করোনার টিকা পেতে ভারতের সহযোগিতা চাইবে বাংলাদেশ

0
336
করোনার টিকা পেতে ভারতের সহযোগিতা চাইবে বাংলাদেশ

খবর৭১ঃ কোভিড-১৯ টিকা নিয়ে গবেষণা করছে অনেক দেশ। এরমধ্যে অক্সফোর্ডের টিকার বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত আছে ভারতীয়রা। তারা এই টিকার ট্রায়াল করছে। ঢাকায় সফররত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এই টিকার বিষয়ে বাংলাদেশ আলোচনায় যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। বাংলাদেশ কীভাবে সহজে কার্যকরী টিকা পেতে পারে সে ব্যাপারে বন্ধুরাষ্ট্রটির সহযোগিতা চাওয়া হবে বলেও জানা গেছে।

মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা একদিনের সফরে ঢাকায় আসেন। আগামীকাল দুপুরে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক হবে শ্রিংলার।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে মাসুদ বিন মোমেন আজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভারতীয় ওষুধ কোম্পানি টিকা উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত এবং এ বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করবো। আমরা অফার করব, আমাদের এখানেও যদি ট্রায়ালের সুযোগ থাকে, অক্সফোর্ডেরটার কোম্পানি যেটা কাজ করছে, তাদের সঙ্গে আমরা লন্ডন মারফত যোগাযোগ করেছি।’

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘এখন ইন্ডিয়ান বিভিন্ন ভ্যাকসিন প্রডিউসার তারা এটার এই মুহূর্তে ব্যবসায়িক দিকটা দেখছেন। সুতরাং আমাদের একটা প্রচেষ্টা আছে যে, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় যেগুলো ভ্যাকসিন ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে বা চালু হচ্ছে, সেগুলো পাওয়ার ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা চলছে।’

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়টিরসহ অন্য টিকাগুলো যাতে বাংলাদেশ দ্রুত পেতে পারে, সে বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা অব্যাহত রাখা হচ্ছে বলেও জানান পররাষ্ট্র সচিব।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আমরা আলাপ-আলোচনা করব, আমরা কীভাবে সবার সাথে সহযোগিতা করতে পারি। সুতরাং আমাদের যেটা সবচেয়ে সেইফ মনে হবে বা সবচেয়ে বেশি ইউজফুল মনে হবে আমরা সেদিকেই যাব। সব অপশনই আমাদের জন্য থাকা উচিত।’

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বেলা ১১টায় ঢাকা পৌঁছানোর পরও তার এই সফরের আলোচনার বিষয় নিয়ে স্পষ্ট কোনো বার্তা ছিল না। এরপর ভারতীয় হাইকমিশন এক বার্তায় জানায়, পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা এগিয়ে নিতে শ্রিংলার এই সফর।

শ্রিংলার হঠাৎ ঢাকা সফর নিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আকস্মিক না এটা। যেহেতু আমাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী ভারত, সুতরাং ভারতের সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে, বিভিন্ন পর্যায়ে প্রচুর ইনটারঅ্যাকশান আছে।’

বৈঠকের অন্যান্য এজেন্ডা সম্পর্কে মাসুদ বলেন, ‘যেহেতু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন সবসময় আমাদের এজেন্ডার মধ্যে থাকে, যে বিষয়টি আছে, বাংলাদেশ এবং ভারত কীভাবে আরও সহযোগিতা জোরদার করতে পারে। ইতিমধ্যে তারা কিছু সাহায্য পাঠিয়েছিল প্রথম প্রথম। তো, আমরা এখন জানি, তাদের ওখানে ভ্যাকসিনও ডেভেলপ করছে। সুতরাং উই ক্যান আপডেট ইচ আদার, আমরা কোন পর্যায়ে আছি।’

ভারতীয় সচিবের সফরে আলোচনার অগ্রগতিও এবারের বৈঠকের আলোচনায় থাকছে জানিয়ে মাসুদ জানান, ‘যেহেতু উনি এর আগে মাস-ছয়েক হয়ে গেছে এসেছেন, এর মধ্যে যে সমস্ত অগ্রগতি হচ্ছে। ট্রান্সশিপমেন্টের কিছু কাজ হয়েছে, তারপরে রেলওয়ের বিভিন্ন রকম ত্বরান্বিত হয়েছে সহযোগিতার প্রক্রিয়া। সেগুলো আমরা আলোচনা করব। এবং সামনে আরও কী করা যায়, সেগুলো আলোচনা করব।’

বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তান ও চীনের সম্পর্ক নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরের সঙ্গে এই সফরের সম্পর্ক আছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘নন-ইস্যুগুলো অতিরঞ্জিত আকারে প্রকাশ হচ্ছে। সেটার কারণে পাবলিক পারসেপশনে একটি প্রভাবও পড়ছে। এগুলো আমরা নিশ্চয় দেখবো। কারণ, এটা ঠিক না।’

‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের রাষ্ট্রদূতের দেখা করার বিষয় নিয়ে একটি খবর ছাপা হলো, যার আসলে কোনো ভিত্তি নেই’ যোগ করেন মাসুদ।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এই করোনা পরিস্থিতিতে কারও সঙ্গে দেখা করছেন না। বিদেশিদের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। তারপরও সোমবারে একটি নির্দেশনা পেয়েছি সেপ্টেম্বর থেকে বিষয়টি পুনরায় স্বাভাবিক করার জন্য। যত দেশের রাষ্ট্রদূতদের দেখা করার অনুরোধ জমে রয়েছে তাদের সবার সঙ্গে আস্তে আস্তে প্রধানমন্ত্রী দেখা করবেন।’

এতে সেপ্টেম্বরে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের যাওয়ার সময় চলে আসবে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘বিদায়ী সাক্ষাৎ তারা চেয়েছেন এবং সেটি হয়ে যাবে। এর সঙ্গে অন্য যাদেরটা জমে আছে তারাও দেখা পাবেন।’

মাসুদ বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত দেখা করতে পারছেন না এটি একটি নন-ইস্যু এবং এ বিষয়টি বড় আকারে দেখা দিয়েছে। এগুলো একদম আমলে নেয়া ঠিক হবে না। প্রেস স্বাধীন এবং তারা তাদের মতো লিখছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কিছু নিউজপোর্টাল, বিশেষ করে ভারতের কিছু পোর্টাল বানোয়াট খবর ছাপাচ্ছে। সেখানে কিছু ছবি ছাপা হয়েছে যেগুলো ফটোশপ করা।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here