খবর৭১ঃ আপত্তিকর বক্তব্য ও অশ্লীল কথোপকথনের অডিও ফাঁসের ঘটনায় তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রলীগ কর্মীর অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শাহবাগ থানায় এই অভিযোগ করেন ছাত্রলীগ নেতা জুলিয়াস সিজার।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ কমিশনার হারুন অর রশিদ।
তিনি বুধবার বলেন, অভিযোগটি গ্রহণ করে প্রাথমিকভাবে ‘জিডি’ হিসাবে নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
অভিযোগটি পুলিশের সাইবার অপরাধ বিভাগে পাঠান হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিবেদন আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাইবার অপরাধ বিভাগ যদি মামলা করার মত কোনো বিষয় পায় এবং পরামর্শ দেয়, সেক্ষেত্রে শাহবাগ থানায় নিয়মিত মামলা হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
জুলিয়াস সিজার থানায় দেওয়া তার লিখিত অভিযোগে বলেছেন, ‘নাহিদরেইনস পিকচার্স’ নামের একটি ফেসবুক পেইজে সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের একটি ‘বিকৃত ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ তিনি দেখেছেন। এতে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে তিনি দেশের সর্ব প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাচ্ছিল্য করেছে।
ওই ভিডিওতে রোকেয়া হল ও শামসুন নাহার হলের নারী শিক্ষার্থীদের ‘চরিত্র হননের অপচেষ্টা’ করা হয়েছে বলেও জিডিতে অভিযোগ করেছেন জুলিয়াস সিজার।
অভিযোগকারী জুলিয়াস সিজার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের সাবেক জিএস।
তার অভিযোগ, মুরাদ হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘তাচ্ছিল্য’ এবং রোকেয়া ও শামসুন নাহার হলের নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্য করেছেন। তাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আপামর শিক্ষার্থীদের ‘মানহানি’ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিএনপির এক শীর্ষ নেতার মেয়েকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়ার মধ্যেই ডা. মুরাদ হাসানের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ঢাকাই সিনেমার নায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে ফোনালাপের ওই অডিওতে মুরাদ হাসানকে অশ্লীল কথাবার্তা ও নায়িকাকে ধর্ষণের হুমকি দিতে শোনা যায়। এ ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকার।
এর পর সোমবারই মুরাদকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার পদত্যাগপত্র জমা দেন মুরাদ।
বিকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারির পর প্রকাশিত গেজেট বলা হয়েছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে। এ পদত্যাগ অবিলম্বে কার্যকর হবে।