সাধারণ ছুটি কেবল রেড জোনে

0
363
নতুন আরও ৪ জেলায় ‘রেড জোন’ ঘোষণা

খবর৭১ঃ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত রেড জোনই কেবল সাধারণ ছুটির আওতায় থাকবে। শুরুতে রেড এবং ইয়োলো দুটো জোনেই ছুটি থাকার বিষয়ে নির্দেশনা এলে পরে তা পরিবর্তন করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. কামাল হোসেন সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘শুরুতে সাধারণ ছুটির ব্যাপারে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল তার পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন কেবল রেড জোনে সাধারণ ছুটি থাকবে। কারণ সংক্রমণের হার বিবেচনায় রেড জোনভুক্ত অনেক এলাকাকে লকডাউন করা হবে। তাই বাধ্য হয়েই সেখানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করতে হয়েছে।’

এর আগে সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক নির্দেশনায় রেড এবং ইয়োলো দুটো জোনেই সাধারণ ছুটির ঘোষণার আসে।

আদেশে আরও বলা হয়েছে আগের শর্তেই সরকারের দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন ও সরকারি- বেসরকারি অফিস চলবে। তবে করোনা ভাইরাসজনিত রোগ কভিড-১৯ এর বিস্তার রোধকল্পে শর্তসাপেক্ষে সার্বিক কার্যাবলী/চলাচলে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ১৬ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সাপ্তাহিক ছুটি এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবে।

নির্দেশনায় বলা হয়, ‘অনুমোদিত অঞ্চলে সীমিত পরিসরে নির্দিষ্টসংখ্যক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান, রেল ও বিমান চলাচল করতে পারবে; তবে সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক জারি করা নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।’

এছাড়া রাত আটটা থেকে ভোর ছয়টা পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না। নির্দেশনা ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে আইনশৃঙ্খলা, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কাজে নিয়োজিত সংস্থা এবং জরুরি পরিষেবা। ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, স্থল- নদী-সমুদ্রবন্দরে কার্যক্রম। টেলিফোন-ইন্টারনেট ও ডাক সেবা, জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিস এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মচারী, কৃষিপণ্য, শিল্পপণ্য পরিবহনের যানবাহন, কাঁচাবাজার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল ও জরুরি সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা।

করোনার প্রাদুর্ভাব রোধে দেশে ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি, গণপরিবহন-শপিংমল বন্ধসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কোনো কার্যক্রমেই সফলতা আসেনি। প্রতিদিন বাড়তে থোকে মৃত ও আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

দুই মাসের বেশি সময় সারাদেশে লকডাউন জারি রাখার পর ৩১ মে থেকে বেশিরভাগ বিধিনিষেধ তুলে নেয় সরকার। এরপর প্রতিদিন সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এলাকা ধরে ধরে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার অনুযায়ী লাল, সবুজ ও হলুদ জোনে ভাগ করে প্রয়োজন অনুযায়ী বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তার ভিত্তিতে ৭ জুন প্রথম রাজধানীর রাজাবাজার এলাকা পরীক্ষামূলক লকডাউন করা হয়। সংক্রমণ রোধে কিছুটা সফলতা আসায় দুই সিটি করপোরেশনের আরও ৪৫টি এলাকাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটির এক সভায় ‘রেড জোন’ গুলো চিহ্নিত করে। এই সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি এলাকা চিহ্নিতের কাজটি করে। এই এলাকার লোকদের বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপের পাশাপাশি বাইরে থেকেও রেড জোনে লোক প্রবেশ বন্ধ করা হবে।