নোবেলজয়ী গবেষণায় বারবার জড়িয়েছে বাঙালি বিজ্ঞানীদের নাম

0
340

খবর৭১:দ্বাদশ পাশের পরে প্রকৌশল বিষয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। কাউন্সেলিংয়েও গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মনে হয়েছিল, প্রকৌশল নয়; তার বিষয় পদার্থবিদ্যা এবং সেটাই পড়বেন তিনি। আপত্তি করেননি বাবা। প্রেসিডেন্সি, আইআইটিতে পদার্থবিদ্যার পাঠ চুকিয়ে বেঙ্গালুরুর ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর থিয়োরিটিক্যাল সায়েন্সেস (আইসিটিএস)-এ গবেষণায় যোগ দেন। আর সেখান থেকেই তার যোগসূত্র নোবেলজয়ী গবেষণায়!

নোবেলজয়ী গবেষণায় বারবার জড়িয়েছে বাঙালি বিজ্ঞানীদের নাম। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন তরুণ গবেষক অভিরূপ ঘোষ।

মহাকর্ষ তরঙ্গের গবেষণায় ২০১৭ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী রেইনার ওয়েইস, কিপ থর্ন এবং ব্যারি ব্যারিস। এই গবেষণায় আন্তর্জাতিক প্রকল্প লেসার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ অবজারভেটরির (লাইগো) অংশীদার হিসেবেই তিন বিজ্ঞানীর এই পুরস্কার। সেই গবেষণা প্রকল্পে জড়িত রয়েছেন অভিরূপও।

বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন তার ‘জেনারেল রিলেটিভিটি’ তত্ত্বে মহাকর্ষীয় তরঙ্গের ধারণা দেন। কিন্তু এই মহাকর্ষ তরঙ্গের সব থেকে উল্লেখযোগ্য রূপ দেখান ওই তিন বিজ্ঞানী। প্রায় ১৩০ কোটি বছর আগে দুই ব্ল্যাকহোলের সংঘর্ষে তৈরি হওয়া মহাকর্ষ তরঙ্গ ২০১৫ সালে লাইগোর ডিটেক্টরে ধরা পড়ে। ১০০ বছর আগে আইনস্টাইনের তত্ত্বের ফলিত পরীক্ষার স্বীকৃতি দেয় সুইডিশ অ্যাকাডেমি।

অভিরূপ বলছেন, ‘লাইগোর অধীনে অনেক ছোট ছোট গবেষকদল মহাকর্ষ তরঙ্গ নিয়ে নানা ধরনের গবেষণা করছে। আমিও তেমনই একটি দলের সদস্য।’

সল্টলেকের বাসিন্দা অভিরূপের পড়াশোনা ভারতীয় বিদ্যাভবন স্কুলে। এই গবেষণায় যুক্ত হলেন কীভাবে -জানতে চাইলে অভিরূপ বলেন, ‘বাবা আইআইটি পাশ করা ইঞ্জিনিয়ার। মায়ের ইচ্ছে ছিল ডাক্তারি পড়ি। কিন্তু জীববিদ্যার থেকে আমার বেশি ভাল লাগত অঙ্ক আর পদার্থবিদ্যা। তবে ডাক্তারি পড়তে হবেই, এমন চাপ ছিল না।’ তিনি জানান, পদার্থবিদ্যা পড়ার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্সিই ছিল তার প্রথম পছন্দ।

‘আমি কোনও দিনই ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব গোছানো নই। তবে কলেজে পড়ার সময়েই ভেবে নিয়েছিলাম, গবেষণার পথেই যাব,’ বললেন অভিরূপ। কলেজ পেরিয়ে আইআইটি-রুরকি। সেখান থেকে পিএইচ ডি করার জন্য যোগ দেন নব প্রতিষ্ঠিত আইসিটিএসে। গবেষণার পাশাপাশি সময় পেলেই নাটক আর ফুটবল। তিনি বলেন, ‘অভিনয় বেশ কিছু দিন করতে পারছি না। তবে এখনও সময় পেলে ফুটবল খেলি।’

বেঙ্গালুরু আইসিটিএসে গবেষণার পাঠ শেষ। এবার মহাকর্ষ তরঙ্গ নিয়েই পোস্ট-ডক্টরেট করতে আইনস্টাইনের দেশে পাড়ি দিচ্ছেন এই বাঙালি তরুণ। যে-প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছেন, সেটিও ‘রিলেটিভিটি’র জনকের নামেই চিহ্নিত— ‘অ্যালবার্ট আইনস্টাইন ইনস্টিটিউট’!

সূত্র: আনন্দবাজার।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here