আসাদুল ইসলাম সবুজ, লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটে ভয়াবহ মাদকের করাল আগ্রাসন থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যে কঠোর অবস্থায় গ্রহন করেছেন এতে অত্যন্ত খুশি সাধারণ মানুষ। মাত্র ১ মাসের ব্যবধানে মাদকের বিরুদ্ধে অনেক সাফল্য কুড়িয়েছে আদিতমারী থানার নয়া অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ রানা। পুলিশী অভিযানের ভয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক মাদক ব্যবসায়ী মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকের পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। জানা গেছে, লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে থানা গঠিত হয়েছে। থানাটির পুর্বে লালমনিরহাট, পশ্চিমে কালীগঞ্জ, দক্ষিনে তিস্তা নদীর বিশাল চর, উত্তরে ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা উপজেলা আদিতমারী। তাই খুব সহজে ভারতীয় নেশাদ্রব্য হাতে মিলে। ফলে এলাকার অভিভাবকরা তাদের স্ক্লু কলেজ পড়ুয়া ছেলে নিয়ে দিন/রাত উৎকন্ঠায় বসবাস করেন। কিন্তু স্বাধীনতার পর এই প্রথম স্বস্তিতে নিঃশ্বাস ফেলে জনগণকে বলতে শোনা যাচ্ছে, অনেক দেরিতে হলেও লালমনিরহাট জেলায় একজন সুযোগ্য পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল এসেছে। মুলতঃ তারেই আর্দশে বুকে লালন করে চলছেন আদিতমারী থানার নয়া অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ রানা। তিনি আদিতমারী থানায় ৩মে/১৮ইং তারিখে যোগদান করেন। তিনি যোগদানের দ্বিতীয় দিন আদিতমারী থানা এলাকায় প্রধান অপরাধমুলক চিহিুত সমস্যা মাদক নিয়ে স্থানী সাংবাদিকের সাথে মতবিনিময় কালে মাদক নিমূর্ল জিরোটলারেন্স ঘোষনা করেন। পরে ওসি’র নেতৃত্বে মাদকে বহুল আলোচিত আদিতমারী সীমান্তবর্তী এলাকা দুর্গাপুর, মান্নানের চৌপথি, ফুটানির বাজার, শটিবাড়ী, ভেলাবাড়ী, কুমরিরহাট ও নামুড়ী, সাপ্টিবাড়ী, মহিষখোচা, তিস্তার চরসহ উপজেলার আনাচে-কানাচের মাদক পয়েন্টেগুলোতে পুলিশ হানা দেন। এমনিক মাদক পয়েন্টে য়াতাযতের রাস্তায় পুলিশের চেকপোষ্ট বসানো হয়। আদিতমারী থানা সুত্র জানান, নয়া অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ রানা ৩মে/১৮ইং তারিখে আদিতমারী থানা যোগদানের পর ৩ জুন পর্যন্ত। মাত্র ১মাসে মদ, গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত ১৭জনকে ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছেন। এতে ১৯টি মাদক মামলার দায়ের হয়েছে। এছাড়াও গাঁজা ২কেজি ৯শ গ্রাম, ফেনসিডিল ৪০৩ বোতল, ইয়াবা ৩৬৫ পিস, ভারতীয় গরু ৩টি ও ২টি মটরসাইকেল উদ্ধার করেন। এ অভিযানে ছাড় পায়নি মাদকসেবনকারীও। ফলে এলাকায় মাদক শুন্যের কোটায় নেমে এসেছে। পুলিশের অভিযানের ভয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক মাদক ব্যবসায়ী আদিতমারী এলাকা ছেড়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকের পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। মাদক শুন্য হওয়ায় ফলে এলাকা চুরি, ছিনতাই, খুন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধমুলক কর্মকান্ড কমে গেছে। বেড়েছে মাদক মামলার সংখ্যা। এ বিষয়ে বিভিন্ন এলাকায় খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, ভেলাবাড়ী ও দুরাকুটি এলাকার বহুল আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী তোতা মিয়া, বেশ কিছু দিন ধরে পলাতক। এ প্রতিবেদকের সামনে নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক সত্যতে এক দোকানদার তোতা মিয়াকে মোবাইল করলে তিনি বলেন, আমি এখন আর বাড়ী এলাকায় (যাব না) যামু না, এই এসপি ও ওসি’র যতদিন বদলী হবে না, ততদিন বাহিরে থাকুম। বাড়িতে ফিরুম না। শুধু তোতা নয়, তোতার মত আদিতমারী এলাকার অর্ধশতাধিক মাদক ব্যবসায়ী এখন বাড়ি ছাড়া।
এবিষয়ে আদিতমারী থানার (উপ-পরির্দশক) এসআই আনিছুজ্জামান জানান, পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক স্যার মাদক বিরোধী অভিযানে যেমন কঠোর, তেমনি নতুন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ রানা স্যারের নির্দেশে আদিতমারী এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। আদিতমারী উপজেলার আনাচে-কানাচেসহ সীমান্ত এলাকা দুর্গাপুর, মান্নানের চৌপথি বহুল পরিচিত মাদক পয়েন্টেগুলো শুন্য হয়ে পড়েছে। তবু ওই সব এলাকায় পুলিশের নজরদারী চলছে।
এ ব্যাপারে আদিতমারী থানার নয়া অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ রানা বলেন, আদিতমারী এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযানের কারণে মাদক অনেটাই শুনের কোটায় নেমে এসেছে। থানায় মাদক মামলা বেড়েছে। কমেছে অন্যন্যা মামলার সংখ্যা। ভয়াবহ মাদকের করাল গ্রাস থেকে আদিতমারীর যুব সমাজকে বাঁচাতে মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে। এতে যেই জড়িত থাক না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।