কোটা ইস্যু: কমিটিকে দ্রুত প্রতিবেদন দেয়ার আহ্বান ১৪ দলের

0
250

খবর৭১ঃ কোটা নিয়ে উদ্ভূত বিদ্যমান পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। এ লক্ষ্যে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটিকে দ্রুত প্রতিবেদন দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে জোটটি।

আর কোটা ইস্যুতে আন্দোলনকারীদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সংক্রান্ত ঘোষণায় আস্থা রেখে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১৪ দলের এক বৈঠক শেষে জোটের মুখপাত্র আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জোটের পক্ষ থেকে এসব সিদ্ধান্ত জানান।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমরা কেবিনেট সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটিকে ১৪ দলের পক্ষ থেকে অনুরোধ করতে চাই-দ্রুত আপনাদের কাজটি শেষ করে, দ্রুততার সঙ্গে প্রতিবেদন দেন। কেউ যেন সুযোগ না নিতে পারে, কেউ যেন ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পারে।

তিনি বলেন, একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে একটি মহল একের পর এক চক্রান্ত করছে। কোনো ইস্যু না পেয়ে কোটা সংস্কার ইস্যু নিয়ে তারা মাঠে নেমেছে। সেই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তারুণ্যকে উৎসাহিত করার জন্য কোটার ব্যাপারটি নিয়ে কথা বলেছিলেন, এটা আপনারা জানেন।

নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেহেতু একটি পর্যায়ে সংসদে বলেছিলেন কোটা রাখবেন না। তারপরও তিনি একটি কমিটি করে দিয়েছেন কেবিনেট সচিবের নেতৃত্বে। সেই কমিটি কাজ করছে। কোটা সিস্টেম আমাদের সংবিধানে আছে।

তিনি বলেন, ১৪ দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি অনগ্রসর মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। কেবিনেট সেক্রেটারির নেতৃত্বে কমিটি কাজ করছে, আপনারা ধৈর্য ধরুন। দীর্ঘদিনের একটা সিস্টেমকে বদল করে আনতে একটু সময় লাগে।

বিএনপি নির্বাচন ভণ্ডুলে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে দাবি করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, নির্বাচন সামনে আসছে। সেই ক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত তারিখে বাংলাদেশে নির্বাচন হবে। আমরা আশা করি, দেশের সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। এমনকি বিএনপি নির্বাচনে আসুক সেটা আমরা চাই। কাউকে নির্বাচন থেকে সরানোর কোনো চিন্তা আমাদের নেই। আমরা চাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচনে জয় আসুক।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এখন তারাই (বিএনপি) চক্রান্ত করছে নির্বাচনকে ভণ্ডুল করার জন্য। সংবিধানেই আছে কীভাবে নির্বাচন হবে। বিশ্বের অন্য সব গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচিত সরকারের অধীনেই নির্বাচন হয়, একইভাবে আমাদের দেশেও শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে। তাই আমরা বলব, কোনো ধরনের চক্রান্ত না করে নির্বাচনে আসুন, জনগণের রায় নিন।

নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি-না, জানতে চাইলে নাসিম বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল কীভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, এটা তাদের বিষয়। এটা নিয়ে আমাদের সঙ্গে কারও কোনো আলোচনা হয়নি। বিএনপি নির্বাচনে আসবে বলে আমরা আশা করছি। বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনার কোনো প্রশ্নই ওঠে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাসদের একাংশের সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া, জাতীয় পার্টি-জেপির মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, কামরুল আহসান প্রমুখ।

সূত্র জানায়, মঙ্গলবারের বৈঠকে সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামের দেয়া কিছু বক্তব্য নিয়ে মৃদু আপত্তি তোলেন।

দিলীপ বড়ুয়া বলেন, এইচ টি ইমামের ভারতে দেয়া বক্তব্য, ‘বাংলাদেশে চীনপন্থী বলে কেউ নেই, বা ভারত কখনোই বিএনপিকে সমর্থন করবে না’ বক্তব্য এই সময়ে ভুল বার্তা দিতে পারে বলে মন্তব্য করেন। তিনি এ ধরনের বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।

বৈঠকে জোটের চার নেতা মন্তব্য করেন, কোটা আন্দোলন সরকার সঠিকভাবে সামলাতে পারেনি। তারা কোটা নিয়ে গঠিত কমিটিতে রাজনৈতিক প্রতিনিধি রাখা এবং কমিটিকে দ্রুত রিপোর্ট দেয়ার আহ্বান জানান।

এরা হলেন শরীফ নুরুল আম্বিয়া, শেখ শহীদুল ইসলাম আনিসুর রহমান মল্লিক এবং গণতন্ত্রী পার্টির মাহমুদুর রহমান বাবু।

এছাড়া মঙ্গলবারের বৈঠকে ১৪ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জোটের প্রার্থীদের সমর্থন ও তাদের পক্ষে প্রচারের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছেন জোটনেতারা।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here