খবর ৭১: প্রতিশোধের জন্য বোধকরি এর চেয়ে ভালো মঞ্চ ছিল না স্পেনের জন্য। এক বছর আগে এই ‘লা রোহা’দের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে বিদায় করেছিল ইংল্যান্ড। এবার বিশ্বকাপের ফাইনালেই যেন তার শোধ নিল স্পেনের মেয়েরা। দুই দলের প্রথমবারের ফাইনালে জয় পেয়েছে ‘লা রোহা’রা। সেরিনা ওয়েগম্যানের শিষ্যদের তারা হারিয়েছে ১-০ গোলে। আর এতে নারী বিশ্বকাপ পেল নতুন চ্যাম্পিয়ন।
এক মাসের লম্বা টুর্নামেন্টের পর আজ অল-ইউরোপিয়ান ফাইনালে স্পেনের মুখোমুখি হয় বর্তমান ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ খেলা উপহার দিলেও ফাইনালে এসে যেন বোতলবন্দি হয়ে ছিল এলা টনি আর লরেন হ্যাম্পরা। বিপরীতে কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর ফুটবল দিয়ে পূর্ণ সুবিধা আদায় করে নিয়েছে স্পেন।
ম্যাচের শুরু থেকে ইংলিশদের চাপে রেখেছিল স্পেন। বল পজিশনিং থেকে শুরু করে গোলে শট, সবখানেই আধিপত্য ছিল স্প্যানিশদের। যদিও ম্যাচের প্রথম বড় সুযোগ পেয়েছিল ইংল্যান্ডই। দলের ম্যানসিটি স্ট্রাইকার লরেন হ্যাম্পের জোরালো শট ফিরে আসে ক্রসবারে লেগে। এমন সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পরই যেন ভেঙে পড়ে ইংলিশদের মনোবল।
বিপরীতে আক্রমণের ধার বাড়ায় স্পেন। ম্যাচের প্রথম বিশ মিনিট পর্যন্ত ৮০ শতাংশ বল রেখেছিল নিজেদের পায়েই। আক্রমণের সেই ধারাতেই ২৯ মিনিটে লিড পায় স্পেন।
বাম প্রান্ত ধরে আক্রমণে উঠে আসেন বার্সেলোনা তারকা মারিওনা কালদেন্তি। ডি-বক্সের ঠিক আগেই পাস দিয়েছেন লেফটব্যাক থেকে ওভারল্যাপ করে আসা অধিনায়ক ওলগাকে। বাম পায়ের কোণাকুনি শটে ইংলিশ গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন রিয়াল মাদ্রিদের এই ফুটবলার (১-০)।
গোল দেওয়ার পর আরও বেশি আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দিতে শুরু করে স্পেন। বল পজিশন ধরে রেখে আরও একাধিকবার আক্রমণে ওঠে তারা। যদিও ফিনিশিং দুর্বলতায় প্রথমার্ধে আর গোল পাওয়া হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধে দুই পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে ইংল্যান্ড। লরেন জেমস আর ক্লোয়ি কেলিকে মাঠে নামান কোচ ওয়েগম্যান। যদিও অতি আক্রমণাত্মক মানসিকতার সুফল তারা পায়নি। খেলার ধারার বিপরীতে দুইবার বড় সুযোগ পেয়েছিল স্পেন। দুইবারই তাদের গোলবঞ্চিত করেছেন ইংলিশ গোলরক্ষক মেরি ইয়ার্পস।
প্রথমে কালদেন্তির একক প্রচেষ্টায় নেওয়া দারুণ এক শট ফিরিয়ে দিয়েছেন। পরে জেনিফার হারমোসোর পেনাল্টিও ঠেকিয়েছেন। ইংল্যান্ডকে ম্যাচে টিকিয়ে রাখার যথেষ্ট চেষ্টা করেছিলেন ইয়ার্পস। তবে, দলের ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় গোল আর পাওয়া হয়নি ইংলিশদের।
যোগ করা ১৩ মিনিটেও সুবিধা করতে পারেনি ইংলিশ মেয়েরা। উলটো হারমোসো, কালদেন্তিদের আক্রমণ ঠেকাতেই হিমশিম খেতে হয়েছে তাদের। শেষ পর্যন্ত অধিনায়ক ওলগার গোলেই প্রথমবারের মতো নারী ফুটবলে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পেল স্পেন।