ক্রসফায়ার আতঙ্কে টেকনাফ ছাড়ছে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা

0
919

খবর ৭১: মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান শুরুর পর থেকে কক্সবাজারের সীমান্ত জনপদ টেকনাফের বড় গডফাদাররা এলাকা ছাড়ছেন এবং অনেকে গোপনে পাড়ি জমাচ্ছেন মিয়ানমারে। গত কয়েকদিন ধরে তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের অনেককেই দেখা মিলছে না। কিন্তু রেখে যাচ্ছেন তাদের ধন-সম্পদ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সারাদেশে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়ে গেছে।

ইয়াবার নিরাপদ রুট টেকনাফের চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের ঘরে এখন বিরাজ করছে ‘ক্রসফায়ার আতঙ্ক’। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই টেকনাফ সীমান্তের বড় বড় ইয়াবার চালান বন্ধ হয়ে গেছে। সীমান্তের ঘরে ঘরে এখন বড় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

টেকনাফের হ্নীলার নুর মোহাম্মদ প্রথম ইয়াবা ব্যবসায়ী, যিনি ক্রসফায়ারে মারা যান। পরে টেকনাফ সীমান্তে একে একে আরো ৬ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে নিহত হন। এ কারণে টেকনাফ সীমান্তের ইয়াবা ব্যবসায়ীদের স্বজনদেরও এখন ঘুম হারাম হয়ে গেছে। জানুয়ারি মাসে পুলিশকে এবং ৩ মে র‌্যাবকে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের মতোই মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানে নামতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরফলপ্রসূ অভিযানে এখন পর্যন্ত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ২৮ জন নিহত হয়েছে।

‘চল যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’ শীর্ষক কার্যক্রমে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মাদক ব্যবসায়ীরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জিরো ট্রলারেন্স নীতি নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। অন্যদিকে র‌্যাব বলেছেন, মাদকের শিকড়-বাকড় তুলে নিয়ে আসবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, মাদকের বিরুদ্ধে জাতিগত যুদ্ধ করতে হবে। ১৯৭১ সালের পর বিভিন্ন ঐক্যবদ্ধ যুদ্ধে আমরা বিজয়ী হয়েছি। এবারও আশা করি এর একটা ভালো ফলাফল পাব, মানুষ বিজয়ী হবে। মাদকের খুচরা বিক্রেতা থেকে শুরু করে ডিলার সে যেই হোক, তাকে এ পেশা ছাড়তে হবে।

মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়ে গেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সমস্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা এবং র‌্যাবকে আমরা বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছি। যেখানেই মাদক, সেখানেই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং সেই কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। মাদকের জন্য একেকটা পরিবার যে কষ্ট পায়, যেভাবে একেকটা পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে টেকনাফ থানার ওসি রনজিত বড়ুয়া জানিয়েছেন, ইয়াবা ব্যবসায়ীদের দমনে সরকারের নির্দেশে সারাদেশে অভিযান শুরু হয়েছে। অভিযানে শুরুর পর থেকে টেকনাফের ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাদের অবস্থান নিশ্চিত করতে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। অবস্থান নিশ্চিত করতে পারলেই তাদের ধরা হবে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ৬০ জন গডফাদারসহ ১১৫১ জন মাদক কারবারীর তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এরপর থেকে সারাদেশে ইয়াবার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়।
খবর ৭১/ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here