টিকা দেয়ার পর ৩০ মিনিট পর্যবেক্ষণে রাখার পরামর্শ

0
251
পর্যায়ক্রমে সবাই ভ্যাকসিন পাবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

খবর৭১ঃ বিনা মূল্যে করোনা পরীক্ষা চালুর সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। লক্ষণবিহীন সংক্রমণ ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে এর আওতায় আনার পরামর্শ দেওয়া হয়।

কেন্দ্রে এসে পরীক্ষার জন্য বর্তমানে একশ’ টাকা ফি নেওয়া হয়। এটা বাদ দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন কমিটির সদস্যরা। এ ছাড়া টিকা দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অন্তত ৩০ মিনিট পর্যবেক্ষণে রাখার ব্যাপারে মতামত ব্যক্ত করা হয়েছে।

সোমবার কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামশর্ক কমিটির ২৫তম অনলাইন সভায় এ সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিটির চেয়ারপারসন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জাতীয় পরামশর্ক কমিটির সদস্যরা স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মহিবুর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রটোকল অফিসার আমানুল হক অতে অংশ নেন।

সভায় যুক্তরাজ্য থেকে বিমানে আসা যাত্রীদের ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখার বিষয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন কমিটির সমস্যরা।

পরে ৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার পর কোভিড-১৯ টেস্ট নেগেটিভ হলে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে পাঠানোর কথা বলা হয়। এ রোগের সুপ্তিকাল ১৪ দিন, ফলে ১৪ দিনের মধ্যে যে কোনো সময় তাদের সংক্রমিত হওয়ার এবং তাদের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

অধিকন্তু কোভিড ১৯-এর নতুন স্ট্রেইনের জীবাণু অন্য দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। যুক্তরাজ্যসহ অন্য সব দেশ থেকে আসা যাত্রীদেরকেও ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থার আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়।

নতুন পদোন্নতিপ্রাপ্ত জুনিয়র কনসালট্যান্টদের পদায়ন করা হলে এবং তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে গেলে কোভিড-১৯ রোগীদের যেসব হাসপাতাল চিকিৎসা দিচ্ছে সেখানে শূন্যতা দেখা দিতে পারে এবং চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

প্রশিক্ষিত জনবল প্রস্তুত না করা পর্যন্ত তাদের পদোন্নতি দিয়ে বর্তমান হাসপাতালগুলোতে রাখার ব্যাপারে মতামত দেওয়া হয়। কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ঘোষিত আর্থিক সহায়তা এখনো পাননি। এজন্য চলমান প্রশাসনিক প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার সুপারিশও করা হয়।

সারা দেশে টিকা দেওয়ার যে পরিকল্পনা স্বাস্থ্য অধিদফতর করেছে তার রূপরেখা সভায় তুলে ধরা হয়। কমিটি এ পরিকল্পনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে কিছু বিষয়ে মতামত দেন।

ক) ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও বড় বড় নগরীতে টিকা প্রদান কিছুটা চ্যালেঞ্জিং বিধায় এসব এলাকায় টিকা ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু করতে সিটি করপোরেশনসহ সব সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। খ) রেজিস্ট্রেশনের জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য গণমাধ্যমে প্রচারণা ব্যবস্থা করা দরকার।

রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম সঠিকভাবে চলছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং যারা রেজিস্ট্রেশন করতে পারেননি তাদের জন্য ব্যবস্থা রাখতে হবে।

গ) টিকা দেওয়ার পর অন্তত ৩০ মিনিট পর্যবেক্ষণে রাখা দরকার। গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

ঘ) টিকা কার্যকরী হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য অ্যান্টিবডি পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকা দরকার। যথাযথ স্যাম্পলিংয়ের মাধ্যমে দ্বিতীয় ডোজ পাওয়ার পর অ্যান্টিবডি দেখা দরকার। ফার্মাকোভিজিল্যান্সের জন্য প্রস্তাব অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ ও অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

ঙ) কোভিড-১৯ টিকা পরবর্তী বছরগুলোতেও প্রয়োজন হতে পারে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এ ধরনের নতুন মহামারি সৃষ্টি হতে পারে বলে বৈজ্ঞানিকরা আশঙ্কা করছেন।

অন্যান্য প্রচলিত রোগের জন্য শিশু ও বয়স্কদের টিকাদান কর্মসূচি চালু আছে। এ প্রেক্ষাপটে দেশেই ভ্যাকসিন তৈরি সক্ষমতা গড়ে তোলা প্রয়োজন। বেসরকারি উদ্যোগের অনিশ্চয়তা ও দেশের স্বয়ংসম্পূর্ণকরণ গুরুত্ব বিবেচনায় সরকারি প্রতিষ্ঠানে এ ব্যবস্থা গড়ে তোলার সুপারিশ করা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here