শুরু হলো ভাষার মাস

0
148

খবর৭১ঃ  আজ থেকে শুরু হচ্ছে বাঙালির ভাষা রক্ষার স্মৃতিবাহী ফেব্রুয়ারি মাস। ৭০ বছর আগে ১৯৫২ সালের এ মাসেই প্রাণের ভাষা বাংলার রাষ্ট্রীয় মর্যাদার দাবিতে গড়ে ওঠা দুর্বার আন্দোলনের পরিণতিতে অর্জিত হয় আজকের বাংলাদেশ নামের এই ভূখণ্ড।

পাকিস্তান সরকারের ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’ ঘোষণায় পূর্ব বাংলার বাংলাভাষী সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর ক্ষোভের জন্ম হয়। পূর্ব বাংলার মানুষ অন্যায্য এ সিদ্ধান্তকে কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারেনি। তাই বাংলা ভাষার সমমর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে। আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তবে তাতে কোনো লাভ হয় নি।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সকল নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পথে নামে ছাত্র ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মীরা। শুরু করে ভাষা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল। এ মিছিলটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে গুলিবর্ষণ করে আন্দোলনকারীদের ওপর। এ সময় রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে নিহত হন সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত, রফিকসহ নাম না জানা আরও অনেকে। এ ঘটনার পরই আন্দোলন ছড়িয়ে পরে সারা দেশে।

মূলত এরপর থেকেই শুরু হয় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন এবং একাত্তরে নয় মাস পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

মাতৃভাষার জন্য বুকের রক্ত দেয়ার এমন নজির পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। আর সেই বিরল আত্মদানের স্বীকৃতি হিসেবে শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা পৃথিবীতেই একুশে ফেব্রুয়ারিকে উদযাপন করা হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। ভাষার জন্য বাংলার দামাল সন্তানদের আত্মত্যাগ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর। এদিন ইউনেসকো ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষণা করে। এর মধ্য দিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে এখন বিশ্বের দেশে দেশে পালন করা হয়।

প্রতি বছরই এ ভাষার মাসে শহীদের স্মরণে আয়োজন করা হয় নানা অনুষ্ঠানের। তবে করোনা মহামারির কারণে গত বছর পূর্ণভাবে পালন করা হয়নি। এবারও তার ব্যাতিক্রম হবে না কারণ সারা দেশে হু হু করে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। এরই মধ্যে একুশের অনুষ্ঠানমালায় আনা হয়েছে অনেক পরিবর্তন। এ মাসের সবচেয়ে বড় কর্মযজ্ঞ মাস ব্যাপী বইমেলা এবার ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে না। ইতোমধ্যে মেলা দুইসপ্তাহ পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। করোনা মহামারির বাস্তবতা বিবেচনা করে এবারও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here