ডলারের বিনিময় হার ১১৭ টাকার আশেপাশে রেখে সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে ব্যাংক ঋণের সুদহারে স্মার্ট রেট পদ্ধতি বাতিল করে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৮ মে) বিকালে এ সংক্রান্ত দুটি সার্কুলার জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন সিদ্ধান্তে সাময়িকভাবে আমদানি ব্যয় বাড়লেও দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
সবশেষ প্রান্তিকের মুদ্রানীতি ঘোষণার সময়ই ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণে একটি সীমা বেঁধে দেওয়া বা ক্রলিং পেগ পদ্ধতি প্রবর্তনের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। আইএমএফের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর, এবার এই পদ্ধতি চালুর ঘোষণা দিলো তারা। বিনিময়ের একটি মধ্যম সীমা ১১৭ টাকা নির্ধারণ করে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। অর্থাৎ তফসিলি ব্যাংকগুলো এই টাকার আশেপাশে ডলার কিনতে ও বেচতে পারবে।
ডলারের বিনিময়ে সবশেষ বাংলাদেশ ব্যাংকের হার ১১০ টাকা থাকলেও সেটি মানছিল না কেউ। খোলাবাজারে ডলার পেতে গুনতে হতো ১২০ টাকার আশেপাশে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন সিদ্ধান্তে কী ঘটতে পারে? বিশ্লেষকরা বলছেন, আগে থেকেই এই দামেই ডলার কিনে আমদানি ব্যয় মেটাচ্ছিল ব্যবসায়ীরা।
ঢাকা ব্যাংকের এমডি ফারুক মঈনউদ্দিন বলেন, নতুন দামটা একটা অফিসিয়াল হয়ে গেল। আগে তো ব্যাংকগুলো আনঅফিসিয়ালি ডলার কেনাবেচা করতো। অভিযোগ ছিল, তাদের কাছ থেকে রেটটা বেশি নিচ্ছে।
এদিকে, আরেকটি সার্কুলারে ব্যাংক ঋণের সুদহারে স্মার্ট রেট পদ্ধতি বাতিল করে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। স্মার্ট পদ্ধতিতে ব্যাংক ঋণে কয়েক মাস ধরে সুদ হার উঠেছিল সর্বোচ্চ সাড়ে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত। নতুন সিদ্ধান্তের একটা ইতিবাচক প্রভাবের প্রত্যাশা ব্যাংকারদের। মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আশা করি, এটা ভালোই হবে। ’
নতুন দুই সিদ্ধান্তে অর্থনীতে কী প্রভাব পরতে পারে? এ নিয়ে কিছুটা ইতিবাচক বিশ্লেষকরা। ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম ঋণের সুদহারে স্মার্ট রেট পদ্ধতি বাতিল করে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটা আগে থেকে শুরু করলে আরও ভালো হতো। ’
তবে ডলারের দাম বাড়ার বিষয়ে বলেন,‘ যারা ইমপোর্ট করবে তাদের ওপর এটা প্রভাব ফেলবে। ’
বছরজুড়ে ব্যাংকিং খাতে বিভিন্ন সংস্কার আনতে পরামর্শ দিয়ে আসছিল আইএমএফ। বিশেষ করে ঋণের তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে ডলারের বিনিময় হার ও সুদের হার বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে বারবার পরামর্শ দেয় সংস্থাটি। সূত্র বলেছে, জুনেই ঋণের এই কিস্তি ছাড় করবে আইএমএফ। যার পরিমাণ ৬৮ কোটি ডলার বা প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা।