মাফিয়া সম্রাটের মতো আচরণ, ট্যাক্স নিতেন প্রতিদিন’

0
394
রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন সাংসদ পাপুল

খবর৭১ঃ মানবপাচার, মানি লন্ডারিংসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার লক্ষ্মীপুরের সাংসদ মো. শহিদ ইসলাম ওরফে কাজী পাপুল প্রবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে মাফিয়া সম্রাটদের মতো আচরণ করতেন। এমনকি নিম্নআয়ের শ্রমিকদের কাছ থেকে তিনি ট্যাক্স নিতেন বলেও জানিয়েছেন তদন্তের অন্যতম এক সাক্ষী।

কুয়েতি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এতথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের গণমাধ্যম গালফ নিউজ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাপুলের বিরুদ্ধে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন আব্দুল জব্বার নামে সেখানকার এক প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিক।

আরব টাইমস জানিয়েছে, আব্দুল জব্বার নামে এক প্রবাসী শ্রমিক কুয়েতে পাপুলের বিরুদ্ধে চলমান তদন্তের অন্যতম সাক্ষী। জব্বার বলেছেন, পাপুল মাফিয়া সম্রাটদের মতো নিম্নআয়ের শ্রমিকদের কাছ থেকে ট্যাক্স নিতেন। এমনকি তিনি নিজেও বাধ্য হয়ে পাপুলকে একাধিকবার অর্থ দিয়েছেন। এছাড়া শ্রমিকদের কাছ থেকে প্রতিদিন ৮ দিনার হারে ‘কর’ আদায় করা হতো।

গালফ নিউজ বলেছে, এই শ্রমিককে দিনে ৮ ঘণ্টা করে কাজের বিপরীতে মাসে ১৪০ দিনার বেতনের প্রতিশ্রুতিতে কুয়েতে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু প্রতিদিন তাকে দিয়ে ১৬ ঘণ্টা কাজ আর মাসিক বেতন হবে ১০০ দিনার। এছাড়া নির্দিষ্ট কোনো কাজের পরিবর্তে তাকে দিয়ে একেক সময় একেক ধরনের কাজ করানো হতো।

গত ৭ জুন কুয়েতের ক্রিমিন্যাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট-সিআইডির হাতে লক্ষ্মীপুর-২ আসন থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সাংসদ পাপুলের গ্রেপ্তারের খবর আসে গণমাধ্যমে। প্রথমদিকে সেখবর নিশ্চিত হওয়া না গেলেও দুদিন পরে জানা যায় গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডেও নেওয়া হয় পাপুলকে। বর্তমানে তাকে কুয়েতের কারাগারে রাখা হয়েছে।

এদিকে কুয়েতি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, কুয়েতের অভ্যন্তরীণ বিষয়াবলী সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তাকে চেকের মাধ্যমে ১ দশমিক ১ মিলিয়ন দিনার, আরেক কর্মকর্তাকে নগদ ১ মিলিয়ন ডলার ও তৃতীয় এক কর্মকর্তাকে কয়েক মিলিয়ন দিনার নগদ অর্থ উৎকোচ দেওয়ার কথা পাপুল জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।

পাপুলের সঙ্গে মানবপাচারের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কুয়েতের জনসম্পদ কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তাকে তিন মাসের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া তার সঙ্গে একটি মন্ত্রণালয়ের একজন ডিরেক্টরের সংশ্লিষ্টতার কথাও পাপুল স্বীকার করেছেন বলে তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে কুয়েতি সংবাদপত্র আল রাই জানিয়েছে।

এদিকে অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের স্বার্থে সাংসদ কাজী সহিদ ইসলাম পাপুল, তার স্ত্রী, মেয়ে ও শ্যালিকাকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বুধবার পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) ইমিগ্রেশন বরাবর চিঠি দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়েছে তাদের মধ্যে পাপুল ছাড়া অন্যরা হলেন- পাপুলের স্ত্রী সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও সেলিনার বোন জেসমিন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here