সুলতান-মোকাব্বিরের ভাগ্য নির্ধারণ সন্ধ্যায়

0
222

খবর৭১ঃদলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আগামীকাল বৃহস্পতিবার শপথ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও মোকাব্বির হোসেন। তাদের শপথের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছে সংসদ সচিবালয়।

এদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করলে সুলতান মনসুর ও মোকাব্বিরের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বসছে গণফোরাম। আজ সন্ধ্যায় গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় বৈঠক তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করা হবে।বৈঠকে এই দুই নেতাকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে তারা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে পারবেন কি-না সেটি নিয়ে একটি জটিল প্রশ্ন দাঁড় হবে।

সুলতান মোহাম্মদ মনসুর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে গণফোরামের প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। আর মোকাব্বির হোসেন সিলেট-২ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমর্থন নিয়ে জয়ী হয়েছে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও গণফোরাম একাদশ নির্বাচনের ফল বর্জন করে শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্তে অনড়। ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত অপর ৫ সদস্য শপথ না নিলেও একাদশ সংসদে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সুলতান ও মোকাব্বির।

সংসদ সচিবালয় থেকে জানানো হয়েছে, ৭ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টায় স্পিকারের কার্যালয়ে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ এবং মোকাব্বির খানের শপথ অনুষ্ঠান হবে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাদের শপথ পড়াবেন।

দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে শপথের সিদ্ধান্ত নেয়া দলের দুই নেতার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া যায়, তা ঠিক করতে বৈঠক করেছেন গণফোরামের শীর্ষ নেতারা। মঙ্গলবার বিকালে দলটির সভাপতি ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। তবে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি দলটির নেতারা।

সূত্র জানায়, দলের সিনিয়র নেতাদের একটি অংশ সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ এবং মোকাব্বির খানের শপথ নেয়ার পক্ষে। আরেকটি অংশ শপথ নেয়ার বিপক্ষে। যারা শপথ নেয়ার পক্ষে তারা মনে করেন- ‘এটি রাজনৈতিকভাবে একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে’।

শপথ নেয়ার বিপক্ষের অংশটি মনে করেন, ‘শপথ নেয়ার অর্থ হচ্ছে- জনগণের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।’ এ অবস্থায় আজ সন্ধ্যায় আবারও বৈঠকে বসবেন গণফোরামের সিনিয়র নেতারা।

এ বিষয়ে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তারা শপথ নিলে অবশ্যই আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। দলীয় সিদ্ধান্ত ও আইনগত সিদ্ধান্ত যা নেয়া দরকার, সেগুলো আমরা নেব।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামে নাম লিখিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মৌলভীবাজার-২ আসনে ভোট করে জয়ী হন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। আর দীর্ঘদিন ধরে লন্ডন প্রবাসী মোকাব্বির খান গণফোরামের দলীয় প্রতীক ‘উদীয়মান সূর্য’ নিয়ে সিলেট-২ আসন থেকে জয়ী হন। ওই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী না থাকায় বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমর্থন পেয়েছিলেন তিনি। এই নির্বাচনে বাকি এর বাইরে মাত্র ছয়টি আসনে জয় পায় বিএনপি।

নির্বাচনে ‘ভোট ডাকাতির’ অভিযোগ তুলে পুনর্নির্বাচনের দাবি তুলেছে তারা। দলটির নির্বাচিতরা সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন শুরুতে তার দলের দুই নেতার শপথের বিষয়টিকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে দেখলেও বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সুর বদলায়।

দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও মোকাব্বির খান শপথ নিলে তাদের দুজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছে গণফোরাম।

সুলতান মনসুর বলেছেন, ড. কামাল অনুমতি না দিলেও তিনি শপথ নেবেন। গণফোরাম তাকে দল থেকে বাদ দিলেও তার কিছু যায় আসে না। অন্যদিকে মোকাব্বির খান জানান, তিনি ড. কামালের অনুমতি নিয়েই শপথ নেবেন।

খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here