লবিস্ট নিয়োগ করে নোবেল পুরস্কার প্রয়োজন নেই: প্রধানমন্ত্রী

0
443

খবর ৭১: লবিস্ট রেখে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ভারত সফর নিয়ে ওই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

লিখিত বক্তব্য শেষে প্রশ্নোত্তর পর্বে সমকালের সম্পাদক গোলাম সারওয়ার এক প্রশ্নে বলেন, শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য নাম প্রস্তাব করতে হয়। এ জন্য একটি প্রক্রিয়া হাতে নিতে হয়। নাহলে এই পুরস্কার কেউ পায় না। প্রধানমন্ত্রীর নোবেল লাভে এ ধরনের প্রক্রিয়া শুরু করা দরকার। প্রয়োজনে লবিস্ট নিয়োগ দিতে হয়। তিনি এ প্রক্রিয়া শুরু করার অনুরোধ করেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লবিস্ট নিয়োগ করে পুরস্কারের দরকার নেই। আর লবিস্ট নিয়োগ করার মতো টাকাও আমার নেই। আমার বড় পুরস্কার এদেশের মানুষের সুখ শান্তি। সেটা হলেই চলবে।

নোবেল প্রাইজের জন্য প্রক্রিয়া চলানোর দরকার নেই। টাকা পয়সা থাকলে দেন দরিদ্রদের সহযোগিতা করি।

মাদক ব্যবসার সঙ্গে যারাই জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, মাদকবিরোধী অভিযান চলবে। মাদকের কারণে সন্তান-পরিবার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বাবা-মাকে হত্যা করা হচ্ছে।

মাদকবিরোধী অভিযানে সংঘটিত ‘বন্দুকযুদ্ধ’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাদক সমাজে একটা ব্যাধির মতো। আপনারাই তো লিখেছেন ব্যাধির বিরুদ্ধে। এখন আপনার কোনটা চান অভিযান চলুক, নাকি বন্ধ হয়ে যাক। ১০ হাজারের ওপরে মাদক পাচারকারী বা সেবনকারী গ্রেফতার হয়েছে। পুলিশ বা র‌্যাব যখন অভিযানে যায় যখন তাদের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সম্মুখীন হয়। তবে যদি অন্যায়ভাবে কিছু ঘটে থাকে তবে তারও বিচার হয়। নিরীহ ব্যক্তি শিকার হয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। অভিযান চালাতে থাকলে কোনো ঘটনা ঘটলে যদি সেটাই সমস্যা হয় তবে বলেন আপনারা অভিযান বন্ধ করে দেই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও ‍দৃঢ় হয়েছে। বাংলাদেশ ভবন উভয় দেশের সংস্কৃতির প্রসারে অবদান রাখবে। কুষ্টিয়ায় বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ উদ্যোগে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাহিত্যপ্রেমী ছিলেন। কারাগারেও শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে রবীন্দ্র রচনাবলী থাকত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ভারতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের সহযোগিতার কথা স্মরণ করেছি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন ও রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

তিনি বলেন, ২৬ মে বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সম্মানসূচক ডি.লিট গ্রহণ করি। আমি এটি সমগ্র বাঙালিদের নামে উৎসর্গ করেছি। আমি কবির স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করি। আমি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। তিনি নজরুলের নামে বিশ্ববিদ্যালয় করেছেন। আসানসোলের দুর্গাপুরে নজরুলের নামে বিমানবন্দর করেছেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আমি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করি। সেখানে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় ও অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনা করি।

শেখ হাসিনা বলেন, নিজস্ব স্যাটেলাইন উৎক্ষেপণ করায় বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে। উন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আকাঙ্কার পেছনে ভারত সবসময় প্রতিবেশী দেশ হিসেবে পাশে থাকবে।

উল্লেখ্য, ২৫ মে দুদিনের সরকারি সফরে কলকাতা যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলাদেশে ভবন’ উদ্বোধন করেন। এ সময় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ভবনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে সম্মানসূচক ডি. লিট ডিগ্রি গ্রহণ করেন। সফরে শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন।

পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী এই সফরে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত ‘জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি’ এবং কলকাতায় ঐতিহাসিক ‘নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু’ জাদুঘর পরিদর্শন করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here