বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল রাঙাপ্রভাত

0
80

খবর৭১ঃ

বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর রাঙাপ্রভাত।

শনিবার ভোরে মালয়েশিয়া থেকে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনার মুখে পড়ে উড়োজাহাজটি।

এ সময় ফ্লাইটের ভেতরে থাকা যাত্রীদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দুর্ঘটনার কারণে বিমানবন্দরে প্রায় ১ ঘণ্টা বিমান ওঠানামা বন্ধ ছিল।

জানা যায়, পাইলটের ভুলের কারণে রাঙাপ্রভাত নির্ধারিত স্থান পার হয়ে রানওয়ের একদম শেষপ্রান্তে গিয়ে অবতরণ করে।

এ সময় এটি গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে রানওয়ের শেষপ্রান্তের ব্যারিয়ার ভেঙে বাইরে ছিটকে পড়ে। উপায়ন্ত না দেখে পাইলট অস্বাভাবিকভাবে ব্রেক কষলে এয়ারক্রাফটির ব্রেকে বড় ধরনের ক্ষতি হয়।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার প্রায় এক ঘণ্টা পর দুটি পুশকার্ডের মাধ্যমে এয়ারক্রাফটি ধাক্কা দিয়ে রানওয়ে থেকে উঠিয়ে টার্মিনালে নেওয়া হয়। ওই সময়ে অবতরণ করতে না পেরে ছয়টি ফ্লাইট আকাশে উড়তে থাকে।

জানা যায়, দুর্ঘটনার বিষয়টি লগবইতে লেখা হয়নি। পুসকার্ড দিয়ে এয়ারক্রাফটিকে বিমানবন্দরের বে এলাকায় আনার পরের ঘটনাটি শুধু লগবইতে লেখা হয়েছে। এ নিয়ে পুরো ফ্লাইট অপারেশন বিভাগে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট দুই পাইলটের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বিমানের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভোর ৪টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি (বিজি-৩৮৭) কুয়ালালামপুর থেকে এসে শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণের চেষ্টা করে। কিন্তু নিরাপদে অবতরণ করতে না পেরে এটি রানওয়ে থেকে ছিটকে অন্যদিকে চলে যায়। এ সময় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে বিমানবন্দরের নিরাপত্তারক্ষীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

সূত্র আরও জানায়, ক্যাপ্টেন ইসহাক ও ক্যাপ্টেন হাসান ইমাম ফ্লাইটটির পাইলট ছিলেন। অবতরণের সময় তারা কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) করতে পারেননি। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমানটির বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে দুর্ঘটনার বিষয়টি নোটবুকে উল্লেখ করেননি পাইলট।

এ বিষয়ে শাহজালাল বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, মালয়েশিয়া থেকে আসা একটি এয়ারক্রাফট দুর্ঘটনায় পড়ায় ১ ঘণ্টা বিমান ওঠানামা বন্ধ ছিল। তবে দুর্ঘটনায় এয়ারক্রাফটের বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ফ্লাইট অপারেশন বিভাগের একজন প্রকৌশলী জানান, একটি ফ্লাইটের অস্বাভাবিক ল্যান্ডিং হতেই পারে। এজন্য পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেখা হবে। এফডিএম (ফ্লাইট ডাটা মনিটরিং) থেকে পাঁচ হাজার ফুট উচ্চতার পর কীভাবে উড়োজাহাজটি অবতরণ করেছে সেই তথ্য বের করা হবে। তদন্তে পাইলটের গাফিলতি পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিমানের আরেকজন প্রকৌশলী জানান, প্রতিটি ফ্লাইট অবতরণের জন্য বিমানবন্দরের রানওয়ের একটি নির্দিষ্ট স্থান অঙ্কন করা থাকে। সে অনুযায়ী পাইলট ওইস্থানে ফ্লাইটটি ল্যান্ড করান। তাতে এয়ারক্রাফটের গতি কমে আসতে আসতে রানওয়েতে পর্যাপ্ত জায়গা থাকে। কিন্তু ক্যাপ্টেন ইসহাক ও হাসান ইমাম রানওয়ের সেই স্থানটি পার হয়ে আরও অনেক সামনে গিয়ে অবতরণ করান। যে কারণে গতি নিয়ন্ত্রণে আসার আগেই রানওয়ের শেষপ্রান্ত পার হয়ে যায় এয়ারক্রাফটি। এ কারণে রানওয়ের ব্যারিয়ার পার হয়ে এটি বাইরে ছিটকে পড়ে। এ ঘটনায় বিমানের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here