আদালতে খালেদা জিয়া, কিছুক্ষণের মধ্যে রায়পড়া শুরু

0
361

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় রায় শুনতে বকশিবাজারের বিশেষ জজ আদালতে পৌঁছেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এরই মধ্যে আদালতে প্রবেশ করেছেন বিচারক বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। ধারণা করা হচ্ছে কয়েক মিনিটের মধ্যেই

দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে তার গাড়িবহরটি আদালত চত্বরে পৌঁছায়।

এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে তিনি গুলশানের নিজ বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে আদালতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। এসময় বাসভবনের সামনে মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে দেখা গেছে।

এদিকে রায় ঘোষণার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এরই মধ্যে রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালতে পৌঁছেছেন বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। সকাল সাড়ে ১০ টার সময় তিনি আদালতে পৌঁছান বলে জানা গেছে। সেখানে বিএনপির সিনিয়র নেতা ও আইনজীবীরা উপস্থিত রয়েছেন।

খালেদা জিয়ার হাজিরা ঘিরে আদালত ও এর আশপাশের এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া আদালতের প্রধান ফটকে স্ক্যানার বসিয়ে তল্লাশি করে ভেতরে ঢোকানো হচ্ছে।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়েককৃত দুর্নীতি মামলার রায়কে সামনে রেখে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে মানুষের চলাচলে সম্পূর্ণ বাধা আরোপ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বিশেষ নিরাপত্তাবেষ্টনীর গ্যাঁড়াকলে পড়েছেন সাংবাদিকরাও।

খবর সংগ্রহের উদ্দেশ্যে যাওয়ার মুখে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন গণমাধ্যমকর্মীরা।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রাজধানীর রমনা থানায় প্রথম মামলাটি করা হয়।

 

প্রায় ১০ বছর আগে, ২০০৮ সালের জুলাই মাসে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্বে থাকার সময় এই মামলাটি করেছিল বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন।

 

খালেদা জিয়াসহ মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩রা জুলাই ঢাকার রমনা থানায় মামলাটি করেছিল দুদক।

 

মামলার অভিযোগে বলা হয়, এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে পাওয়া ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের জন্য দেয়া হলেও, তা এতিম বা ট্রাস্টের কাজে ব্যয় করা হয়নি। বরং সেই টাকা প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেদের হিসাবে জমা রাখার মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

তদন্ত শেষে ২০০৯ সালে অভিযোগ পত্র দেয়া হলেও ২০১৪ সালের মার্চে মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়।

এই মামলায় অপর আসামীরা হলেন, তার ছেলে তারেক রহমান বর্তমানে লন্ডনে এবং সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান পলাতক রয়েছেন। মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ রয়েছেন কারাগারে।

প্রায় ১০ বছর ধরে ঢাকার বকশি বাজারের বিশেষ জজ আদালতে এই মামলার বিচার কার্যক্রম চলেছে। এরমধ্যে ৩২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন, এবং ১৬ দিন ধরে যুক্তিতর্ক চলেছে। আদালতে হাজির না হওয়ায় কয়েকবার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছিল।

খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতে বলেছেন, এই ঘটনায় খালেদা জিয়া জড়িত নন, এবং সেই টাকাও আত্মসাৎ করা হয়নি, কারণ এসব টাকা এখনো ব্যাংকের হিসাবেই জমা রয়েছে।

আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, তার বিরুদ্ধে করা সবগুলো মামলাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে করা, যার কোনোটির আইনি ভিত্তি নেই। এই মামলাটিও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনটিকে বানোয়াট বলেও তিনি বর্ণনা করেন।

তবে রাষ্ট্রপক্ষের দাবি, আদালতে তারা অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছেন।

এদিকে রায়কে সামনে রেখে রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে আজ ঢাকায় মিছিল সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ।

খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here