দুর্নীতিকে জিরো ট্রলারেন্সে নিয়ে আসতে হবে , ছাতকে গণশুনানীতে দুদক কমিশনার আমিনুল ইসলাম

0
296

ছাতক প্রতিনিধিঃ
সরকারী অফিসসমুহে সেবা ও সুবিধাদি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে উদ্ভুত সমস্যা শ্রবণ ও নিষ্পত্তি, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা মূলক প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ছাতকে দুদকের গণশুনানী অনুষ্টিত হয়। গতকাল মঙ্গলবার দিনভর উপজেলা অডিটোরিয়ামে এ গণশুনানী অনুষ্টিত হয়েছে। আদালতের আদলে গণশুনানী করেন, দূুর্নীতিদমন কমিশনের কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম। সাথে ছিলেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, পুলিশ সুপার বরকত উল্লাহ খাঁন। এ উপলক্ষে জেলা প্রসাশক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদের সভাপতিত্বে ও সিলেট বিভাগীয় দুদক কার্যালয়ের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল জাহিদের পরিচালনায়  আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, দুদকের পরিচালক (প্রতিরোধ) মনিরুজ্জামান, ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবেদা আফসারী, সহকারী কমিশনার (ভুমি) সোনিয়া সুলতানা। এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। কিন্তু দূর্নীতিগ্রস্থ কিছু সংখ্যক লোকের কারণে দেশের উন্নয়ন হচ্ছে বাধাগ্রস্থ। আমরা দুর্নীতি থেকে বেরিয়ে এসে সরকারী সকল সেবা জনগনের জন্য নিশ্চিত করতে চাই। দেশে বিদ্যুৎ, ভুমি, স্বাস্থখ্যাতে চরম অনিয়ম, টিআর-কাবিখায় চলছে লুটপাট। এসব থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে এসে সব ধরণের দুর্নীতিকে সরকারের ঘোষনা অনুযায়ী জিরো ট্রলারেন্সে নিয়ে আসতে হবে। পরে গণশুনানীতে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের অনিয়মের উপর অভিযোগ তুলেন, শাহ জাহান মিয়া, হাজী ইশাদ আলী ও হিফজুল বারী শিমুল। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ রাজিব চক্রবর্তী এ বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে না পারায় গণশুনানী থেকে তার বদলীর ঘোষণা প্রদান করেন দুদক কমিশনার। সহকারী কমিশনার (ভুমি) অফিসের বিরুদ্ধে অনিয়ম সংক্রান্ত অভিযোগ উত্থাপন করেন, রোকন উদ্দিন, মানিক মিয়া, সিরাজুল ইসলাম, মাস্টার নুরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা শুকুর আলী, ডাঃ আফসার উদ্দিন ও আতাউর রহমান। শুকুর আলীর ভূমি সংক্রান্ত আনীত অভিযোগ তাৎক্ষনিক নিষ্পত্তি করা হয়েছে। অন্যান্য অভিযোগ এক সপ্তাহের মধ্যে শুনানী করে নিষ্পত্তির নির্দেশ প্রদান করা হয়। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা অজয় ঘোষের আনীত অভিযোগ, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের বিরুদ্ধে আব্দুল ওয়াদুদের অভিযোগ, মৎস্য কার্যলয়ের বিরুদ্ধে অজয় ঘোষ ও ফজর উদ্দিনের অভিযোগ, প্রানী সম্পদ কার্যালয়ের বিরুদ্ধে সুজিত পালের অভিযোগ, উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের বিরুদ্ধে সাকির আমিনের আনীত আভিযোগ প্রমানিত হয়নি। মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের বিরুদ্ধে আব্দুল জব্বার, উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে লাল মিয়া, পল্লী বিদ্যুৎ ও পিডিবি’র বিরুদ্ধে আপ্তাব উদ্দিন ও আব্দুল জব্বারের দেয়া অভিযোগ স্বল্প সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ প্রদান করা হয়। ছাতক থানার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা শুকুর আলী ও ছালিক মিয়ার আনীত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের বিরুদ্ধে ডাঃ আফসার উদ্দিন, সোলেমান আলী ও সৈয়দ লাল মিয়ার আনীত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগন বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করবেন বলে গণশুনানীতে জানানো হয়। উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)’র কার্যালয়ে আমি দুর্নীতি মুক্ত ও আমার অফিস    দুর্নীতিমুক্ত লিখা সাইনবোর্ড টানিয়ে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সহকারী কমিশনার (ভুমি) সোনিয়া সুলতানা ও সাব রেজিস্ট্রার আব্দুল করিম ধলা মিয়া। গণশুনানীতে সহকারী সিনিয়র পুলিশ সুপার দুলন মিয়া, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান নাসিমা আক্তার খান ছানা, জেলা পরিষদ সদস্য আজমল হোসেন সজল, ইউপি চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমান, আবুল হাসনাত, সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার আব্দুল জলিল, পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান খাঁন, খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহাব উদ্দিন, ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর আহসান হাবীব, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি নুরুর রব চৌধুরী, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ফয়জুল ইসলামসহ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক এবং সুধীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাকির আমিনের অনিয়ম, দুর্নীতি ও প্রমানসহ রাজাকার পুত্র উল্লেখ করে তাঁর বিরুদ্ধে দুদক কমিশনারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাও ইউনিয়নের দিঘলী চাকলপাড়া গ্রামের মৃত তাছির উল্লার পুত্র রইছ আলী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here