খবর ৭১ঃ শ্রেণিকক্ষের সীমিত সময়ে সব শিক্ষার্থীকে পাঠদানে সক্ষম হন না শিক্ষক। অনেক শিক্ষার্থীই নিজ প্রয়োজনে ছুটছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও বিভিন্ন কোচিং সেন্টোরে। এ বিষয়ে শিক্ষাবিদরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন বিবেচনা করে শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা বন্ধে সরকারকে আরো তৎপর হতে হবে।
আর শিক্ষামন্ত্রী বলছেন, কোচিং বাণিজ্য বন্ধে ও শিক্ষাখাতে দুর্নীতি দূর করতে সময় লাগলেও এ বিষয়ে তৎপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
একটি পরিচিত বেসরকারি স্কুলে গণিতের শিক্ষক। শ্রেণিকক্ষের বাইরেও শিক্ষার্থীরা পড়তে আসেন তার কাছে। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনেই পড়াচ্ছেন বলে জানান সেই শিক্ষক।
ওই শিক্ষক বলেন, ‘৩৫-৪০ মিনিটে ৭০ জন বাচ্চার পুরোপুরি পাঠদান করা সম্ভব নয়। ১২-১৬ হাজার টাকার স্কেলে কত টাকাই বা বেতন আসে।’
সকাল থেকে রাত স্কুল শেষে কিংবা স্কুলে যাওয়ার আগে বিভিন্ন শিক্ষকদের কাছে ছোটেন শিক্ষার্থীরা। অভিভাবকরা বলছেন, সন্তানকে সময় দিয়ে পড়াতে না পারায় কোচিংয়ে নিয়ে আসছেন তারা আর ক্লাসরুমে স্বল্প সময়ে অতিরিক্ত পড়ার চাপ কুলিয়ে উঠতে না পেরে শিক্ষকদের কাছে দ্বারস্থ হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, স্কুলে দ্রুত পড়ানোর কারণে তারা পড়া বুঝতে পারে না। এছাড়া স্কুল বন্ধ থাকায় সিলেবাস শেষ না হওয়ায় কোচিং করতে হয় বলে জানায় শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষাকে ব্যবসার মূলধন হিসেবে নিয়ে একটি চক্র কোচিং বাণিজ্য করছে। এ বিষয়ে সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, কোচিং নয় বাণিজ্য বন্ধ করতে চান তিনি।
শিক্ষমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘এই কোচিংয়ের মধ্যে যতটুকু অনৈতিক, যতটুকুর মধ্যে দুর্নীতি জড়িত সেইটুকুকে আমাদেরকে বাদ দিতে হবে।’
আর শিক্ষাবিদরা বলছেন, শিক্ষাকে বর্তমানে ব্যবসায় পরিণত করেছেন একটি অসাধু চক্র, যা শিক্ষা খাতের জন্য অশনি সংকেত।
শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষকরা বেতনভাতা কম বলে শ্রেণিকক্ষের পাঠকে পাশ কাটিয়ে কোচিং বাণিজ্য করবেন এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এটা বন্ধ করা যাবে না এটা যেমন সত্যি, তেমনি বাণিজ্যর আকারে শিক্ষকরা বাণিজ্য করবে এটা কাম্য নয়।’
গত ৭ ফেব্রুয়ারি সরকারি-বেসরকারি স্কুল -কলেজের শিক্ষকদের জন্য কোচিং বানিজ্যে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট।
শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর। অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল হলে শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়নে তারা আরো মনোযোগী হতে পারবেন। তবে শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য বন্ধে আরো তৎপর হতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা।