বন্ধুকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা: ঠাকুরগাঁওয়ে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

0
440
বন্ধুকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা: ঠাকুরগাঁওয়ে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর থানার আন্ধারমুহা গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে রেজাউল ইসলামের মোটরসাইকেল হাতিয়ে নেওয়ার পর গলায় রশি পেচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে গোপনের চেষ্টার দায়ে ঠাকুরগাঁওয়ে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।

এসময় তাদের ৩ জনকে পৃথকভাবে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ বছরের সশ্রম কারাদন্ড, অপরজনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং অপর আসামীকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক বিএম তারিকুল কবীর এ রায় প্রদান করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নওগাঁ জেলার মান্দা থানার বারিল্যা উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত আকবর আলীর ছেলে সুইট আলম (২৯), দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর থানার দক্ষিণ পলাশবাড়ি গ্রামের মাহাতাব উদ্দীনের ছেলে মেকদাদ বিন মাহাতাব ওরফে পলাশ (২৯) ও ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী থানার ভানাের সরকারপাড়া গ্রামের বজির উদ্দীনের ছেলে হাসান জামিল (৩২)। আসামিদের মধ্যে হাসান জামিল মহামান্য হাইকোর্ট থেকে ভূয়া জামিন দেখিয়ে পলাতক রয়েছে।

জানা যায়, দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর থানার আন্ধারমুহা গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে রেজাউল ইসলাম স্থানীয় টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজে লেখাপড়ার পাশাাপশি ওয়াল্ডভিশন-২১ নামে একটি মাল্টিলেবেল কোম্পানীতে চাকুরি করত। চাকুরির সুবাদে সুইট, পলাশ ও হাসানের সঙ্গে রেজাউলের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বন্ধুদের সিদ্ধান্তে দিনাজপুরের পাবর্তীপুরে ওই কোম্পানীর আরও কয়েকজন মিলে একটি নতুন অফিস খোলার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে সকলে মিলে পাবর্তীপুরে গেলে রেজাউলের মোটরসাইকেলের ওপর অপর বন্ধুদের চোখ পড়ে।

২০১৫ সালের ৪ মার্চ মাসে সুইট, পলাশ ও হাসানের যোগসাজসে রেজাউলের মোটরসাইকেল হাতিয়ে নিতে হাসান জামিলের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর কৈমারী গ্রামস্থ বাসায় আসার কথা বলে একটি বাঁশঝাড়ে নিয়ে যায়। পরদিন ৫ মার্চ পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে বিকৃত করে ওই বাঁশঝাড়ে ফেলে রাখে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

৬ মার্চ সকালে স্থানীয় লোকজন বালিয়াডাঙ্গী থানায় খবর দিলে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের চেহারা বোঝা না যাওয়ায় পুলিশ বাদি হয়ে অজ্ঞাতানামা মামলা দায়ের করে। অপরদিকে রেজাউলের পরিবারের লোকজন তাদের সন্তানকে ২ দিন ধরে না পেয়ে দিনাজপুর র‌্যাব-১৩ কে বিষয়টি অবগত করেন। র‌্যাব-১৩ এর সদস্যরা মোবাইল ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে রেজাউলের খুনের রহস্য উতঘাটন ও ভিকটিম রেজাউলকে উদ্ধারের কার্যক্রম শুরু করে।

দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, ঢাকা, গাজীপুর, নওগাঁ, রাজশাহী এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় দিনাজপুর ল্যাব ক্যাম্পের অনুসন্ধান টিম নর্থ আড়াই মাস গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রাখে।

এ বছরের ২০ মে রেজাউল হত্যা ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং জড়িতদের শনাক্ত করার পর রেজাউলের তিন বন্ধু সুইট আলম, পলাশ ও হাসান জামিলকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here