শরীরে ভিটামিন ‘এ’র অভাব বুঝবেন ৭ লক্ষণে

0
237

খবর৭১ঃ ভিটামিন ‘এ’ আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। আর এটি হচ্ছে একটি চর্বি-দ্রবণীয় ভিটামিন যেটি আমাদের সঠিক দৃষ্টিশক্তি, শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা, প্রজনন এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতিসহ অনেক শারীরিক ক্রিয়াকলাপের জন্য দরকারি ভূমিকা পালন করে।

সাধারণত খাবারের মাধ্যমে দুই ধরনের ভিটামিন ‘এ’ পাওয়া যায়। এর একটি হচ্ছে প্রিফর্মড ভিটামিন ‘এ’। এই ধরনের ভিটামিন ‘এ’ মাংস, মাছ, ডিম ও দুগ্ধজাত দ্রব্যে পাওয়া যায়। আর অন্যটি হচ্ছে প্রোভিটামিন এ। এটি শরীর উদ্ভিদের খাবারে ক্যারোটিনয়েডকে রূপান্তরিত করে। এই ভিটামিনটি লাল, সবুজ, হলুদ ও কমলা রঙের ফল এবং শাকসবজিতে পাওয়া যায়।

ভিটামিন এ সমৃদ্ধ বিভিন্ন খাবার খেলে সাধারণত এর ঘাটতি দেখা দেয় না। কিন্তু তারপরেও যাদের ঘাটতির সর্বোচ্চ ঝুঁকি রয়েছে তারা হচ্ছেন, গর্ভবতী নারী, বুকের দুধ খাওয়ানো মা ও শিশু। আর সিস্টিক ফাইব্রোসিস এবং দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া এই ভিটামিনের অভাবের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

তাই আজকে জেনে নিন যে ৭ লক্ষণে বুঝবেন শরীরে ভিটামিন এ’র অভাব—

১. শুষ্ক ত্বক
ভিটামিন এ ত্বকের কোষ তৈরি ও মেরামতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া এটি কিছু ত্বকের সমস্যার কারণে প্রদাহের সঙ্গে লড়াই করতেও সাহায্য করে। আর পর্যাপ্ত ভিটামিন এ’র ঘাটতি একজিমা এবং অন্যান্য ত্বকের সমস্যার জন্য দায়ী হতে পারে।

শুষ্ক ত্বকের অনেক কারণ থাকতে পারে। তবে দীর্ঘস্থায়ী ভিটামিন এ’র ঘাটতি থাকলে এটি বেশি হয়ে থাকে।

২. চোখে শুষ্ক ভাব
ভিটামিন এ’র অভাবজনিত কারণে চোখের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় এটি আমাদে অনেকেরই জানা। এসব সমস্যার অন্যতম একটি হচ্ছে চোখে শুষ্কভাব দেখা দিতে পারে। আর চরম ক্ষেত্রে, শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন এ না পাওয়ার ফলে সম্পূর্ণ অন্ধত্ব বা কর্নিয়ায় মারা যেতে পারে।
তাই শুষ্ক চোখ বা অশ্রু উত্পাদন করতে অক্ষমতা, ভিটামিন এ’র অভাবের প্রথম লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি।

৩. রাতকানা রোগ
মারাত্মক ভিটামিন এ’র অভাবে রাতকানা রোগ হতে পারে।বেশ কিছু পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় বলা হয়েছে যে, উন্নয়নশীল দেশগুলিতে রাতকানা রোগের উচ্চ প্রবণতা রয়েছে। এই সমস্যার মাত্রার কারণে, স্বাস্থ্য পেশাদাররা রাতের অন্ধত্বের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের ভিটামিন এ’র মাত্রা বাড়াতে পরামর্শ দিয়েছেন।

৪. বন্ধ্যাত্ব ও গর্ভধারণে সমস্যা
ভিটামিন এ নারী ও পুরুষ উভয়ের প্রজননের পাশাপাশি শিশুদের সঠিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়।
আর নারীদের যদি গর্ভবতী হতে সমস্যা হয় তবে ভিটামিন এ’র অভাব তার অন্যতম কারণ হতে পারে। এ ছাড়া ভিটামিন এ’র অভাবে পুরুষ ও নারী উভয়েরই বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।

৫. বৃদ্ধিতে বিলম্ব
যেসব শিশু পর্যাপ্ত ভিটামিন এ পায় না তাদের বৃদ্ধি স্থবির হতে পারে। কারণ ভিটামিন এ মানবদেহের সঠিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়।
বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভিটামিন এ শিশুদের বৃদ্ধিতে উন্নতি করতে পারে।

৬. গলা এবং বুকে সংক্রমণ
ঘন ঘন সংক্রমণ, বিশেষ করে গলা বা বুকে হলে তা ভিটামিন এ’র অভাবের লক্ষণ হতে পারে। আর শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে ভিটামিন এ ভালো সাহায্য করতে পারে।
বয়স্ক ব্যক্তিদের একটি গবেষণায় দেকা গেছে যে, প্রোভিটামিন এ উচ্চ রক্তের মাত্রা ও শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারে।

৭. ক্ষত নিরাময়ে সমস্যা

আঘাত বা অস্ত্রোপচারের পরে ক্ষত নিরাময়ে সমস্যা দেখা দিলে তা হতে পারে ভিটামিন এ’র অভাবের অন্যতম একটি কারণ।
ভিটামিন এ স্বাস্থ্যকর ত্বকের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কোলাজেন তৈরিতে সহায়তা করে। তাই এই ভিটামিনটির অভাবে খক্ষত নিরাময় হতে সমস্যা দেখা দেয়।
ইঁদুরের গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভিটামিন এ ত্বকের চিকিত্সায় এবং ক্ষত প্রতিরোধে সহায়তা করে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here