ফুলবাড়ীয়ায় কলেজে ভর্ত্তি হলো ৩ফুট উচ্চতার ছাত্র

0
301

ফুলবাড়ীয়া(ময়মনসিংহ) :
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ার আছিম শাহাবুদ্দিন ডিগ্রী কলেজে ভর্ত্তি হওয়া ১৭ বছর বয়সের ৩ফুট ২ইঞ্চি  উচ্চতার রিয়াজ পড়ালেখা করে সরকারী চাকুরি নানা নানী ও বাবার মূখে হাসি ফুটাতে চায় ।
উপজেলার চৌদার উত্তর পাড়া গ্রামের বাসিন্দা রাজমিস্ত্রী এনামুল হকের ছেলে রিয়াজ । তার বয়স ১৭ বছর হলেও উচ্চ ৩ফুট২ইি । নানান প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে নানা বাড়ী থেকে মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে এবার কলেজে ভর্ত্তি হয়েছে । তার ছোট বোন সোনিয়া এবার ১ শ্রেণীর ছাত্রী । দেড় বছর বয়সে মাকে হারান শারীরি প্রতিবন্ধী রিয়াজ । তখন তার ছোট বোন সোনিয়ার বয়স ৩ মাস। মা মারা যাওয়ার পর দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিল সে। ছোট রিয়াজের খেলাধূলা করার খুব ইচ্ছে ছিল । কিন্তু শারীরিক অসুস্থ্যতা থাকায় খেলাধূলা করতে পারত না । পাড়ার অন্যান্য সহপাঠীরা যখন খেলাধূলা করত তখন সেখানে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত সে। খেলতে না পাড়ায় চোঁখের জলে বুক ভাসিয়ে কেঁদে কেঁদে বাড়ী ফিরে আসত । মায়ের মৃত্যুর পর নানার বাড়ীতেই থাকতেন । নানা নানীর সেবায় ও আদরে সুস্থ হয়ে উঠে রিয়াজ। ৭ বছর বয়সে নানা নজরুল ইসলাম (৬৫) স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্ত্তি করে দেন। ভ্যান চালক নানা নিজের ভ্যানে চড়িয়ে নাতি রিয়াজকে স্কুলে নিয়ে আসা করতেন । প্রাথমিকের গন্ডি পেরোনোর পর রিয়াজ ভর্ত্তি হন বেতবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে । নানা নজরুল ইসলামের বাড়ী থেকে তার ভ্যানগাড়ীতে নিয়ে গিয়ে কাঁধে করে ক্লাস রুমে দিয়ে আসত নানা । নানার কাঁধে চরেই পিএসসি ও জিএসসি পরীক্ষায় ভাল ফলাফল নিয়ে পাস করেন । এবার এসএসসি পরীক্ষায় পাস করার পর গত২৪ ফেব্রয়ারী উপজেলার আছিম শাহাবুদ্দীন ডিগ্রি কলেজে বিএম শাখায় বত্তিৃ হয়েছেন রিয়াজ ।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় , রিয়াজের বয়স যখন দেড় বছর তখন ৩ মাসের বোন সোনিয়াকে রেখে তার মা মারা যান । অবুঝ দুটি শিশুর কথা চিন্তা করে রিয়াজের বাবার এনামুলের কাছে তার ছোট মেয়ে মিলিকে বিয়ে দেন । রিয়াজ নানা নজরুল ইসলাম । রিয়াজ নানার বাড়ীতে থাকলেও বোন সোনিয়াকে নিয়ে যায় ছোট মা ( খালা) মিলি । মায়ের মমতা আদর ভালবাসায় লালন পালন করেন সোনিয়াকে । সোনিয়া এখন ১০ শ্রেণীতে অধ্যায়নরত ।
রিয়াজের নানী এই প্রতিবেদক কে জানান, রিয়াজের মা মরে যাওয়ার পর থেকে আমরা রিয়াজকে পালতাছি (লালন পালন) রিয়াজ যাতে লেখাপড়া শেষে করে একটা চাকুরি বাকরি করতে পারে তর জন্য যে পযন্ত পড়তে পারে পড়ব ও চেষ্টা করমু ।
নানা নজরুল ইসলাম বলেন , আমি আগে ভ্যান চালাইতাম এখন বাদ দিছি । আমার একমাত্র ছেলে গামেন্টসে চাকুরি করে তার আয়েরই ৬জনের সংসার চলে । একজনের কাছ থেকে টাকা করর্জ (ধার) করে রিয়াজকে কলেজে ভর্ত্তি করছি ।
রিয়াজ বলেন , আমি এবছর এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্ত্তি হয়েছি এতে আমি খুব আনন্দিত । আমি পড়ালেখা করে সরকারী চাকুরি করে নানা নানী ও আমার বাবাকে সহযোগিতা করে তাদের মূখে হাসি ফুটাতে চাই ।
আছিম শাহাবুদ্দীন কলেজের অধক্ষ্য মো: মকবুল হোসেন বলেন , আমাদের কলেজে ৩ফুট ২ ইি উচ্চতার একজন প্রতিবন্ধী ছাত্র ভর্ত্তি হয়েছে এতে আনন্দিত । আমরা তাকে সকল প্রকার সহযোগিতা করব এ ছাড়া ও কলেজ থেকে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে ।

হাফিজুল ইসলাম স্বপন
ফুলবাড়ীয়া( ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
০১৭১৭৮৩৮০০২

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here