রাজারহাটের জংলি টগর ফুল শুভ্রতা ছড়াচ্ছে শহরে

0
828

এ.এস.লিমন,রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউপি’র মহিধর গ্রামের নির্জন পথে জংলি টগর ফুল শুভ্রতা ছড়াচ্ছে। দু’পাশে জঙ্গল ও ঝোপঝাড়ের রাজত্ব। গাছে গাছে চেনা-অচেনা পাখির কলতান। প্রকৃতির এমন নিবিড় মায়াবী পরিবেশে শুভ্রতা ছড়াচ্ছে সাদা সাদা ফুল। নাম তার হচ্ছে জংলি টগর ফুল। পথের পাশেই কিংবা ঝোপঝাড়ে সবুজ পাতার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিয়ে নিজের সৌন্দর্যের খবর জানান দিচ্ছে জংলি টগর বা কড়ি ফুল। যেনো এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। শনিবার (১৭ জুলাই) সকালে রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউপির মহিধর গ্রামে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আমেরিকা থেকে চিরসবুজ এ গাছ জংলি টগর বা কড়ি ফুল বাংলাদেশে এসেছে। বাগান ছাড়াও এই গাছটিকে বনে জঙ্গলে জন্মাতে দেখা যায় বলে অনেকেই একে ‘জংলি টগর ফুল বলে। বাংলাদেশে জংলি টগর, কাঠমল্লিকা, কাঠমালতী, কাঠকরবী, চাঁন্দনী, কড়ি ও অনন্ত সাগর নামে এ ফুলটি বেশ পরিচিত। এছাড়াও কান্ডে দুধের মতো রস থাকায় কোনো কোনো এলাকায় এটি দুধফুল নামে পরিচিত। এর মূল সৌন্দর্য হলো বিশুদ্ধ সাদা বর্ণের ফুল। এ দেশে দু’রকমের টগর পাওয়া যায়। একটি টগরের একক পাপড়ি ও অন্যটির গুচ্ছ পাপড়ি হয়ে থাকে তাই এদের বড় টগর ও ছোট টগর বলা হয়। ওই জংলি টগর ফুল গন্ধহীন ও সুগন্ধিযুক্ত উভয়ই হতে পারে। সাধারণত এ ফুল ৩-৫ সে:মি চওড়া হয় ও ফুলের আগায় চ্যাপ্টা পাপড়ি হয়ে থাকে। ফুল থেকে ফল হয়। এর মধ্যে ৩-৬টি বীজ হয়। বড় টগরের একক ফুল ও বোঁটা মোটা হয়। পাতাও একটু বড় হয়।
স্থানীয়রা জানায়, গ্রামের ঝোপঝাড়ে এই ফুলগাছ অহরহই দেখা যায়। কিন্তু বুনো ফুল হওয়ায় মানুষের এ ফুলের প্রতি তেমন কোনো আগ্রহ ছিলনা। কিছুদিন আগে ছোট শিশুরা জংলি টগরের গাছ থেকে ফুল ছিঁড়ে খেলা করত। সম্প্রতি নার্সারীর মালিকরা টবের মধ্যে এ জংলি টগর ফুলে চারা গাছ রোপন করছে। পরে ওই চারা গাছগুলো তারা ঢাকা চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিটি চারা গাছ ১০০-১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে। নার্সারীর মালিক বাবলু মিয়া বলেন, গত বছর স্বল্প পরিসরে টবের মধ্যে জংলি টগর ফুলের চারা গাছ রোপন করে স্থানীয় রাজারহাট বাজারে বিক্রি করেছি। এতে মোটামুটি লাভ হয়েছে। তবে গ্রামের চেয়ে শহরে ওই জংলি টগর ফুলে চারা গাছের ব্যাপক চাহিদা। তারা এ টগর ফুলের চারা গাছ বাসা-বাড়ি গেটে, ছাঁদে ও রুমের বিভিন্ন জায়গায় রেখে দেয়। এতে বাড়ির মনোমুগ্ধকর পরিবেশ তৈরি হয়। তাই শহরে ওই জংলি টগর ফুলের চারা গাছের চাহিদা ব্যাপক হওয়ায় এ বছর প্রায় ৫ হাজার জংলি টগর ফুলের চারা গাছ রোপন করেছি। আশা করছি এ বছর প্রায় ২ হতে ৩ লাখ টাকা লাভ হবে।
এ বিষয়ে রাজারহাট সদর বাজারের রেলগেট মোড়ে রংপুরের বাসিন্দা জংলি টগর ফুলে চারা গাছ ক্রেতা রোজি আক্তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, এ কড়িফুল বা জংলি টগর ফুলের মূল সৌন্দর্য হলো বিশুদ্ধ সাদা বর্ণের ফুল। এ জংলি টগর ফুল রাতে শুভ্রতা ছড়ায় এবং সাদা ফুলের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য হয়। তাই শহরের বাড়িতে লাগানোর জন্য ১০-১৫টি জংলি টগর ফুলের চারা গাছ কিনেছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here