লক্ষ্মীপুরে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু!

0
193

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুরের প্রাইভেট হাসপাতালে অ্যানেসথেসিওলজিস্ট ছাড়াই এক প্রসূতির অপারেশন করায় মৃত্যু হয়েছে বলে স্বজনদের অভিযোগ। শনিবার বিকেলে শহরের নিউ আধুনিক হাসপাতালে (প্রাইভেট) এ ঘটনা ঘটে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও সিভিল সার্জন আব্দুল গাফফারের অবহেলাই এ প্রসূতির মৃত্যুর কারণ বলে মৃত প্রসূতির স্বজনদের অভিযোগ। প্রসূতির মৃত্যুর পর সন্ধ্যায় তার বিক্ষুব্ধ স্বজনরা হাসপাতালের দরজা জানালা ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মৃত প্রসূতির নাম শিমু আক্তার। তিনি সদর উপজেলার শাকচর গ্রামের সরকারি কর্মচারী লাভলুর স্ত্রী। তবে তার সন্তান সুস্থ আছে বলে জানা যায়।
স্বজনরা জানান, শিমুর প্রসব ব্যাথা উঠলে প্রথমে তাকে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রে নিয়ে যান স্বজনরা। পরে আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে শিশুর অবস্থান উল্টো থাকায় তাকে দালালের মাধ্যমে নিউ আধুনিক প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেল ৩টার দিকে তাকে সিজারের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল গফফার তার অস্ত্রপচার করেন। অস্ত্রপচার শেষে নবজাতককে স্বজনদের কোলে দিয়ে গেলেও প্রসূতির ব্যাপারে কোনো কথা বলেনি। কিছুক্ষণ পর চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে রোগীর অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে শিমু স্ট্রোক করেছে বলে তাদের জানানো হয়। বিকেল ৫টার দিকে তাকে কুমিল্লায় রেফার্ড করা হলে, শিমুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হন তার পরিবার। খবর পেয়ে শিমুর স্বজনরা হাসপাতালে ভাঙচুর করে। পরে শহর ফাঁড়ির পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ঘটনার পর হাসপাতালের একটি কক্ষে তালা লাগিয়ে স্বজন পরিচয়ে রাশেদসহ একাধিক লোক সমঝোতা বৈঠকে বসেন। শিমুর মা জেসমিন জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসকের অবহেলায় তার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।

এই অভিযোগ অস্বীকার করে সিভিল সার্জন বলেন, ‘প্রেসার বেড়ে রোগী স্ট্রোক করে মারা গেছেন। অপারেশন থিয়েটারে ইকবাল ও নাছিম নামে দুইজন অ্যানেসথেসিওলজিস্ট ছিলেন। এ ঘটনায় সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসারসহ ৩ সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।
তবে অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক ইকবাল জানান, ওই অপারেশনের সময় তিনি ছিলেন না। তিনি ওই সময় সদর হাসপাতালের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। অপর তদন্ত কমিটির প্রধান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেন এ সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানান।

জানা গেছে, জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুল গফফার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অন কলে রোগী দেখছেন এবং সিজার করছেন। সরকারি হাসপাতাল থেকে দালালের মাধ্যমে রোগীকে নিয়ে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে রোগী দেখেন। এ বিষয়ে ডাঃ আব্দুল গফফার সব জানেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here