খবর ৭১ঃরাজধানীতে পচা, দুর্গন্ধযুক্ত মাস-মাংস বিক্রি ও অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে মিষ্টি তৈরির জন্য সুপারশপ ‘‘মীনা বাজার ’ ও ‘রস’ মিষ্টিকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন পুলিশ ও র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার রাজধানীর লালবাগ ও ডেমরায় এ অভিযান চালায় পুলিশ ও র্যাব। অভিযানে মীনা বাজারকে তিন লাখ টাকা ও রসকে ১২ লাখ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ডিএমপির ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, মীনা বাজারে অভিযান চালিয়ে দেশের একমাত্র মাননিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান বিএসটিআইয়ের নিষিদ্ধ ঘোষিত পেরিয়ার মিনারেল ওয়াটারের বোতল পেয়েছেন ডিএমপির ভ্রাম্যমাণ আদালত। ফ্রান্সের পেরিয়ার ব্র্যান্ডের এই মিনারেল ওয়াটারটি বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে ব্যবসায় করতে চাইলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর একে ছাড়পত্র দেয়নি বিএসটিআই।
বুধবার দুপুরে মীনা বাজারের লালবাগের এতিমখানা রোড শাখায় এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান। অভিযানে নিষিদ্ধ পণ্য ছাড়াও পচা, দুর্গন্ধযুক্ত মাছ-মাংস উদ্ধার করা হয়।
বিএসটিআই অধ্যাদেশ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে তাদের ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানে বিএসটিআইয়ের পরিদর্শক মো. শহীদুল ইসলাম ছাড়াও লালবাগ থানা পুলিশ ও মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অভিযানে দেখা যায়, মীনা বাজার বিএসটিআইয়ের মানচিহ্ন ছাড়া বিদেশি নেভিয়া ক্রিম, কোকা কোলা জিরো ক্যাল, পালমোলিভ সাবান ও ফ্রান্সের পেরিয়ার মিনারেল ওয়াটার বিক্রি করছে।
বিএসটিআইয়ের পরিদর্শক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, পেরিয়ার পানির ৭৫০ মিলিলিটারের বোতল ২০০ টাকার ওপরে বিক্রি করা হচ্ছে, অথচ ফ্রান্সের এই পানিটি পরীক্ষা করে নানা অসংগতি পাওয়ায় আমরা একে বাংলাদেশে বিক্রির অনুমতি দেইনি। তারপরও তারা অবাধে এগুলো বিক্রি করছে।
অভিযানে মীনা বাজারের ডিপ ফ্রিজ খুলে দুর্গন্ধযুক্ত মাছ-মাংস পাওয়া যায়। ফ্রিজ থেকে পাওয়া চিংড়ি মাছ থেকেও গন্ধ বের হচ্ছিল। এছাড়াও দীর্ঘদিন পুরনো পালংশাক ও লিচু পাওয়া যায় আউটলেটে।
ডিএমপির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান বলেন, অনুমোদনহীন পণ্য বিক্রি ও অবহেলার কারণে তাদের মীনা বাজারের এই শাখার ম্যানেজার সাঈদ সারওয়ার ও কর্মকর্তা সারওয়ার হোসেনকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
নিষিদ্ধ পণ্য বিক্রি ও জরিমানার বিষয়ে মীনা বাজারের লালবাগ এতিমখানা রোড শাখার ম্যানেজার সাঈদ সারওয়ারের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।
এদিকে বুধবার রাজধানীর ডেমরায় ‘রস’ মিষ্টির কারখানায় এ অভিযান চালানো হয়। নামিদামি ও জনপ্রিয় মিষ্টি বলতে সমসাময়িক সময়ে ‘রস’র মিষ্টির কথা মাথায় আসবে নিঃসন্দেহে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির মিষ্টি তৈরি কারখানা দেখলে রীতিমতো চোখ কপালে ওঠার মতো অবস্থা। কোনো ধরনের নিয়মনীতি না মেনে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই তৈরি করে যাচ্ছে বাহারি রকমের মিষ্টি ও সেমাই।
এ অপরাধে প্রতিষ্ঠানটিকে ১২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। সারওয়ার আলম জানান, প্রতিষ্ঠানটি অনেক নামিদামি হলেও তাদের কারখানার ভেতরে কোনো ধরনের নিয়মের বালাই নেই। নোংরা ও অস্বাস্থকর পরিবেশে মিষ্টি ও সেমাই করতে দেখা যায়। এ অপরাধে প্রতিষ্ঠানটিকে ১২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
খবর ৭১/এসঃ