খবর৭১: জাতিগত নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফিরিয়ে নেয়ায় সম্মত হয়েছে মিয়ানমার সরকার। এ বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটি ঐক্যমত্যে পৌঁছেছে বলেও জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে গঠিত যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির দ্বিতীয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান পররাষ্ট্র সচিব এম শহিদুল হক এবং মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থো।
এর আগে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিবের বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি গুরুত্ব পায়। দুই পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে এ বৈঠকে অংশ নেন দুই দেশের ৩০ জন প্রতিনিধি।
পররাষ্ট্র সচিব এম শহিদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সবসময় একটি জটিল প্রক্রিয়া। তবে আমরা দুপক্ষই অনুধাবন করতে পারছি যে এটা হওয়া প্রয়োজন। যত দ্রুত সময়ে এটা সম্পন্ন করা যায় সে লক্ষ্যে আমরা দুপক্ষই কাজ করে যাচ্ছি।’
এসময় মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থো বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার পদ্ধতি ঠিক করতে আমরা বেশি বেশি বৈঠক করছি। এ ব্যাপারে জনসচেতনতা বাড়াতে আমাদের কাজ করতে হবে। আমি মনে করি, দুই দেশকেই এ ব্যাপারে যৌথভাবে কাজ করে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।’
শহিদুল হক বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে যে দুটি অ্যারেঞ্জমেন্ট চুক্তি হয়েছে তা বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আপনারা জানেন যে (মিয়ানমারের কাছে) আমরা একটি তালিকা পাঠিয়েছিলাম। সেই তালিকা যাচাই করতেও যে যে ইস্যুগুলো এসেছে তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’
গত ১৯ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা বৈঠক করেন। তিন ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন ও এর টার্মস অব রেফারেন্সের সম্মতিপত্রে সই হয়। বাংলাদেশের পক্ষে সম্মতিপত্রে সই করেন দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব।
উল্লেখ্য, জাতিগত নিধনের মুখে গত বছরের ২৫ আগস্টের পর থেকে নতুন করে কমপক্ষে ৬ লাখের মতো রোহিঙ্গা সাগর পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার মানবিক দিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্বের প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে এত সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে লম্বা সময় ধরে আশ্রয় দেয়া বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। এ নিয়ে মিয়ানমার সরকার বিভিন্ন টালবাহানা করলেও রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে দেশটির ওপর আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগ করা হয়। যা এখনও অব্যাহত।
খবর৭১/এস;