আঙ্কারায় জয়ী হতে এরদোগানের ৪ চ্যালেঞ্জ

0
240

খবর৭১ঃ তুরস্কের স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি ভোটার ভোট দেবেন এ নির্বাচনে।

সংসদের পাঁচ দলের বাইরেও আরও সাতটি দল লড়ছে এবারের নির্বাচনে। নির্বাচনে জয়ী হতে ক্ষমতাসীন এবং বিরোধী দলগুলো জোট করে নির্বাচন করছে।

লড়াইটা সিটি মেয়র, পৌর কাউন্সিলর, উপজেলা চেয়ারম্যান, গ্রাম মেম্বার ইত্যাদি ইত্যাদি পদের প্রার্থী নির্বাচনের জন্য হলেও রাজনৈতিক দলগুলো সংসদ নির্বাচনের আদলে প্রচার চালিয়েছে।

তুরস্কের রাজনীতিতে ইস্তানবুল ও আঙ্কারা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর। এ নির্বাচনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিমকে ইস্তানবুলে মেয়র প্রার্থী করায় আশা করা হচ্ছে সহজে একে পার্টি জয়লাভ করবে। একে পার্টি ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এরদোগানের নেতৃত্বে জাতীয় এবং স্থানীয় নির্বাচনে এককভাবে বিজয়ী হয়ে আসছিল।

১৯৯৪ সালে তুরস্কের স্থানীয় নির্বাচনে ইসলামপন্থীদের যে বিজয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা আজও থামেনি। তবে এ নির্বাচনে আঙ্কারা সিটি কর্পোরেশন নিয়ে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে এরদোগান ও একে পার্টি সরকার। গুরুত্বের দিক দিয়ে রাজধানী আঙ্কারার অবস্থান ইস্তানবুল সিটির পরেই। অতীতে ইজমির ব্যতীত ইস্তানবুল, আঙ্কারা, কোনিয়া, বুরসা, কায়সেরি, আনতালিয়া, গাজি আনতেপের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে নাজমুদ্দিন আরবাকানের রেফাহ পার্টির সফলতার ধারাবাহিকতায় একে পার্টিও তা অক্ষুণ্ণ রেখেছিল।

নির্বাচনে ইস্তানবুল, আঙ্কারা, ইজমিরের মতো বড় সিটি কর্পোরেশনগুলোতে ক্ষমতাসীন একে পার্টি হেভিওয়েট প্রার্থী দিয়েছে।

ইতিমধ্যে স্বয়ং প্রেসিডেন্ট এরদোগান আঙ্কারা সিটির সকল পৌরসভায় জনসভা করে ভোট চেয়েছেন যা অতীতে কখনো দেখা যায়নি। কিন্তু রাজধানী আঙ্কারায় এরদোগান এবং একে পার্টি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন কয়েকটি কারণে। নিম্নে উল্লেখযোগ্য চারটি কারণ তুলে ধরা হলো।

প্রথমত

১৯৯৪ সাল থেকে আঙ্কারার নির্বাচিত মেয়র ছিলেন মেলিহ গোকচেক। কিন্তু এরদোগানের সঙ্গে কিছু বিষয়ে মত পার্থক্য থাকায় ২০১৭ সালে তিনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন। একে পার্টির নতুন মেয়র প্রার্থী মেহমেত ওয়াজহাসেকি ইতিপূর্বে সরকারের মন্ত্রী ও কায়সেরি সিটি মেয়র ছিল। অন্য শহরের সাবেক মেয়র রাজধানী আঙ্কারায় প্রত্যাশিত আবেদন তৈরি করতে পারেনি।

অপরদিকে একে পার্টির প্রার্থীর তুলনায় সিএচপির প্রার্থী মানসুর ইয়াবাস তুলনামুলক বেশি পরিচিত এবং ২০১৪ সালের স্থানীয় নির্বাচনে অল্প ভোটের ব্যবধানে তিনি পরাজিত হয়েছিলেন।

দ্বিতীয়ত

পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে তুরস্কের চলমান দ্বন্দ্বের কারণে সম্প্রতি তুরস্কের মুদ্রা লিরার বিপরীতে ডলারের মুল্য ২৫% বৃদ্ধি পাওয়ায় শহরের জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার ওপর বেশি প্রভাব ফেলেছে। এই প্রভাব নিঃসন্দেহে আঙ্কারাসহ সকল সিটির ওপর পড়েছে।

তৃতীয়ত

তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে প্রায় সাড়ে তিন মিলিয়ন সিরিয়ান জনগোষ্ঠী অবস্থান করায় তার্কিশরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। জনসংখ্যার একটা বড় অংশ মনে করে এরদোগানের অতি মাত্রায় উদারতার কারণে সিরিয়ানরা তুরস্কে অবস্থান করছে। অপরদিকে বিরোধী দলগুলোর সিরিয়ানদের বিরুদ্ধে কথা বলায় তারা কিছুটা হলেও বেশি ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

চতুর্থত

একে পার্টি দীর্ঘদিন এককভাবে ক্ষমতায় থাকায় অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কিছুটা অসন্তুষ্টি রয়েছে। বিশেষ করে সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ গুল এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রফেসর ড. আহমেদ দাউদউলু দল থেকে বিতাড়িত হওয়ায় বিনালি ইলদিরিমের অনুসারীরা অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে, ফলে আব্দুল্লাহ গুল ও দাউদউলুর অনুসারীদের মনোকষ্ট রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here