পাইকগাছায় শীতের আগমনে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা

0
155

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি: শীতের আগমনী বার্তায় খুলনার পাইকগাছায় লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এর কারিগররা। সেই সু-প্রাচীনকাল থেকেই মূলত গ্রামা লের মানুষরা রাতে শীত নিবারণে লেপ-তোষক ব্যবহার করে আসছেন। তাই এ মৌসুমের চিত্রও এক ও অভিন্ন। আর তাই শীত জেঁকে বসার আগেই আগাম প্রস্তুতি হিসেবে লেপ তোষক বানাতে ক্রেতারাও ভিড় করছেন উপজেলার বিভিন্ন লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে। অনেকেই আবার দেখা গেছে নিজের পুরনো লেপ-তোষক মেরামত করাতে।
সরেজমিনে পাইকগাছা পৌরসভা, নতুন বাজার,আগড়ঘাটা,বাাঁকা ও কপিলমুনিসহ বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে প্রায় অর্ধশত লেপ-তোষকের দোকান দেখা গেছে। এসকল দোকানে অর্ডারের লেপ-তোষকের পাশাপাশি তৈরী করে রাখা লেপ-তোষক সারি সারি সাজিয়ে রাখা হয়েছে। আর দোকান মালিক-কারিগররা সবাই লেপ-তোষক তৈরি ও সেলাইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তুলা ও আকার ভেদে এ সকল দোকানগুলোতে বিভিন্ন দামে লেপ-তোষক বিক্রি করা হচ্ছে। তবে কয়েকজন ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, অন্যান্য বছর গুলোর ন্যায় এ বছর এখনও শীত জেঁকে বসার আগেই দাম কিছুটা বেড়েছে। তবুও দাম যাই হউক প্রয়োজন তাই কিনতে তো হবেই।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারের ব্যবসায়ী ও কারিগররা জানান, বছরের বেশিরভাগ ( প্রায় ৮ মাস) সময়ই তাদেও অলস সময় কাটাতে হয়। শুধুমাত্র শীতের চার মাস লেপ-তোষক তৈরীর কারিগর ও দোকানিদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর শীতের সময় সময় তারা খুব অসহায় অবস্থায় দিন পার করেছে। এক প্রকার দোকানই খুলতে পারেননি বলাচলে। আর গত বছরের করোনার প্রভাবে অন্যান্য বছর গুলোর তুলনায় এবারে শীতের লেপ-তোষকের চাহিদা কম। তাই ক্রেতাদের উপস্থিতি এখন পর্যন্ত সন্তোষজনক না। তাছাড়া উপজেলার সব এলাকায় এখনো ধান কাটা পুরোপুরি শেষ হয়নি। আর শীত জেঁকে না বসায় লেপ-তোষকের চাহিদা এখনও খুববেশি না। দাম বাড়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলার ভিভিন্ন এলাকার কারিগর ও ব্যবসায়ীরা এ প্রতিবেদককে জানান, এ বছর লেপ-তোষক তৈরীর বিভিন্ন উপকরণের দাম আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। তবুও তারা আগের তুলনায় খুববেশি দাম বাড়ায়নি। একেকটি লেপ এখন ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকায় বিক্রি করছেন তারা। আর তোষক বিক্রি করছেন ৮ শ’ থেকে ৯ শ’ টাকা। এক্ষেত্রে একটি লেপ বা তোষক তৈরিতে একজন কারিগর ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা মজুরি ও অন্যান্য উপকরণের দাম বাদ দিয়ে তাদের লাভ হয় সীমিত। অনেকেই আবার আক্ষেপ করে বলেন, আধুনিক যন্ত্রে উৎপাদিত কম্বল-মেট্রেস এখন সহজলভ্য। তাছাড়া বাহারি রং-বেরঙের ওই সকল কম্বল ও মেট্রেসে’র দামও সাধ্যের মধ্যে তাই আগের তুলনায় বর্তমানে লেপ-তোষকের চাহিদা কমেছে বহুলাংশে।
এসময় লেপ-তোষক তৈরীর কারিগররা জানান, লেপ-তোষক তৈরির উপকরণ কেনার খরচ বাড়লেও বাড়েনি তাদের মজুরি। এমনকি শীত মৌসুমে তিন/চার মাস তারা যা কাজ করেন তাতে বছরের বাকিটা সময় পার করা অসম্ভব। আর তাই বেঁচে থাকার তাগিদে এক প্রকার বাধ্য হয়েই বছরের বাকি মাসগুলো তাদের পেশা বদলাতে হয়। তাই আধুনিকায়নের এ যুগে এ পেশা আঁকড়ে ধরে কারিগররা কতদিন টিকে থাকতে পারবেন তা কেবল সমই বলতে পারে! তবে চলতি শীত মৌসুমে লেপ-তোষকের চাহিদা এখনও তুলনামূলক কম থাকায় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি কারিগরদেরও উপার্জন কমে গেছে। তবে শীত বাড়ার সাথে সাথে চাহিদা বাড়তে পারে এমনটাই আশা করছেন উপজেলার সর্বোস্তরের কারিগর ও ব্যবাসায়ীরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here