পটুয়াখালী-৪ অাসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রায় ২ডজন, বিএনপির ৩

0
257
রাকিব হাসান , পটুয়াখালী প্রতিনিধি :
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল গুলোর মনোনয়ন প্রত্যাশীদের জনসংযোগে সরব হয়ে উঠতে শুরু করেছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী উপজেলার গ্রামীন জনপদ।
দলীয় প্রধানের ছবি সম্বলিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের ছবি দিয়ে রঙ-বেরঙের পোষ্টার, ফেষ্টুনে ছেয়ে গেছে
শহর থেকে গ্রামীন জনপদ। দলীয় নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করে পক্ষে নিতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা মতবিনিময়, পথসভা আর প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে যাওয়ায়
সরগরম হয়ে উঠছে গ্রামীন জনপদ।
ক্ষমতাসীন দলের বেশ ক’জন মনোনয়ন
প্রত্যাশীর বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি, টেন্ডারবাজি, মামলা, জমি দখলসহ রয়েছে নানান অভিযোগ।
আর বিএনপি, জাপা (এ), চরমোনাই পীরের ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী থাকলেও তাদের তেমন একটা মাঠে
দেখা যাচ্ছেনা।
কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী উপজেলা নিয়ে গঠিত পটুয়াখালী-৪ নির্বাচনী এলাকা। এ নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়ন কর্মকান্ড চলমান রয়েছে দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রা, বানৌজা শের-ই-বাংলা নৌ-ঘাঁটি, সাবমেরিন ল্যান্ডিং ষ্টেশন, সরকারী-বেসরকারী উদ্দোগে নির্মানাধীন ৫টি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বিনির্মানের কাজসহ রয়েছে কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র, মহিপুর মৎস্য বন্দর।
এছাড়া এ নির্বাচনী এলাকায় চলমান রয়েছে সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিক একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প। রয়েছে মহিপুর থানা, কলাপাড়া থানা, রাঙ্গাবালী থানা, কুয়াকাটা পৌরসভা ও কলাপাড়া পৌরসভা।
৭০’র নির্বাচনের পর থেকে এ আসনটি আওয়ামীলীগের দূর্গ বলে পরিচিত। এ আসনের সংসদ সদস্য কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: মাহবুবুর রহমান। অষ্টম, নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর পর তিনবার নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন তিনি।
নবম সংসদ নির্বাচনের পর পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী হয়ে জমি দখল, টেন্ডারবাজি সহ নানা উপায়ে অবৈধ সম্পদ অর্জনের পর দুদক মামলা দায়ের করে তার বিরুদ্ধে এবং তার স্ত্রী জেলা পরিষদ সদস্য প্রীতি রহমানের বিরুদ্ধে যা আদালতে এখনও নিস্পত্তির অপেক্ষায় আছে।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর দু’ভাগ্নে রহুল আমিন ও ইউসুফ হাওলাদার নিয়ে গড়ে তোলেন গঙ্গামতি এন্টারপ্রাইজ। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দলের প্রভাব
বিস্তার করে জড়িয়ে পড়েন টেন্ডারবাজিতে। ফসলী জমি ও সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কাছে নিজে, দু’ভাগ্নে এবং ভাগ্নি জামাই আবু সালেহ গড়ে তোলেন একাধিক ইটভাটা।
এমনকি দলের ত্যাগী ও জামাত-বিএনপি সরকারের হাতে নির্যাতিত নেতা-কর্মীদেরকে কোনঠাসা করে স্থানীয় সরকার পরিষদের বিগত নির্বাচন গুলোয় স্ত্রী ও নিজের আত্মীয় স্বজনসহ পছন্দের লোকজনকে দিয়ে পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়ায় প্রভাব খাটিয়ে নিজ দলের নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে পড়ে আরও বিতর্কিত হয়ে ওঠেন এমপি মাহাবুব।
রাঙ্গাবালী ইউনিয়নের উপ-নির্বাচনে তার এক ভাগ্নেকে জয়ী করতে ভোট কেন্দ্রে প্রকাশ্যে এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে লাঞ্চিত করে প্রসাশনের
কাছে ক্ষমা চেয়ে রক্ষা পান তিনি। একসময়ের পরিবহন ব্যবসায়ী থেকে সাবেক এ পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুব বনে যান অগাধ সম্পদের মালিক। এমনকি নিজ দলের নেতা-কর্মীদের ভিটাবাড়ী সহ জমি দখল করেন তিনি।
এ আসনে এবারের নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন তার আরও দু’ভাই। এরা হলেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান মিলন এবং জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক
ইউপি চেয়ারম্যান মহিব্বুর রহমান। এদের মধ্যে সেনা কর্মকর্তাকে এলাকার কেউ না চিনলেও শহরে-গ্রামে রয়েছে তার পোষ্টার-ফেষ্টুন এবং মহিব্বুর রহমানের বিরুদ্ধে রয়েছে কুয়াকাটা পর্যটন এলাকায় জমি দখলের অভিযোগ। এমনকি ফৌজদারী অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিতে হচ্ছে তাকে।
এ আসনে দলের সম্ভাব্য অপর প্রার্থীরা হলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সুলতান মাহমুদ, সাধারন সম্পাদক এসএম রাকিবুল আহসান, যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক অধ্যক্ষ নাসির উদ্দীন, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক মনজুরুল আলম, সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব তালুকদার, কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি, আওয়ামীলীগ মেট্রো ওয়াশিংটনের সাবেক সভাপতি আলাউদ্দীন আহমেদ, পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র বিপুল
হাওলাদার, কুয়াকাটা পৌর সভার মেয়র ও মহিপুর থানা আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল বারেক মোল্লা।
এ আসনে আরও মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ইঞ্জিনিয়ার নাসির উদ্দীন, অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড’র কলাপাড়া ইউনিট সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ আখতারুজ্জামান কোক্কাসহ আরও একাধিক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা। এরা হলেন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক
মাহমুদুল আলম টিটো, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
 খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here