মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর)ঃ যশোরের চৌগাছায় একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক ভেঙ্গে পাশের পুকুরের সাথে মিশে যাওয়ায় স্থানীয়দের দূর্ভোগ চরমে উঠেছে। গত কয়েক বছর ধরে সড়কটির এই বেহালদশা হলেও কারও কোন মাথা ব্যাথা নেই। সরকার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা ব্যয় করলেও জনপ্রতিনিধিরা সড়কটি নির্মান বা মেরামতের কোন উদ্যোগ গ্রহন করেনি বলে অভিযোগ। ফলে এক প্রকার বাধ্য হয়ে স্থানীয়রা সড়কটি নির্মানের অনুরোধ জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি আবেদন করেছেন।
সূত্র জানায়, উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বাদে খড়ি া তালতলা নামক স্থান হতে বাটকেমারী বুন্দোলীতলা সড়কের এক কিলোমটির জায়গা জুড়ে চরম বেহালদশা সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামের আবুল কাশেম কাঠুর ছেলে আইনাল হকের বাড়ির পাশ হতে সড়কের একটি অংশ পাশের পুকুরে ভেঙ্গে মিশে গেছে। ইটের সলিংএর এই সড়কটি মধ্য ভাগে ভয়াবহ এই ভাঙ্গনের কারনে স্থানীয় আন্দারকোটা, পাঁচবাড়িয়া, খড়ি া, নওদাপাড়া, বাটকেমারী, বুন্দোলীতলাসহ অন্তত ৮/১০ টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের দূর্ভোগ চরমে উঠেছে। বিশেষ করে খড়ি া নওদাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শতাধিক কোমলমতী শিক্ষার্থীদের কষ্টের কোন শেষ নেই। এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক, শিক্ষিকা, অভিভাবক এমনকি বিদ্যালয় পরিদর্শনে আশা কর্মকর্তারা নিয়মিত পুকুরে বিলিন হয়ে যাওয়া সড়ক কষ্টে পাড়ি দিয়ে বিদ্যালয়ে পৌছায়। পুকুরে বর্ষা মৌসুমে পানিতে টয়টুম্বুর হয়ে যায়। জীবনের ঝুকি নিয়ে ছেট্ট ছোট্ট শিশুরা নিয়মিত চলাচল করছে। অপর দিকে গ্রামগুলোর কৃষকরা অভাবনীয় কষ্টকে উপেক্ষা করে প্রতিনিয়ত এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছেন। অনেকে বাধ্য হয়ে সড়কের পাশের কয়েকটি বসত বাড়ির মধ্য দিয়ে যাতায়াত করছেন। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলে স্থানীয়দের কষ্ট কয়েকগুন বেড়ে যায়। গ্রামবাসিরা সড়কটি পুনঃনির্মান কিংবা মেরামতের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে ধর্না দিলেও কোন ফল পাইনি। সূত্র জানায়, দেশ স্বাধীনের পর সড়কটি সম্পূর্ণ কাঁচা ছিল। বর্ষা মৌসুমে কাঁদা আর শুস্কমৌসুমে প্রচন্ড ধুলাবালি উপেক্ষা করে মানুষ সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করত। তাদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে ২০১২ সালে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সড়কের এক কিলোমিটার ইটের সলিং করে দেন। সলিংএর ফলে মানুষের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে। এরপর হতে এই সড়কে আর কোন কাজ করা হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সড়কটির আইডি নম্বর না থাকার কারনে উন্নয়ন কাজ থেমে আছে বলে অনেকের অভিমত। গতকাল সরেজমিন গেলে দেখা যায় গ্রামবাসি পুকুরে বিলিন হয়ে যাওয়া সড়কের কিনারা দিয়ে অত্যান্ত শতর্কতার সাথে পার হচ্ছে। এ সময় কথা হয় গ্রামটির গৃহবধু সালমা খাতুনের সাথে। তিনি জানান, বছরের পর বছর ধরে সড়কের এই বেহালদশা। তারপরও কারও কোন মাথা ব্যাথা নেই। ভোট এলে জনপ্রতিনিধিারা সড়কটি নির্মানের আশ্বাস দিলেও ভোট শেষ তো তাদের ওয়দা শেষ। আমরা ছোট শিশুদের নিয়ে সারাক্ষন দুঃশ্চিন্তার মধ্যে সময় পার করি। পুকুর পাড়ের বাসিন্দা উসমান গনীর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম জানান, সড়কটি পুকুরে মিশে যাওয়ায় পথচারীরা আমাদের বসত বাড়ির ভিতর দিয়ে যাতায়াত করছে। এতে করে আমরা বেশ অস্বস্তিতে আছি। তিনি সড়কটি দ্রুত মেরামতের জন্য দাবি করেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবছর গ্রামীণ অবকঠামো উন্নয়নে সরকার অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে অথচ আমরা সেই উন্নয়ন থেকে হচ্ছি বি ত। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দ্রুত পাকা করনের জোর দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসি। এ বিষয়ে সংশিষ্ঠ ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সড়কটি নিয়ে পুকুর মালিকদের কিছু অভিযোগ আছে, তারপরও আমি চেষ্টা করছি দ্রুত সড়কটি মেরামত করার জন্য। আশা করছি আগামী ২/৩ মাসের মধ্যে একটি ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
খবর ৭১/এসঃ