এম শিমুল খান, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে এক স্কুল শিক্ষকের ঘুষিতে আবির্ভাব খান নামের নবম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থীর ডান চোঁখ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। রোববার স্বর্ণকলি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনাটি ঘটে। পরে তাকে বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আহত আবির্ভাবের সহপাঠীরা জানান, ওই দিন স্কুলের সহকারী শিক্ষক ইনসান উদ্দিন মোল্লা বদলী শিক্ষক হিসেবে নবম শ্রেনীর ‘খ’ শাখায় ইসলাম ধর্মের ক্লাস নিতে যান। শিক্ষক উপস্থিত থাকা সত্বেয় শ্রেনী কক্ষের পিছনের সারিতে বসে কিছু শিক্ষার্থী দুষ্টুমি করতে থাকে। এতে তিনি অসম্মানীত বোধ করেন এবং বিরক্ত হন। এক পর্যায় উত্তেজিত হয়ে তিনি ওই শিক্ষার্থীদের দিকে তেড়ে যান এবং এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মারতে থাকেন। এ সময় ওই শিক্ষকের ঘুষিতে শিক্ষার্থী আবির্ভাব খানের ডান চোখ গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হয়।
আবির্ভাবের মা কাওসারা খানম অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষকের ঘুষিতে আমার ছেলের ডান চোঁখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে। আমি বিষয়টি মেনে নিতে পারছি না। ছাত্ররা দুষ্টুমী করলে শিক্ষক তাদের শাসন করবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু শাসন করতে গিয়ে অঙ্গহানি করে দেবেন এ কোন নিয়ম এ নিয়ম কোথায় আছে।
তিনি আরো বলেন, আমি গোপালগঞ্জের সীমান্তবর্তী নড়াইল জেলার বাসিন্দা হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় কারনে আমার ছেলেকে গোপালগঞ্জে স্কুলে ভর্তি করেছি মানুষ হওয়ার জন্য। আমার ছেলেটি অতিশয় বিনয়ী এবং কম কথা বলে। সে কোন দুষ্টুমী করেনি তার সহকর্মীরা আমাকে জানিয়েছে।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ঘটনা ঘটার দু’ঘন্টা পর কেন আমাকে বিষয়টি জানান হলো। কেন তাকে কোন চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়নি। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, আমি গোপালগঞ্জে এসে আমার ছেলেকে শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার করেছি। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে আমি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে দেখা করতে চাইলে আমাকে বাধা দেওয়া হয়। আমি কেন অন্য জেলার বাসিন্দা হয়ে গোপালগঞ্জের স্কুলে আমার ছেলে ভর্তি করিয়েছি এ ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নিতে আমাকে পরমর্শ দেন ওই শিক্ষক ইনসান উদ্দিন।
স্কুলের সহকারী শিক্ষক ইনসান উদ্দিনের সাথে এ ব্যাপারে কথা বললে তিনি বলেন, যারা দুষ্টুমী করছিল তাদেরকে আমি শাসন করতে চেয়ে ছিলাম। এটি নিছক একটি দূর্ঘটনা মাত্র। বিষয়টি নিয়ে পানি ঘোলা হতে পারে এমন আশংকায় আমি প্রধান শিক্ষকের সাথে শিক্ষার্থীর অভিবাবককে দেখা করতে দেইনি। তবে তার চিকিৎসা ও খোজ খবর না নেয়া আমার ঠিক হয়নি।
স্বর্ণকলি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাহে আলমের সাথে কথা বললে তিনি জানান, বিষয়টি তিনি পরে জেনেছেন। আহত শিক্ষার্থীর অভিবাবককের নিকট থেকে এখনও কোন অভিযোগ পাইনি। কোন অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবর৭১/ইঃ