সুন্দরবনে একসঙ্গে দেখা দিলো ৪ বাঘ

0
138

স্টাফ রিপোটার,বাগেরহাট: সুন্দরবনে গত ১২ মার্চ একসঙ্গে চারটি বাঘকে চরে দেখতে পান কয়েকজন পর্যটক সুন্দরবনে গত ১২ মার্চ একসঙ্গে চারটি বাঘকে চরে দেখতে পান কয়েকজন পর্যটক । প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি সুন্দরবন। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এই ম্যানগ্রোভ বনের সৌন্দর্য দেখতে প্রতিবছর দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক আসেন। বেশিরভাগ পর্যটক বাঘ দেখার আশায় থাকেন। কারণ এই বনে বাঘ দেখতে পাওয়াটা ভাগ্যের ব্যাপার। তবে গত ১২ মার্চ সুন্দরবনে ঘুরতে এসে চারটি বাঘের দেখতে পেয়েছেন কয়েকজন পর্যটক।

এমএল সুবতি নামে পর্যটকবাহী লে ঢাকা থেকে সুন্দরবন ঘুরতে আসেন ৩০ জন। সুন্দরবনের কটকা ও কচিখালীর মাঝামাঝি জায়গায় দেখতে পান, বনের রাজা রয়েল বেঙ্গল টাইগার।

লে থাকা পর্যটক সোহরাব হোসেন বলেন, ‘আমরা গত ১২ মার্চ বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সুন্দরবন থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দিই। কচিখালী ও কটকার মাঝামাঝি স্থানে এলে আমাদের সামনে থাকা ওয়েব নামের অন্য একটি লে র লোক জানান, তারা নদীর চরে বাঘ দেখতে পেয়েছেন, আমরা যেন চরের দিকে খেয়াল রাখি। এরপর চরের দিকে তাকাতেই দেখি, একসঙ্গে চারটি বাঘ চরে গোল গাছের পাশে বসে রোদ পোহাচ্ছে ও খেলা করছে। দেখে যেনো মনে হচ্ছিলো বাঘ মামা সপরিবারে আমাদের মতো ঘুরতে এসেছে।জীবনে আর এমন দৃশ্য দেখার সুযোগ হবে কিনা জানি না।’

লে র মাস্টার মো. শামিম জানান, সুন্দরবনে বহুবার এসেছি কিন্তু বাঘের দেখা কখনও পাইনি। এই প্রথম সুন্দরবনের বাঘ দেখলাম, তাও আবার একসঙ্গে চারটা। সত্যি এটি একটা বিস্ময়কর ব্যাপার। তবে আমার মনে হয়, সুন্দরবনে আগের থেকে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। এর আগেও সুন্দরবনে বন কর্মকর্তারা বাঘ দেখে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি কটকা এলাকায় একসঙ্গে তিনটি বাঘের দেখা পেয়েছিলেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।

ট্যুর অপারেটর সুন্দরবন হলিডেজ’র গাইড শাহ ইলিয়াস বলেন, ১২ মার্চ বিকালে ছিটা কটকা খালের অপর পাড়ে চারটি বাঘ দেখেছেন। সেখানে কোন বাচ্চা ছিল না। সবগুলো আকারে বড় বাঘ।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সাবেক সভাপতি নিয়াজ আব্দুর রহমান বলেন, সুন্দরবনে এবারই প্রথম বাঘের দেখা পেলাম।

সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগের বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের কটকা এলাকায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি একসঙ্গে তিনটি বাঘের দেখা পেয়েছিলেন বন বিভাগের স্মার্ট পেট্রোল টিমের সদস্যরা। এই টিমে ছিলেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা কার্যালয়ের মৎস্য বিশেষজ্ঞ মফিজুর রহমান চৌধুরী।

তিনি ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘আমাদের টহল দল সুন্দরবন পূর্ব বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে একসঙ্গে মা ও দুটি বাচ্চাসহ মোট তিনটি বাঘ দেখতে পান। আমরা প্রায় ২৫ মিনিট ধরে তাদের দেখেছিলাম। এ নিয়ে সুন্দরবনে আমি সরাসরি চার বার বাঘ দেখতে পেলাম।’

উল্লেখ্য, ১৯৮২ সালের জরিপে সুন্দরবনে ৪৫৩টি বাঘের সন্ধান মিললেও ২০১৮ সালের জরিপে সেটা কমে দাঁড়ায় মাত্র ১১৪টিতে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাঘ গণনার ফলাফলে দেখা যায়, ১৯৮২ সালে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ৪৫৩টি। ২০০৪ সালে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি ও বন বিভাগ যৌথ শুমারি অনুযায়ী বাঘের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৪০টি। ২০১৩ সালের জরিপে বাঘের সংখ্যা হয় ১০৬টি। ২০১৮ সালের সর্বশেষ জরিপে ১১৪টি বাঘের অস্তিত্ব পান বিশেষজ্ঞরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here