বাগেরহাটে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে ৪০০ মেট্রিক টন টমেটো

0
208

স্টাফ রিপোটার,বাগেরহাট: বাগেরহাটে ক্ষেতে পচে নষ্ট হচ্ছে প্রায় চারশত মেট্রিক টন টমেটো। মাত্র এক-দুই টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়ায় ক্ষেত থেকে টমেটো তুলছেন না চাষিরা। সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় বাম্পার ফলন হলেও আর্থিক ক্ষতি মুখে পড়েছেন কৃষকেরা।

জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, বাগেরহাটে এ বছর ১ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়। এর মধ্যে সব থেকে বেশি চাষ হয়েছে চিতলমারী উপজেলায়। এই উপজেলায় ৬১৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। আর উৎপাদন হয়েছে প্রায় ২৭ হাজার ৬৪৫ মেট্রিক টন। প্রথম দিকে বেশি দাম পেয়েছেন চাষিরা।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, এবার বাগেরহাটে চাষিরা হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ করেন। ফলে শীত আসার আগে টমেটো বিক্রি করতে পেরেছেন। প্রথম দিকে ৮০ টাকা কেজি দরে টমেটো বিক্রি হয়। তবে ফলন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে দাম। এখন এক-দুই টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

চিতলমারী উপজেলার গরীবপুর গ্রামের চাষি আশীষ গাইন বলেন, ‘টমেটোর ফলন যখন তেমন ওঠেনি, তখন ভালো দাম ছিল। ফলন যখন বেশি হলো, দাম কমে গেল। এখন এক-দুই টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যদি মোটামুটি দামে বিক্রি করতে পারতাম, তবে কিছুটা লাভ হতো।’

চরবানিয়ারি গ্রামের কৃষক সুধাংশু বালা বলেন, ‘আবহাওয়ার কারণে এবার প্রথম দিকে গাছে টমেটো ভালো হয়নি। যখন ফলন হয়েছে, তখন আর দাম পাইনি। প্রচুর টমেটো গাছেই রয়ে গেছে। এখন গাছেই নষ্ট হচ্ছে টমেটো।’

চাষি ঋতুবালা বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবার অধিক ফলন হয়েছে। সেই তুলনায় দাম পাইনি। টমেটো গাছগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। যদি এই টমেটো সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকতো, তবে আমাদের এত ক্ষতি হতো না।’ তিনি সরকারের কাছে টমেটো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করার দাবি জানান।

চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার বলেন, চিতলমারী উপজেলায় এ বছর ৬১৫ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে। হেক্টর প্র্রতি ফলন প্রায় ৪৫ মেট্রিক টন। শুরুতে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এখন এক-দুই টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ফলে যাদের জমি রাস্তা থেকে একটু দুরে, তারা টমেটো তুলছেন না খরচ ওঠে না বলে। ফলে উপজেলায় তিনশত মেট্রিক টন টমেটো ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করছি টমেটো সংরংক্ষণের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করার। যদি এখানে হিমাগার করা যায়, তবে স্থানীয় কৃষকরা লাভবান হবেন।’

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, জেলায় এ বছর ৪৫ হাজার মেট্রিক টন টমেটো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এখন ক্ষেতে চারশত মেট্রিক টন টমেটো পঁচে নষ্ট হচ্ছে বলে জানান তিনি।

অতিরিক্ত পরিচালক আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘চাষিরা যাতে উপযুক্ত দাম পান, সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here