খবর ৭১: মিরপুরে চলমান বাংলাদেশ-পাকিস্তান টেস্টের ভাগ্য ড্র হিসেবে দেখছিলেন অনেকে। তবে বৃষ্টির কারণে রঙ হারাতে বসা এই টেস্ট হঠাৎ করেই প্রাণ ফিরে পেয়েছে। সেটি অবশ্য বাংলাদেশ দলের পক্ষে ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে না। ভুল শট নির্ধারণ আর রান তোলায় তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে একে একে ‘আত্মাহুতি’ দিয়েছেন বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানরা। নিজেদের উইকেটের মূল্য বুঝতে না পারা টাইগাররা প্রথম ইনিংসে ৭৬ রান তুলতেই হারিয়েছে ৭ উইকেট।
চতুর্থ দিনে দ্বিতীয় সেশনের অর্ধেক সময় পার করে স্কোরবোর্ডে ৩০০ রান তুলে নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। হাতে সাড়ে ৪ সেশনের মতো সময়। এখান থেকে স্বাগতিকদের ম্যাচ জয়ের সুযোগ ক্ষীণই বলতে হবে। দলীয় অর্জনের চেয়ে যেখানে আসন্ন নিউজিল্যান্ড সফরের আগে নিজেদের ব্যক্তিগত অর্জন আর ব্যাটিংটা ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগটাই বেশি, সেখানে উল্টো দলকে পরাজয়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন ব্যাটসম্যানরা।
পাকিস্তানের ৩০০ রানের বিপরীতে আলোকস্বল্পতার সুযোগে ৭ উইকেটে ৭৬ রান তুলে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের চেয়ে ২২৪ রান পিছিয়ে থেকে পঞ্চম ও শেষদিনের খেলা শুরু করবেন সাকিব ও তাইজুল। দিন শেষে সাকিব আল হাসান ২৩ আর তাইজুল ইসলাম শূন্য রানে অপরাজিত আছেন।
দলীয় ২২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চা পানের বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। এরপর ১৩ রানে অপরাজিতে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ব্যাট করতে আসেন মুশফিকুর রহিম। পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা হারানো মুশফিকের এদিন যেন টি-টোয়েন্টি গতিতে রান তোলার তাড়া ছিল, কাল হলো সেটিই। দল যখন তিন উইকেট হারিয়ে চাপে, তখন তিনি আউট হলেন স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে। ৮ বলে ৫ রান করে ফেরেন তিনি।
চট্টগ্রাম টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান লিটন দাসও হতাশ করলেন। উইকেট থেকে বের হয়ে এসে সাজিদ খানকে তেড়েফুঁড়ে মারতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দিলেন এই লেগ স্পিনারকে। মুশফিকের মতো লিটনও যেন ভুলে গেলেন এটি টি-টোয়েন্টি নয়, টেস্ট সংস্করণ!
একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলা শান্তও ধৈর্য্য হারিয়ে বসেন। আগে একবার আউট হয়েছিলেন, সে যাত্রায় সাজিদের পা দাগ অতিক্রম করায় নো বলের উসিলায় বাঁচেন তিনি। এবার শেষরক্ষা হলো না, লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে ফেরেন ৩০ রান করে।
এ ম্যাচে বিস্ময়কর ঠেকল সাকিব আল হাসানের ব্যাটিং অর্ডার। যাওয়া-আসার মিছিলে সবাইকে পাওয়া গেলেও সাকিবকে দেখা যাচ্ছিল না। অবশেষে ৭ নম্বর পজিশনে ব্যাট হাতে নামলেন তিনি। তবে তাকে সঙ্গ দিতে পারলেন না মেহেদী হাসান মিরাজ। সাজিদের ষষ্ঠ শিকারে পরিণত হন তিনি। বোল্ড হয়ে ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই। পরে আলোকস্বল্পতার কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই বন্ধ হয় খেলা। যেখানে ৭ উইকেটে ৭৬ রান তুলে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করে বাংলাদেশ।