যেভাবে গ্রেফতার হলো গ্রেনেড হামলার আসামি ইকবাল

0
291

খবর ৭১: ২১শে আগস্ট মঞ্চ লক্ষ্য করে নিজে গ্রেনেড ছুড়েছিল ইকবাল। হামলার পর আত্মগোপনে যান ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত এ জঙ্গি আসামি। আত্মগোপনে থাকাকালীন ইকবাল নিরাপত্তাকর্মী, শ্রমিক, রিকশা মেকানিকের ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন।

তবে র‌্যাব ও জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার উপর্যুপরী অভিযান ও গোয়েন্দা তৎপরতার মধ্যে ২০০৮ সালে দেশ ত্যাগ করেন তিনি। প্রথমে সেলিম এবং পরবর্তীতে জাহাঙ্গীর নাম ধারণ করেন। মালয়েশিয়ায় গিয়ে প্রবাসে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর ২০২০ সালের শেষের দিকে অন্যদের মতো তাকেও দেশে ফেরত পাঠানো হয়। সর্বশেষ গত রাতে গ্রেফতার হন তিনি।

র‌্যাব বলছে, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসআই) এর সহযোগীতায় র‌্যাব এর একটি দল রাজধানীর দিয়াবাড়ী এলাকা থেকে সোমবার রাত ৩টায় ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার এ যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইকবালকে গ্রেফতার করা হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ-আল-মামুন।

র‌্যাব ডিজি বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঘৃণিত ও বিভীষিকাময় একটি দিন। সেদিন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘৃন্যভাবে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। আল্লাহর অশেষ রহমত; তিনি বেঁচে যান। আলোচিত গ্রেনেড হামলায় শাহাদত বরণ করেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী ও আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী আইভী রহমানসহ দলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ অনেকেই এখনও সেই দুঃসহ এবং বিভীষিকাময় স্মৃতি ও ক্ষত বয়ে চলেছেন।

২১ আগস্ট ইতিমধ্যে গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে। বিজ্ঞ আদালতে দীর্ঘ সাত বছরে সর্বমো ২২৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর এই মামলার ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা হয়। যুগান্তকারী এই রায়ে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়।
এই চাঞ্চল্যকর মামলার আসামিদের গ্রেফতার করতে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ন্যায় র‌্যাবও তৎপরতা অব্যাহত রাখে। ইতিপূর্বে র‌্যাব ২০০৫ সালে জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও তার ভাই মুহিবুল্লাহ ওরফে মফিজ ওরফে অভিকে গ্রেফতার করেছিল।

এ ছাড়া এই মামলার সংশ্লিষ্টতায় ২০০৭ সালে ১৬টি আরজিএস গ্রেনেড উদ্ধারসহ এ পর্যন্ত ১৫ জন আসামিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএেআই) এর দেওয়া তথ্যমতে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ আভিযানিক দল গত রাতে রাজধানীর দিয়া বাড়ি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গি ইকবালকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার ইকবাল ঝিনাইদহের আব্দুল মজিদ মোল্লার ছেলে।

এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব প্রধান বলেন, ২০০৮ সালে ম্যানুয়াল পাসপোর্ট ছিল। সেসময় সে নিজের নাম পরিবর্তন করে দেশ ত্যাগ করে। দেশে ফেরার সময় সে অন্য অবৈধ অভিবাসীর ন্যায় ফেরত আসেন। আমরা দৃঢ় কণ্ঠে বলতে চাই, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের অভিযানিক প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে র‌্যাব বদ্ধ পরিকর। বাংলাদেশের মাটিতে জঙ্গিবাদের কোন ঠাঁই নেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here