবর্তী অধিবেশনে এটি জাতীয় সংসদে উঠতে পারে। আমরা যে রকম প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম মোর অর লেস ওই রকমই আছে। আমাদের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করেছে আইন মন্ত্রণালয়।

ভোটের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ হয়ে গেলেও ভোট বাতিলের ক্ষমতা আপনারা পাচ্ছেন বিষয়টি নজরে আনলে তিনি বলেন, দেখা যাক। সংসদে যাওয়ার আগে কেবিনেট অনুমোদন করবে। আমরা যেটা দিয়েছি সেটা অনুমোদ হতেও পারে, নাও হতে পারে। আরও কয়েকটা স্টেপ বাকি আছে। কেননা, আরও হায়েস্ট বডি আছে। কাজেই এই কথাগুলোর বলার মনে হয় এখন উপযোগী পরিবেশ না।

সীমানা পুন:নির্ধারণ
সীমানা পুন:নির্ধারণের আবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, সীমানা পুন:নির্ধারণ করতে ১৮০টা এখন পর্যন্ত আবেদন পাওয়া গেছে। আরও দু’চারটা বিভিন্ন দপ্তরে থাকতে পারে। আবেদনগুলো আসনভিত্তিক বিন্যাস করা হবে, কোন আসনে কতটি আপত্তি পাওয়া গেছে সেগুলো নিয়ে কাজ করবে সচিবালয়। আসনভিত্তিক ভাগ করলে বোঝা যাবে কোন আসনে কতটা আবেদন পড়েছে। এরপর কমিশনের প্লেস করবে। কমিশন তখন শুনানি করবে। কোনটার সীমানা পরিবর্তন করতে হবে, কোনটার লাগবে না তখন নির্ধারণ হবে।

আগামী সপ্তাহে শুনানি হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। আগে আসনভিত্তিক বিন্যাস হোক তারপর বলা যাবে। বর্তমান সীমানাই বহাল রাখার আবেদন যারা করেছেন সেগুলো তো আর আমলে নেওয়ার দরকার নেই। যদি বিপক্ষে কেউ বলে থাকে তখন শুনানির দরকার আছে। একই আসনে পক্ষে-বিপক্ষে এমন থাকতে পারে। কোনটায় আবার নতুন কোনো আবেদন থাকতে পারে। এটা যখন বিন্যাস করা হবে তখনই বোঝা যাবে, কে কী চেয়েছেন। এটা করতে একটু সময় লাগবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here