ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার সফল নারী উদ্যোক্তা বণিতা রাণী সরকার

0
547

সোহেল পারভেজ, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি, খবর ৭১ঃ

নারীরা দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছেন। সমাজের সব ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান পাকাপোক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ নারীই স্বনির্ভরতার জন্য চাকরিতে যাচ্ছেন। আর কিছু নারী এগিয়ে আসছেন ঝুকিপূর্ণ পেশা ব্যবসায়। তারা নানা প্রতিকুলতাকে পেছনে ফেলে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। নিজেদের পাশাপাশি অন্য নারীদেরও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সহযোগিতা করছেন।

এমনি একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হলেন ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার বণিতা রাণী সরকার।

পৌর শহরে কলেজ পাড়া এলাকার বনিতা রাণী সরকার একজন নারী, যিনি আজ সফল উদ্যোক্তা। এই ‘সফল উদ্যোক্তা’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পেছনে রয়েছে তার নিজের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ-প্রত্যয়। পথে পথে নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করতে হয়েছে বনিতা রাণীকে, হাজারো বাধা বিপত্তি আসলেও কখনোই দমে যাননি তিনি।

পরিবারের বিভিন্ন প্রতিকুলতার দারিদ্রতাকে হার মানিয়ে তিনি এখন স্বাবলম্বী।  যেখানে স্বামী সন্তান নিয়ে দু-বেলা দু-মুঠো ভাত খাওয়ার দুঃশ্চিন্তা ছিল তাদের, সেখানে তিনি এই কারখানা চালিয়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন।

তার এই সফলতা শুধু একটি পরিবারের মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়, গ্রামের দরিদ্র প্রায় ৮টি পরিবার যারা তাদের ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার খরচ চালাতে পারতো না তারা এখন এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

নারী উদ্যোক্তা বনিতা বলেন, মাত্র ১৩০ টাকা দিয়ে ২০১৫ সালের শেষের দিকে আমি এই ব্যবসা শুরু করেছিলাম । ছোট বড় সকলের ভালোবাসা ও আশীর্বাদে আমি আস্তে আস্তে বর্তমানে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছি। প্রথম দিক থেকে আমি চানাচুর ও নিমকি নিজেই তৈরি করে দোকানে দোকানে গিয়ে ও পাইকারিভাবে বিক্রি করি। মানুষ আমার উৎপাদীত চানাচুর ও নিমকি খেয়ে প্রশংসা করে। বর্তমানে দোকানগুলোতে চাহিদামতো পণ্য ঠিক মতো দিতে পারিনা টাকার স্বল্পতার কারনে। একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অনেক টাকার প্রয়োজন হয় যা আমার কাছে অপ্রতুল্য। সীমিত টাকা দিয়ে আমি  এই ব্যবসা চালাই। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এভাবেই আমি বর্তমানে সকল কর্মীর খরচ মিটিয়ে প্রতিমাসে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা আয় করছি।

আর আমার আশা গ্রামের বেকার মানুষগুলোকে নিয়ে একসাথে কাজ করতে চাই এবং তারাও যেন ভালোভাবে চলতে পারে তাই আমি সরকারের কাছে সহযোগিতা চাই। আমার বিশ্বাস সহযোগিতা পেলে আমি এই প্রতিষ্ঠানটিকে আরো অনেক দুরে নিয়ে যেতে পারবো।

এদিকে বনিতা রাণীর বিষয়ে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রোকসানা বানু হাবীব বলেন, বনিতা রাণী সরকার এবারে আমাদের ঠাকুরগাঁও জেলায় শ্রেষ্ঠ জয়ীতা নির্বাচিত হয়েছেন। পাঁচ ক্যাটাগরীর মধ্যে এটা অর্থতৈনিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী উনি নারী। সে অনেক কষ্টে জীবনযুদ্ধ করে এ পর্যায়ে এসেছেন। ১ কেজি ময়দা দিয়েই প্রথম তিনি তার ব্যবসা শুরু করেন সেটা আবার বাজারে দোকানে দিয়ে বিক্রি করে সেখান থেকে  ২০০ টাকা পায়। এই ২০০ টাকা থেকেই তার প্রথম যাত্রা শুরু হয়েছিল যা আজ ৮ জন কর্মী তার এই প্রতিষ্ঠানটিতে কাজ করছেন। নিমকি, চানাচুর তৈরি করে বনিতা রাণী সরকার আজকে যে তার এই সাফল্য, এটা দেখে যেন অন্যান্য নারীরা অনুপ্রাণিত হয় এটাই কামনা করছি আমরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here