কাদের মির্জার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

0
255

খবর৭১ঃ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষের ঘটনায় অটোচালক ও যুবলীগকর্মী আলাউদ্দিন নিহতের ঘটনায় আদালতে একটি হত্যা মামলা হয়েছে।

রবিবার দুপুরে নিহতের ছোট ভাই মো. এমদাদ হোসেন বাদী হয়ে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন। মামলায় বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা, তার ভাই শাহাদাত হোসেন ও ছেলে মির্জা মাসরুর কাদের তাসিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে। মামলার বিষয়কে কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী হারুনুর রশিদ হাওলাদার জানান, নিহত আলাউদ্দিনের ভাই এমদাদ হোসেন বাদী হয়ে ১৬৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৫০-৬০ জনকে আসামি করে আমলি আদালত-২ এ একটি মামলা করেছেন। বিকাল তিনটায় মামলাটির শুনানি করবেন বিচারক এস এম মোসলেউদ্দিন মিজান।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামি মির্জা কাদেরের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা পিস্তল, শর্টগান, পাইপগান, রামদা, লোহার রড নিয়ে অর্ধশতাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং প্রতিবাদ সভায় হামলা চালায়। এসময় মামলার চার নং আসামি নাজিমউদ্দিন বাদল তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আলাউদ্দিনের পেটে গুলি করে মারাত্মক জখম করে। এরপর পাঁচ নং আসামি নাজিমউদ্দিন মিকনসহ তাদের সমর্থকরা আলাউদ্দিনকে এলোপাতাড়ি গুলি করে। পরে ছয় নং আসামি মাঈন উদ্দিন কাঞ্চন তার হাতে থাকা লোহার রড আলাউদ্দিনের পেটের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়। হামলাকারীরা চলে গেলে আলাউদ্দিনকে উদ্ধার করে প্রথমে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের ছোট ভাই এমদাদ হোসেন বাদী হয়ে ১৬৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩০-৪০ জনকে আসামি করে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ নিয়ে গেলে তা সংশোধন করতে হবে বলে অভিযোগটি রেকর্ডভুক্ত করেনি পুলিশ। পরদিন শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও থানায় ওসির দেখা না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান এমদাদ। এমদাদের অভিযোগ মেয়র আবদুল কাদের মির্জা, তার ভাই শাহাদাত হোসেন ও ছেলে মির্জা মাসরুর কাদের তাসিককে আসামি করায় তার মামলাটি নেয়নি পুলিশ। এছাড়াও তাদের নাম ওই এজাহার থেকে বাদ দেওয়ার জন্য তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দেওয়া হয়েছে।

কাদের মির্জার গ্রেপ্তার দাবি উপজেলা আওয়ামী লীগের

কোম্পানীগঞ্জে চলমান উদ্ভুত পরিস্থিতিতে শনিবার রাতে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর নবী চৌধুরীর স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কাদের মির্জাকে আলাউদ্দিন হত্যার ‘মাস্টারমাইন্ড’ উল্লেখ করে তাকে গ্রেপ্তার করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং গ্রেপ্তারকৃত উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিও করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত দেড় মাস ধরে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার সঙ্গে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের বিরোধ চলছে। এ নিয়ে উপজেলায় অস্থিতিশীল পরিবেশের সৃষ্টি হয়। একাধিকবার দু’পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। গত মঙ্গলবার (৯ মার্চ) সিএনজি চালক ও যুবলীগ কর্মী আলাউদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। সেদিনের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। দুইপক্ষের সংঘর্ষে এর আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here